এম.এইচ মুরাদঃ
করোনা ভাইরাস শনাক্তে আবিষ্কৃত কিট নিয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের দেয়া বক্তব্যকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উল্লেখ করেছেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের (ডিজিডিএ) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান।
তিনি বলেন, ‘যদি অযাচিতভাবে অসত্য তথ্য উপস্থাপন করে মানুষকে তথা প্রতিষ্ঠানকে হেয়প্রতিপন্ন করার প্রচেষ্টা চালানো হয়, সেটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি আমি প্রত্যাখ্যান করছি। আমি অনুরোধ করব, এ ধরনের অপপ্রচার যাতে না চালানো হয়।’
সোমবার সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য মিডিয়া সেল আয়োজিত কোভিড-১৯ পরীক্ষার কিটস সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র বিভিন্ন সময়ে সংবাদ সম্মেলন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং ওষুধ প্রশাসনকে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করছে। আমি অতি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, আমাদের দেশে এ মুহূর্তে প্রত্যেক মানুষের সহযোগিতা খুব দরকার। সবার, তাদেরও দরকার। গণস্বাস্থ্যের সহযোগিতা আমাদের দরকার। সবাই মিলে আমাদের সমস্যা সমাধান করতে হবে। তাছাড়া গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতায় প্রস্তুত ছিলাম, এখনও আছি।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অভিযোগ প্রসঙ্গে ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, তিনি একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ। তার কাছ থেকে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক, সৌজন্যমূলক দৃষ্টিভঙ্গি এবং কথাবার্তা আশা করব।
মাহবুবুর রহমান বলেন, ওনারা একটা টেস্ট ডেভেলপ করেছেন। আমাদের দিক থেকে, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের দিক থেকে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত ছিলাম এবং এখনও আছি।
তিনি বলেন, ‘কিটের রি-এজেন্ট আনার জন্য ১৮ মার্চ আবেদন করেছেন, ১৯ মার্চ অনুমোদন দিয়েছি আনার জন্য। কিট উৎপাদনের কারখানা আমাদের দেখা প্রয়োজন। ২০ তারিখে আমরা কারখানা পরিদর্শনের কথা বলেছিলাম, তাদের পক্ষ থেকে বলা হলো, তাদের ইন্ডাস্ট্রিটা এখনও রেডি নয়। আপনারা ২৭ তারিখে আসেন। এর মধ্যে ছুটি শুরু হয়ে গেল। ২৭ তারিখে আমাদের টিম সেখানে যায়। দেখা যায়, তাদের ইকুইপমেন্ট সেখানে ঠিকঠাক মতো স্থাপন করা হয়নি। আমরা ঠিক করতে বলি, তারা বলেছেন অতিসত্বর এগুলো বসাবো। মূল মেশিনটি তখন পর্যন্ত আনাই হয়নি।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এরপর আমরা বলি, তারা ট্রায়াল বেইজ উৎপাদনে যেতে পারে। এ অবস্থার মধ্যেই বিষয়টি ছিল।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এতদিন জানতাম তারা এন্টিবডি কিট তৈরি করছেন। কিন্তু দু-তিন দিন ধরে তারা বলছেন, ওনারা এন্টিজেনও দেখবেন, রক্ত থেকে এন্টিজেন দেখবেন। আমার অন্তত জানা নেই পৃথিবীর কোথাও রক্ত থেকে এন্টিজেন দেখা হচ্ছে। তারপরও আমরা এটাকে ডিসকারেজ করছি না। যদি সত্যি দেখা যায়।’
কোনো কিছু আবিষ্কার করলে তা অনুমোদন করিয়ে নিতে হয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ জন্য একটা নির্ধারিত পদ্ধতি আছে। ওনারা গত ২৫ এপ্রিল একটা কিট হ্যান্ডওভার অনুষ্ঠান করেছিলেন। সেখানে ওনারা আমাদের যাওয়ার জন্য বলেছিলেন। আমরা বলেছিলাম যে, এটা অ্যাপ্রুভড কিট নয়, এটি ট্রায়াল পর্যায়ের কিট। এটি তো হ্যান্ডওভার হয় না। যখন এটি পুরোপুরি অ্যাপ্রুভড হবে তখন বড় করে অনুষ্ঠান করেন। এটি তো হয় না, এ জন্য আমরা সেখানে যাইনি। আমরা নিষেধ করেছিলাম এটি না করার জন্য।’
ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক আরও বলেন, সেই অনুষ্ঠানে ওষুধ প্রশাসন, এমনকি মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সম্পর্কে উনি অনেক ধরনের কটূক্তি করেছেন। বিদ্রুপাত্মক কথাবার্তা বলেছেন, যেটি মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়।’