কক্সবাজার প্রতিনিধিঃ
উখিয়া ও টেকনাফের ক্যাম্পগুলোতে রোহিঙ্গাদের মাঝে করোনা আতংক দেখা দিয়েছে। আতংকের মধ্যেও রোহিঙ্গাদের এ নিয়ে ন্যূনতম সচেতনতা নেই। এখানে অনেকের মাঝে করোনা উপসর্গ থাকলেও রোহিঙ্গারা তা স্বাভাবিক ব্যাধি হিসেবে অবহেলা করছে। এধরণের উপসর্গ নিয়ে গোপনে মিয়ানমার ফিরে যাওয়া তিনজন রোহিঙ্গা করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর জানা গেছে। ক্যাম্পের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন দুই রোহিঙ্গাও পালিয়ে যায় বলে জানা গেছে।
করোনায় গত এপ্রিল থেকে মিয়ানমার তাদের বাংলাদেশ সীমান্ত বন্ধ করে দেয়। এর মাঝেও রোহিঙ্গাদের গোপনে মিয়ানমার যাতায়াত কমেনি। গত ৩০ মে বাংলাদেশের ক্যাম্প থেকে ৫ সদস্যের একটি রোহিঙ্গা পরিবার,২ জুন ২ জন ও ৫ জুন ২ জন, ২ জুন ৮ জন রোহিঙ্গা মিয়ানমার ফিরে যায়। মিয়ানমারের গণমাধ্যমগুলো ফিরে যাওয়া করোনা শনাক্ত রোহিঙ্গাদের মংডু জেলা শহরে আইসোলেশনে চিকিৎসা প্রদানের খবর দিয়েছে। কিছু রোহিঙ্গা ভয়ে ক্যাম্প ছেড়ে স্থানীয় লোকালয়েও আশ্রয় নিচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
ফিরে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মংডুর লা ফু খং এ রোহিঙ্গাদের জন্য নির্মিত ট্রানজিট সেন্টারে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে বলে মংডু জেলা প্রশাসকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে। গত কয়েকদিনে বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাওয়া ৮০ জনকে মংডুতে ও অপর ৮ জন বুচিডং শহরতলীর একটি মসজিদে ২১ দিনের কোয়ারেন্টাইনে রয়েছে বলে রাখাইন –১ আসনের এমপি তুন হ্লা সেন জানান।
ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতারা কিছু রোহিঙ্গা গোপনে মিয়ানমার ফিরে যাচ্ছে বলে স্বীকার করেন।
বুধবার ১০ জুন মংডুতে আরও ২ রোহিঙ্গা করোনা আক্রান্ত হয়েছে। তারা স্বামী–স্ত্রী। তারা মংডু টাউনশীপের বাসিন্দা। কয়েকদিন আগে তাদের নিকটাত্মীয়দের কাছে বাংলাদেশের আশ্রয় ক্যাম্পে বেড়াতে গিয়েছিল বলে রাখাইন –১ আসনের এমপি তুন হ্লা সেন মিয়ানমার টাইমসকে নিশ্চিত করেছেন। নতুন শনাক্তকৃত ২৪৭ ও ২৪৮ নং করোনা আক্রান্ত রোগীদের মংডু জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদানের কথা জানা গেছে। ৩০ মে বাংলাদেশ থেকে ফিরে যাওয়া ৫ সদস্যের এক পরিবারের ৩৮ বছর বয়সী এক রোহিঙ্গা পরীক্ষায় করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায়।
তবে কুতুপালং মেগা ক্যাম্পের ইনচার্জ ও উখিয়ার ২০ টি ক্যাম্পের করোনা সংক্রান্ত সরকারের ফোকাল পারসন উপ সচিব মো. খলিলুর রহমান খান রোহিঙ্গাদের মিয়ানমার ফিরে যাওয়ার তথ্য জানা নেই বলে জানান। এ পর্যন্ত প্রায় ৬ শ’ রোহিঙ্গা বাংলাদেশের আশ্রয় ক্যাম্প থেকে নিজ উদ্যোগে রাখাইন ফিরে গেছে বলে মিয়ানমার দাবি করে আসছে। তবে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে একজন রোহিঙ্গাও বৈধভাবে মিয়ানমার ফিরে যায়নি দাবি করা হয়। দাতব্য সংস্থাগুলো বলছে, ঘনবসতিপূর্ণ ক্যাম্পে মহামারীর প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণ বড় চ্যালেঞ্জ।