এম.এইচ মুরাদঃ
কলেজছাত্রী মোসারত জাহান মুনিয়ার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কোনো কথা হয়নি বলে দাবি করেছেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে শারুন চৌধুরী। শারুন বলছেন, তার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে আনভীরের সম্পর্ক গড়ে ওঠার খবর মোসারাত জাহান মুনিয়া গত বছর তাকে জানিয়েছিলেন তবে তা মেসেঞ্জারে, মুনিয়ার সাথে তার কখনো হোয়াটসঅ্যাপে যোগাযোগ বা কথা হয়নি।
গত সোমবার ঢাকায় মুনিয়ার আত্মহত্যা এবং তার বোনের করা মামলায় আনভীরকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার আসামি করার পর মুনিয়া-আনভীরের একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পাশাপাশি মুনিয়া-শারুনের হোয়াটসঅ্যাপে কথিত কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশটও আসে। যা উদ্দেশ্য প্রনোদিত ও কুচক্রীদের ষড়যন্ত্র হিসেবে মনে করছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শারুন চৌধুরী বুধবার একাত্তর বাংলা নিউজকে বলেন, “হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে জড়িয়ে যে কথোপকথন ছড়ানো হচ্ছে তা ভুয়া। আমি কখনও ঐ মেয়েটির সাথে হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাট করেনি বা কথা বলিনি। সত্যতা যাচাইয়ের জন্য এটি ফরেনসিক টেস্ট করালে পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
তবে মুনিয়া নিজ থেকে গত বছর ফেইসবুক মেসেঞ্জারে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে তার সাবেক স্ত্রীর বিষয়ে কথা বলেছিলেন বলে জানান শারুন।
তিনি বলেন, “গত বছর আমার ফেইসবুক মেসেঞ্জারে এক মেয়ে আমার সাবেক স্ত্রী সাফিয়াকে নিয়ে ফোনে কথা বলতে চায়। আমি তাকে মেসেঞ্জারে মেসেজ দিতে বলি। পরে সে মেসেঞ্জারে বলেছিল, আমার স্ত্রীর সাথে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীর পরকীয়া করছে। তখন তাকে আমি জানিয়ে দিই যে বিষয়টি আমি জানি, এ ব্যাপারে আমার করার কিছু নেই। কেননা সে আমার সাবেক স্ত্রী।”
উল্লেখ্য, শারুনের সঙ্গে ২০১৯ সালে তার স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটে। শারুন বলেন, “আমাকে না জানিয়ে আনভীরের সাথে দেশের বাইরে ভ্রমণ করাসহ বিভিন্ন কারণে তাকে তালাক দেওয়া হয়।”
আওয়ামী লীগ সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে, চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক শারুন অভিযোগ করেন, ‘একটি গ্রুপের স্বার্থনেষী কিছু মিডিয়া তার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চালিয়ে, মিথ্যা তথ্য ও মনগড়া মানহানিকর প্রতিবেদন প্রকাশ করে তার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে ব্যাংক কর্মকর্তা আবদুল মোরশেদ চৌধুরীর আত্মহত্যার ঘটনায় তাকে জড়িয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের মালিকানাধীন সংবাদ মাধ্যমগুলোতে ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের দিকেও ইঙ্গিত করেন দারুন চৌধুরী।
এদিকে মুনিয়ার আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলায় মুনিয়ার বড় বোনের অভিযোগের ভিত্তিতে আসামি করা হয়েছে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনভীরকে। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর কলেজছাত্রী মুনিয়ার সঙ্গে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন, গুলশানে ফ্ল্যাট ভাড়া করে তাকে রেখেছিলেন কিন্তু বিয়ে না করে উল্টো হুমকি দেওয়ায় মুনিয়া আত্মহত্যা করেন। মামলায় আরও অভিযোগ করা হয়, মুনিয়া আসামি আনভীরের শত্রুর সঙ্গে হাত মিলিয়েছে বলে তাকে হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের প্রমাণ তারা পেয়েছেন। সিসিটিভি ফুটেজে তা স্পষ্ট হয়েছে বলে একটি নির্ভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে। মামলার পর মঙ্গলবারই পুলিশ আনভীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করে। তাতে ঢাকার আদালত সাড়াও দেয়।
এই ঘটনায় আনভীরের মোবাইল নাম্বারে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায় তাই তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বুধবার বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সচিব মাকসুদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,’আমি ফ্যাক্টরিতে আছি। এ ব্যাপারে কিছু বলতে পারব না।’