মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ!! আলো ছড়াচ্ছে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক


প্রকাশের সময় :৫ ডিসেম্বর, ২০১৯ ৪:৪১ : অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

প্রবাসী আবছার চৌধুরী মোহাম্মদ গত ১৫ নভেম্বর দেশে আসেন। এর কিছুদিনের মাথায় গত শুক্রবার (২১ নভেম্বর) তার স্ত্রীকে অজ্ঞাত এক নাম্বার থেকে হুমকি প্রদান করা হয়। বিভিন্ন আজে বাজে কথা ছাড়াও তার কাছ থেকে টাকা দাবি করে চক্রটি। এর প্রেক্ষিতে ভুক্তোভোগী পুলিশের প্রবাসী সহায়তা ডেস্কে বিষয়টি জানায়। বর্তমানে অভিযোগটি তদন্ত করছে প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম।

শুধু প্রবাসী আবছার চৌধুরী নয়, এমনি বেশ কিছু প্রবাসী এই ডেস্কটিতে অভিযোগ জমা দিচ্ছেন। তেমনি একজন রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দুবাই প্রবাসী দিদার আলম। তিনি এবং তার ভাই দুবাইয়ে অবস্থানকালে সাতকানিয়া আমিলাইশের প্রবাসী শাহ আলমের সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলেন। শাহ আলম দেশে আসার সময় দিদার আলম তার বিয়ে বাবদ সাড়ে ৪ লাখ টাকার স্বর্ণ, মোবাইল এবং একটি ল্যাপটপ শাহ আলমকে বুঝিয়ে দেন। যাতে ঠিকাঠাক মত বাড়িতে পৌঁছিয়ে দেন। কিন্তু শাহ আলম দেশে আসার পর তার মুঠোফোন বন্ধ করে দিদার আলমের পণ্যগুলো আত্মসাৎ করে ফেলেন। এদিকে শাহ আলম দিশেহারা হয়ে সাতকানিয়া থানায় অভিযোগ করেও কোন ধরনের সুরাহা পাননি। পরে গত একসপ্তাহ পূর্বে প্রবাসী সহায়তা ডেস্কে জানানোর পর দুই দিনের মধ্যে তার পণ্যগুলো ফিরে পান। তিনি পুলিশ সুপার এবং দায়িত্বরত কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের রেমিটেন্স যোদ্ধাদের দুর্ভোগ-দুর্দশায় আলো ছড়িয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এ সেবা ডেস্ক। অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে ডেস্কটি। এছাড়া সাথে সাথে ‘অ্যাকশন’ নীতির কারণে ইতিমধ্যে প্রবাসীদের কাছে বেশ আস্থার জায়গা হয়ে উঠেছে এটি। চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি চালু হওয়া এ ডেস্কে এখন পর্যন্ত ২৩১টি লিখিত অভিযোগ দাখিল হয়েছে। যার মধ্যে নিষ্পত্তি করা হয়েছে ১৪৮টি অভিযোগ।

এছাড়া মুঠোফোনে আসা ২ হাজার ৭৮২টি ফোন কলে তাৎক্ষণিক পরামর্শ প্রদান করা হয়েছে সবকটির । সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রবাসীদের সেবায় চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের এমন উদ্যোগ বেশ সময়োপযোগী, ব্যতিক্রমী ও অনুসরণীয়। যার মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত চট্টগ্রামের নাগরিকরা বিভিন্ন অভাব-অভিযোগের সমাধানের পাশাপাশি আইনী পরামর্শ গ্রহণ করছেন।

সাতকানিয়া উপজেলার তিন প্রবাসী আবুল কাশেম, রফিকুল ইসলাম ও হাবিবুল্লাহও এই ডেস্কের সহায়তা গ্রহণ করে দ্রুত সমাধান পেয়েছেন। তারা বলেন, আমরা অনলাইনে কয়েববার প্রতারণার শিকার হয়েছি। এতে করে আমাদের বেশ কিছু টাকাও খোয়া গেছে। পরে পুলিশের হেল্প ডেস্কের খবর পেয়ে তাদের কাছে বিষয়টি অভিযোগ করি। তারা সমস্যাটি সমাধানের পাশাপাশি আমাদেরকে আরও সচেতন থাকতে বেশ কিছু দিক-নির্দেশনাও প্রদান করেন।

পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়ে তারা আরও বলেন, পুলিশের এমন উদ্যোগ সত্যিই খুব ভালো লেগেছে। এখানকার অভিযোগের পদ্ধতিটাও অনেক সহজ। আশা করি ভবিষ্যতে এটি আরও ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্য বেশ উপকার বয়ে আনবে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এ সেবা শাখা চালুর পর প্রবাসে অবস্থান করা চট্টগ্রাম জেলার স্থায়ী বাসিন্দারা দেশে এসে স্ব-শরীরে লিখিত ছাড়াও প্রবাসে অবস্থানকালে জেলা পুলিশের ই-মেইল, ফেসবুক মেসেঞ্জার, ডাকযোগ ও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ দায়ের করছেন। পরে এসব অভিযোগ ‘রেমিট্যান্স যোদ্ধা অগ্রাধিকার’ সীল অঙ্কিত করে দ্রুততার সাথে সরেজমিনে অনুসন্ধান পাঠানো হয়। অনুসন্ধান শেষে পুলিশের মিমাংসা যোগ্য অভিযোগগুলো (পারিবারিক, আর্থিক প্রতারণা ও ফৌজদারি অপরাধ) মীমাংসা করে প্রার্থীকে গৃহীত ব্যবস্থার হালনাগাদ তথ্য তাদের ই-মেইল বা মোবাইল ফোনে অবহিত করছে। এছাড়া জমি ও সম্পত্তির বিরোধের অভিযোগগুলো আদালতের মাধ্যমে নিষ্পত্তির পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

‘প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক’র দায়িত্বরত ইনচার্জ এসআই মো. শফিকুল ইসলাম জানান, বাংলাদেশের অন্যান্য জেলার প্রবাসীরাও চট্টগ্রাম জেলার প্রবাসী সহায়তা ডেস্কে তাদের বিভিন্ন অভাব-অভিযোগ দায়ের করছেন। ওই অভিযোগগুলো যাচাই বাছাই করে সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলার পুলিশ সুপার বরাবর প্রেরণ করে সমাধান করা হয়। পরে যথারীতি অভিযোগকারীকে ই-মেইল ও ফোনের মাধ্যমে অবহিত করা হচ্ছে।

প্রবাসী সহায়তা ডেস্ক সূত্রে জানা যায়, এখন পর্যন্ত ২৩১টি লিখিত অভিযোগের মধ্যে অর্থ আত্মসাতের ৫৪টি, সম্পত্তি বিরোধের ৫৭টি, পারিবারিক নিরাপত্তার ৫০টি, পারিবারিক সমস্যার ২৩টি, চাঁদা দাবির ১৬টি, মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর ৩টি, প্রতারণার ৫টি, গাছ কেটে ফেলার ৩টি, মোবাইল ফোন ও ফেসবুকে হয়রানি ৩টি, চুরির ২টি, ঘরবাড়ি ভাংচুরসহ জমি দখলের ১টি, দোকান ভাড়া আদায়ের ১টি ও অপহরণের ১টিসহ অন্যান্য আরও ১২টি অভিযোগ এসেছে।

এর মধ্যে সম্পত্তি বিরোধের ৩৫টি, অর্থ আত্মসাতের ২৯টি, পারিবারিক নিরাপত্তার ২৮টি, হুমকি প্রদানের ২৫টি, চাঁদা দাবির ৮টি, মিথ্যা মামলার ৬টি, মারামারির ২টি, দোকান ভাড়া আদায়ের ১টি, গাছ কেটে নেওয়া ৩টি, হামলার শিকারের ১টি ও অন্যান্য ১০টিসহ মোট ১৪৮টি অভিযোগ নিষ্পত্তি করা হয়েছে।

হেল্প ডেস্কটির বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা জানান, এরই মধ্যে অনেক মানুষ লিখিতভাবে ও মুঠোফোনে অনেকগুলো অভিযোগ করেছে। যার মধ্যে অনেকগুলো নিষ্পত্তিও করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নিয়মিত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। চট্টগ্রামের মানুষের জন্য ভাল একটা কাজ করছি, এতেই তৃপ্তি পাচ্ছি। এর আগে সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলা পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে এমনই কয়েকটি উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলাম। যার প্রতিফলন হিসেবে চট্টগ্রামে প্রবাসী সহায়তা ডেস্কে করেছি। আশা করছি দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের এ উদ্যোগ আরও ছড়িয়ে দিতে পারবো।

ট্যাগ :