স্টাফ রিপোর্টার:
বাংলাদেশে আরও বিনিয়োগ করার জন্য সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ নতুন বিনিয়োগের জন্য যথেষ্ট সুযোগ তৈরি করেছে।
বুধবার (১৪ জুন) প্যালেস দেস নেশনসের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কক্ষে সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালাইন বারসেটের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
বৈঠক শেষে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন ও প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, ‘সম্প্রতি আমরা সুইজারল্যান্ডের সঙ্গে ভালো ব্যবসা করছি। আমরা প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা করছি। আমরা সুইজারল্যান্ডে পণ্য রফতানি করছি। আমরা মূলত আরএমজি আইটেম রফতানি করছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণ লাভের জন্য সুইজারল্যান্ডকে আরও তিন বছর সময় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।’
প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতা লেখক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, শেখ হাসিনা সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেটকে বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর তাকে উদ্বাস্তু জীবনযাপন করতে হয়েছিল।
তিনি বাংলাদেশে গণতন্ত্র, ভোট এবং খাদ্য লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তার সংগ্রামের কথাও সংক্ষেপে বর্ণনা করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমার বাবার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছি।’
এ কে আব্দুল মোমেন এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘বাংলাদেশের অগ্রাধিকার হচ্ছে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো।’
এ প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গারাও তাদের দেশে ফিরতে চায়। আমরা তাদের রাখতে পারি না। আমরা আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
তিনি অ্যালাইন বারসেটকে রোহিঙ্গাদের তাদের স্বদেশে পাঠানোর জন্য বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় সহায়তা দেওয়ার অনুরোধ জানান।
সুইস কনফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট অ্যালেন বারসেট বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন যে তার দেশ রোহিঙ্গা ইস্যুতে তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
হোটেলের সভাকক্ষে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গারা যাতে স্বদেশে ফিরে যেতে পারে, সেজন্য মিয়ানমারে একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে ইউএনএইচসিআরের প্রতি আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘সম্প্রতি কিছু রোহিঙ্গা নিজ দেশে গিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘তাদের প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত।’
জবাবে ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, ‘তারা চেষ্টা করছেন। মিয়ানমারে তাদের প্রবেশাধিকার আছে, কিন্তু তাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের পরিবেশ উন্নত করার চেষ্টা করবো।’
তিনি রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে বাংলাদেশকে সমর্থন করার জন্য ইউএনএইচসিআরের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।
পরে প্রিন্স রহিম আগা খান প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সূত্র: বাসস