স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মামলায় দুর্ঘটনায় অবহেলার অভিযোগ এনে আসামি করা হয়েছে ৮ জনকে। মঙ্গলবার রাতে সীতাকুণ্ড থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আশরাফ সিদ্দিকী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডিপোতে আগুন ও বিস্ফোরণের ঘটনায় কর্তৃপক্ষের অবহেলাজনিত কারণ উল্লেখ করে পুলিশের পক্ষ থেকে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। মামলার তদন্তকাজ শুরু হয়েছে।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম জানিয়েছেন, ডিপোতে অব্যবস্থাপনা ও গাফিলতির অভিযোগ আনা হয়েছে মামলায়। সেখানে আট জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে।ডিপো কর্মকর্তাদের আসামি করার কথা জানালেও ‘তদন্তের স্বার্থে’ তাদের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসামির তালিকায় ডিপোর কর্মকর্তারা থাকলেও প্রাথমিকভাবে মালিক পক্ষের কাউকে রাখা হয়নি।
“এ ঘটনায় তদন্ত চলছে, তদন্তে যদি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়, মালিকদেরও আসামি করা হবে।” যোগ করেন তিনি।
গত শনিবার (৪ জুন) বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ড থেকে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। রাত পৌনে ১১টায় এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। পরে টানা ৭২ ঘণ্টা পর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসে। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ৯ কর্মীসহ ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের দুই কোম্পানির যৌথ বিনিয়োগে বেসরকারি এই ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোটি গড়ে তোলা হয় ২০১১ সালে। এর মালিকানায় আছেন বাংলাদেশের স্মার্ট গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান এবং তার ছোট ভাই চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের নেতা মুজিবুর রহমান।
স্মার্ট গ্রুপের আরেক কোম্পানি আল রাজী কেমিকেল কমপ্লেক্স লিমিটেডে উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির জন্য রাখা ছিল কনটেইনার ডিপোতে। ওই রাসায়নিকই আগুনকে ভয়ঙ্কর রূপ দিয়েছে বলে ফায়ার সার্ভিসের ধারণা।