আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানের রুপির পতন যেন থামছেই না। অব্যাহত ভাবে ডলারের বিপরীতে প্রায় প্রতিদিনই মান হারাচ্ছে দেশটির মুদ্রা। আর এতেই নামতে নামতে কার্যত তলানিতে ঠেকেছে পাকিস্তানি রুপির দর। অন্যদিকে রুপির বিপরীতে মার্কিন ডলার তার ঊর্ধ্বমুখী অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিতে বর্তমানে আন্তঃব্যাংক বাজারে এক ডলার কিনতে গুনতে হচ্ছে ২৩৬ রুপিরও বেশি। ইতিহাসে এর আগে কখনও পাকিস্তানের এই মুদ্রার মান এতো নিচে নামেনি। বুধবার (২৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য নিউজ।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গভীর রাজনৈতিক সংকটের মধ্যে পাকিস্তানি রুপির আরও অবনমন হয়েছে এবং বুধবার আন্তঃব্যাংক বাজারে এক ডলার কিনতে গুনতে হচ্ছে ২৩৬.৫০ রুপি। আগের দিনের তুলনায় বুধবার পাকিস্তানি এই মুদ্রা মূল্য হারিয়েছে ৩.৫৭ রুপি।
দ্য নিউজ বলছে, মঙ্গলবার রাতে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের রায়ে জনসংখ্যায় দেশটির সর্ববৃহৎ প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে অপসারিত হয়েছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফের ছেলে হামজা শেহবাজ। এটি পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য একটি বড় ধাক্কা। মূলত হামজা শেহবাজকে অপসারণের পর প্রথম প্রথম ট্রেডিং সেশনে ৩.৫৭ রুপি মান হারায় পাকিস্তানি মুদ্রা।
এক দিন আগে অর্থাৎ মঙ্গলবার লেনদেন শেষ হওয়ার সময় এক ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার দর ছিল ২৩২.৯৩ রুপি। আর বুধবার সকালে আন্তঃব্যাংক বাজারে তা ডলারের বিপরীতে দাঁড়ায় ২৩৬.৫০ রুপিতে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ পারফরম্যান্সকারী মুদ্রাগুলোর মধ্যে পাকিস্তানি রুপি একটি। চলতি বছরের শুরু থেকে রুপির মূল্য ৩০ শতাংশেরও বেশি হ্রাস পেয়েছে। মুদ্রা ব্যবসায়ীদের মতে, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও গভীর হওয়া এবং ডলারের সংকট রুপির ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবসায়ীরা দ্য নিউজকে বলছেন, ‘বিনিময় হারের অস্থিরতা রোধে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে ডলার বিক্রি না করায় ব্যাংকগুলোতে বৈদেশিক মুদ্রার অভাব রয়েছে। রপ্তানিকারকরাও ডলারকে রুপিতে রূপান্তর করছেন না এবং এর ফলে ডলারের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।’
গত সপ্তাহে মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার মান প্রায় ৮ শতাংশ কমে গেছে এবং এতে করে পাকিস্তানের অর্থনীতিতে আশঙ্কা আরও বেড়েছে। এছাড়া গত ১৫ জুলাই পর্যন্ত দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৯৩০ কোটি ডলারে নেমে এসেছে।
একইসঙ্গে মুদ্রাস্ফীতি এক দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে রয়েছে সবচেয়ে খারাপ স্তরে। অবশ্য কেবল পাকিস্তানি রুপিই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে অন্যান্য সকল মুদ্রার বিপরীতেই ডলার ক্রমাগত শক্তিশালী হচ্ছে।