চৌধুরী আকবর হোসেন:
বর্তমানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২২টি আন্তর্জাতিক গন্তব্যে সপ্তাহে ১২৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এরমধ্যে দেশের পশ্চিমে ৯টি দেশে ১৭টি রুটে এবং পূর্ব দিকে পাঁচটি দেশে পাঁচটি গন্তব্যে ফ্লাইট চলছে বিমানের। পশ্চিমের মতো পূর্বেও ফ্লাইট বাড়াতে চায় বিমান। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, ইন্দোনেশিয়ার বালি, মালয়েশিয়ার মালে, ব্রুনাই ও ফিলিপাইনসহ পূর্ব দিকের দেশগুলোতে নতুন রুট চালুর পরিকল্পনা করছে পতাকাবাহী এয়ারলাইনটি।
পশ্চিম দিকে বিমানের সবচেয়ে বেশি ফ্লাইট ভারত ও সৌদি আরবে। এর মধ্যে ভারতের কলকাতা ১৪টি, দিল্লিতে সাতটি, চেন্নাইয়ে তিনটি ফ্লাইট সপ্তাহে পরিচালিত হচ্ছে। অপরদিকে সৌদি আরবের দাম্মামে পাঁচটি, রিয়াদে ছয়টি, মদিনায় চারটি, জেদ্দায় সাতটি ফ্লাইট পরিচালিত হয়। এছাড়া পশ্চিম দিকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে শারজাহতে পাঁচটি, দুবাইতে সাতটি, আবুধাবি সাতটি, কাতারের দোহায় চারটি, ওমানের মাস্কাটে সাতটি, কুয়েতে তিনটি, যুক্তরাজ্যের লন্ডনে চারটি, ম্যানচেস্টারে তিনটি ও কানাডার টরন্টোতে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান।
এদিকে ৯ বছর পর আবারও ঢাকা থেকে ইতালির রোমে ফ্লাইট শুরু করতে যাচ্ছে বিমান। রোম ফ্লাইট চালুর ফলে পশ্চিমে আরও একটি গন্তব্য বাড়ছে। ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে রোমের উদ্দেশে বিমানের প্রথম ফ্লাইট যাত্রা করবে। ১৯৮১ সালের ২ এপ্রিল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর রোম ফ্লাইট চালু হয় এবং ২০১৫ সালের ৬ এপ্রিল থেকে রোম ফ্লাইট বন্ধ ছিল। এই রুটে বিমান সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।
বর্তমানে পূর্ব দিকে পাঁচটি গন্তব্যে বিমানের ফ্লাইট রয়েছে। এরমধ্যে ৫ মাস আগে ঢাকা থেকে জাপানের নারিতায় ফ্লাইট চালু হয়েছে। নারিতায় সপ্তাহে তিনটি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া চীনের গুয়াঞ্জুতে তিনটি, থাইল্যান্ডের ব্যাংকক-এ সাতটি, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে সাতটি এবং সিঙ্গাপুরে সাতটি ফ্লাইট পরিচালিত হয়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে উড়োজাহাজ আছে ২১টি। এরমধ্যে বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর চারটি, বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার চারটি, বোয়িং ৭৮৭-৯ ড্রিমলাইনার দুটি, বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ছয়টি এবং ড্যাশ-৮ আছে পাঁচটি।
পূর্ব দিকে রুট সম্প্রসারণ প্রসঙ্গে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শফিউল আজিম বলেন, ‘পশ্চিমের দেশগুলোতে আমাদের অবস্থান ভালো। রুট সম্প্রসারণে আমাদের ফোকাসটা এখন পূর্ব দিকে। কোরিয়াতে আমাদের ফ্লাইট চালু করার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া নারিতা, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, মালয়েশিয়া ও চীনে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো যাবে। দূরবর্তী পরিকল্পনায় অস্ট্রেলিয়ার সিডনি, ইন্দোনেশিয়ার বালি, মালয়েশিয়ার মালে, ব্রুনাই ও ফিলিপাইনে সরাসরি ফ্লাইট চালু উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। তবে সিঙ্গাপুর নিয়েই আমাদের বড় পরিকল্পনা আছে।’
সিঙ্গাপুর খুবই গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে শফিউল আজিম বলেন, ‘ব্যবসা, বাণিজ্য বিনিয়োগ, অফিসিয়াল সামিটের জন্য সিঙ্গাপুর একটা হাব। কিন্তু সেখানে আমরা ফ্লাইট পরিচালনার জন্য সবসময় বোয়িং-৭৮৭ উড়োজাহাজ দিতে পারছি না। এই রুটে প্রতিটা ফ্লাইটেই বোয়িং-৭৮৭ উড়োজাহাজ দিতে হবে, এ জন্য কাজ করছি।’
শফিউল আজিম বলেন, ‘ঢাকাকে হাব করে পূর্ব ও পশ্চিমের সংযোগ সৃষ্টি করতে উদ্যোগ নিচ্ছি। ইতোমধ্যে ভারত ও নেপাল থেকে যাত্রীরা ঢাকা হয়ে জাপানে যাচ্ছেন। অন্যান্য রুটেও সংযোগ সৃষ্টির প্রচেষ্টা চলছে।’