স্টাফ রিপোর্টার:
জিজ্ঞাসাবাদের নামে জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন কার্যালয়ে স্ত্রীসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগে ফাউন্ডেশনের ১০ কর্মকর্তাসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালতে আন্দোলনের সময় আহত ব্যক্তি বুলবুল শিকদারের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে অভিযোগের বিষয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাদীপক্ষের আইনজীবী ইলতুৎমিশ সওদাগর এনি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে- জুলাই ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ভেরিফিকেশন অফিসার ইফতেখার হোসেন, এক্সিকিউটিভ মেম্বার সাবরিনা আফরোজ শ্রাবন্তী, কর্মকর্তা সাগর, মেহেদী হাসান প্রিন্স, আফজালুর রহমান সায়েম, সাইদুর রহমান শাহিদ, আলিফ, জাহিদ, ফাতেমা আফরিন পায়েল, রেজা তানভীর। অপর তিন আসামি রাকিন, শামীম রেজা খান ও সোনিয়া আক্তার লুবনার কোনো পরিচয় দেওয়া হয়নি মামলায়।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী প্রবল’ আন্দোলনে সাবিনা ইয়াসমিনের স্বামী ও ছেলে মোটরসাইকেলে চিটাগাং রোডের মাদানী নগর মাদ্রাসার সামনে গেলে পুলিশ ও সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা আন্দোলনরত জনতার উপর গুলি ও হামলা চালায়। এতে তার স্বামী বুলবুল শিকদার ও ছেলে গুরুতর আহত হন। স্বামীর হাঁটুর নিচে মারাত্মক আঘাত লাগে এবং ছেলের পা ভেঙে যায়। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জুলাই স্মৃতি ফাউন্ডেশন গঠিত হলে সাবিনা ইয়াসমিন গত ২০ মার্চ বেলা ১১টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল সংলগ্ন কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাভিনিউয়ে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিসে যান। সেখানে ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ইফতেখার হোসেন ও অন্যান্য আসামি তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তারা কীভাবে আহত হন জানতে চান। তারা আহত হওয়ার ঘটনা বর্ণনা করেন। আন্দোলনে আহত তাদের ছেলে সেখান থেকে ইতোপূর্বে ক্ষতিপূরণ বাবদ এক লাখ টাকার চেক নিয়ে গেছেন বলে জানান। তার স্বামী বুলবুলের জুলাই যোদ্ধা গেজেট নম্বর এবং মেডিকেল কেস আইডি দেখালে আসামি ইফতেখার তখন ফাউন্ডেশনের দুই কর্মকর্তা সাগর ও মেহেদীকে ডেকে আনে।
ওই সময়কার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এজাহারে অভিযোগ করা হয়, তারা সাবিনা ইয়াসমিনকে বসিয়ে রেখে বুলবুলকে একটি কক্ষে নিয়ে আটকে রাখে। কয়েকঘণ্টা পার হয়ে গেলে স্বামীকে না পেয়ে ফোন দেন সাবিনা। আসামি সাগর কল ধরে বলেন, ‘ভুয়া যোদ্ধাকে জামাই আদর চলছে’। সাগর, সাবিনাকেও ভেতরে যেতে বলেন। তারা তাকেও মারধর করে।
সাবিনার অভিযোগ, আসামিরা তাদের ‘ভুয়া জুলাই যোদ্ধা’ বলে হুমকি দেন, জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন এবং তার ব্যাগ ও মোবাইল ছিনিয়ে নেন। নির্যাতনের ফলে তার স্বামী মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে বাদী আদালতে এই মামলা দায়ের করলেন।