মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান:
আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে গেছেন এটা সবাই জানেন। তাঁর মত ব্যক্তিত্বের জন্য এই কথাটা বারবার বলার মত নয়। অনেক কীর্তি আর অর্জন তাঁর আছে। যেগুলো আরো দীর্ঘদিন মানুষের হৃদয়ে জাগরূক থাকবে। মানুষ সেগুলো নিয়ে আলোকপাত করতে থাকবেন। এটা অবশ্যই ইতিবাচক দিক। তবে এরচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তাঁর চিন্তা ও দর্শন গুলো জিইয়ে রাখা। তাঁর রাজনীতি অন্য অনেকের চেয়ে ব্যতিক্রম ছিল। এতে কোন সন্দেহ নেই। আমি সংগত কারণেই সেদিকে যাব না। আমি সেই অংগনের লোকও নই। সমাজ, ধর্ম, শিক্ষা ও সংস্কৃতি নিয়ে উনার নিজস্ব কিছু ভাবনা ছিল। সেগুলো অস্পষ্ট ও অনির্দিষ্ট ছিল না। বরং ছিল সুস্পষ্ট, সুনির্দিষ্ট, সুদৃঢ় ও বিশদ। এগুলো তাঁর হৃদয়ের গভীরভাবে প্রোথিত ছিল। এগুলো তিনি বহন করতেন। ধারণ করতেন। লালন করতেন। সুযোগ পেলে বাস্তবায়ন করতেন। অনেক সময় সুযোগের অপেক্ষয় না থেকে বাস্তবায়নের সুযোগ করে নিতেন। প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে জয়েন করার পর থেকে তিনি কেন জানি আমাকে খুব স্নেহ করতেন। পরে আমি মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে নিয়োগ পাই। সেই সাথে সিটি কর্পোরেশনের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পাই। সেই সূত্র ধরে আমি একই সাথে সিটি ম্যাজিস্ট্রেট ও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে কাজ করতাম। সময়টা ছিল ২০০৮ সালের মাঝামাঝি থেকে ২০১২ সালের মাঝামাঝি। সকাল ৯:০০ টা থেকে ১০:৪৫ পর্যন্ত আমি চসিকে কাজ করতাম। কর্পোরেশনের অন্যান্য মামলার সাথে আমি সালিশী বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসাবে স্বামী-স্ত্রীর বিরোধ মিমাংসার চেষ্টা করতাম। এই কাজটি তিনি খুব পছন্দ করতেন। কোন কোন সময় নিজেই অনেক বিরোধ মিমাংসা করে দিতেন। আমার কাজ গুলোর ব্যাপারে খোঁজখবর নিতেন। কিন্তু কোন দিন কোন বিষয়ে কোন তদবির কিংবা নিজের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে চাননি। একজন অফিসার হিসাবে আমার সুবিধা অসুবিধার খেয়াল রাখতেন। কয়েকদিন দেখা না হলে কাউকে পাঠিয়ে কিংবা ফোন করে খবর নিতেন। হঠাৎ ফোন করে বলতেন, ‘‘আস্সালামুয়ালাইকুম ওয়ারহমতুল্লাহ। য়াঁই মহিউদ্দিন চৌধুরী হইরদ্দি। অনেরলাই পেট পুরের। ওয়া জজ সাব।’’ (আমি মহিউদ্দিন চৌধুরী বলতেছি। আপনারে মিস করছি, জজ সাহেব।)’’ আমি বলতাম, ‘‘য়াঁই রাতিয়া আইস্সুম। য়াঁরত্তুনও পেট পুরের।’’ (আমি রাত্রে আসব। আমিও মিস করছি আপনাকে)।’’ এই ভাবেই একজন প্রবীন যশস্বী মানুষের সাথে মায়ার বন্ধনে জড়িয়ে যাই।
শিক্ষা ও শিক্ষার প্রসারের তাঁর একটা নিজস্ব চিন্তা ভাবনা ছিল। আমদের নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েরা পড়া শুনায় খুব ভাল হবে। সেটা তিনি চাইতেন। বলতেন- ইউরোপ আমেরিকায় গিয়ে কম্পিটিশন করতে না পারলে কিসের পড়াশুনা। উনার ছোট্ট এক নাতনী সিঙ্গাপুরে একটা স্কুলে ক্লাস ওয়ান বা টু’তে একটি অংক পরীক্ষায় ৫০ এ ৫০ বা ৩০ এ ৩০ পেয়েছিল। সেই খাতাটি তিনি বেশ কিছুদিন নিজের কাছে রাখতেন। কেউ গেলে সেই খাতাটি দেখাতেন। নাতনীর রেজাল্টের চেয়েও যে জিনিসটি উনাকে আকৃষ্ট করেছিল সেটি হল- প্রশ্নের ধরণ এবং বিষয়বস্তু। আমাকে সেই খাতাটি দেখিয়ে বলেন, ‘‘দেইক্কুন নে ওয়া জজ সাব, ইতারা হড়ে! আরা হড়ে!’’(দেখেছেন জজ সাহেব, ওরা কোথায়! আর আমরা কোথায়।) নিজের শিক্ষকদের সম্মান করতেন। প্রিন্সিপাল রেজাউল করিম সাহেবের কথা আমাকে অনেকবার বলেছেন। বলতেন, ‘‘য়াঁর স্যার বেশি জ্ঞানী মানুষ আছিল (আমার স্যার বেশি জ্ঞানী মানুষ ছিল)।’’ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ভি.সি স্যারও উনার শিক্ষক ছিলেন। ১৯৬৪ সালের সেন স্যার তাঁকে সিটি কলেজে পড়িয়েছেন। চৌধুরী সাহেব সেন স্যারকে অত্যধিক সম্মান করতেন। বলতে গেলে পিতার মত মানতেন। সেন স্যারের সামনে উনি কাউকে বকাও দিতেন না। স্যারের সামনে উঁচু গলায় কথা বলতেন না। কোন বিষয়ে স্যারের সাথে কথা বলতে হলে নিজে গিয়ে দেখা করে কথা বলতেন। সেই ক্ষেত্রেও আগে অনুমতি নিতেন। কখনো সেন স্যারকে ডেকে পাঠাতেন না। এগুলো থেকে ভবিষ্যৎ ও বর্তমান নেতাদের অনেক কিছু শেখার আছে।
একবার আমি উনার বাসার নীচ তলার ড্রয়িংরুমে বসে ছিলাম। এই সময় একজন লোক কোন একটা বিষয়ে সেন স্যারকে অনুরোধ করার জন্য বলেন। তখন তিনি বলেন, ‘ইবা য়াঁর ওস্তাদ। য়াঁই ইবার উঅদ্দি হতা হইত পাইত্তাম ন।’’ (উনি আমার ওস্তাদ। আমি উনার কথার উপরে কথা বলতে পারবো না।) একবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভি.সি.দের কাজকর্ম নিয়ে কথা উঠলে তিনি খুব হতাশা ব্যক্ত করেন। বলেন, ‘‘আগে এই রহম না আছিল। ভার্সিটির মাস্টার অক্কল বরবাদ গিয়ে। ভি.সি অক্কল ত আরো শেষ। য়াঁর সেন স্যার কিন্তু ফেরেস্তার মত মানুষ। ইবার মত ভি.সি অইত ন। শুধু কলমাগান নাই দে। আর নইলে আউলিয়া বুজুর্গ অই যাইত গই। মুসলমান অইলে আরাত্তুন ভালো মুসলমান অইতেন।’’ (আগে এই রকম ছিল না। ভার্সিটির শিক্ষকগণ বরবাদ হয়ে গেছেন। ভি.সি.রা আরো শেষ। আমার সেন স্যার ফেরাস্তার মত মানুষ। উনার মত ভি.সি হবে না। শুধু কালেমাটা পড়েন নাই। আর না হলে আওলিয়া বুজুর্গ হয়ে যেতেন। মুসলিম হলে আমাদের থেকে ভাল মুসলিম হতেন)।’’ আইন শিক্ষা এবং আইন বিভাগ নিয়ে উনার বিশেষ আগ্রহ ছিল। উনার বড় ছেলে তখন ইংল্যান্ডে আইন বিষয়ে পড়ছিলেন। তখনও ব্যারিস্টার হন নি। প্রসঙ্গক্রমে একদিন আমাকে বলেন, ‘‘য়াঁর পোয়া নওফেল সাম্যবাদী দে এরি। কিন্তু পড়া লেখাত খুব ভালা। ইতা বেশি পড়ে। (আমার ছেলে নওফেল সাম্যবাদী কিন্তু পড়া লেখায় খুব ভাল। ও বেশি পড়ে।)’’ তাঁর অন্য ছেলেমেয়ের নিয়ে একদিন বলেন, ‘‘য়াঁর পোয়া মাইয়া অক্কল খুব হষ্ট গরে। বিদেশত চরি গরি হরচ যোয়ার গরে। য়াঁই এদুনটেয়া হত্তুন দিয়ম। য়াঁর পোয়া অক্কল টায়াররে সোফা বানাই বইয়ে। (আমার ছেলে মেয়েরা খুব কষ্ট করে। বিদেশে চাকরী করে টাকা ইনকাম করে। আমি এত টাকা কোথাথেকে দিব। আমার সন্তানরা টায়ারকে সোফা বানিয়ে বসে।) ’’ আমাকে একবার জিজ্ঞেস করেন ‘‘প্রিমিয়ারর পোয়া অক্কল ব্যারিস্টার হতে পারবে না ? (প্রিমিয়ারের ছেলে মেয়েরা ব্যারিস্টার হতে পারবে না?)’’ বললাম- ‘‘আমাদের ডিগ্রী ওরা স্বীকৃতি দেয় না। তাই বার করতে চাইলে ওখানে আইনের ডিগ্রী করতে হয়।’’ জবাবে উনি বলেন, ‘‘ওদের সেই কোর্স আমরা এখানে পড়াতে পারি না ? পরে ক্রেডিট ট্রান্সফার করবে।সেই ক্ষেত্রে ছাত্রদের ৩/৪ বছর সময় বেঁচে যাবে। সেই লক্ষ্যে তিনি প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেন। তাঁরা যেন ইংল্যান্ডের কয়েকটি ইউনিভার্সিটির সাথে সেই ব্যাপারে চুক্তি করেন। তিনি আশা করতেন আইনের ছাত্ররা ভাল বক্তৃতা দিবেন। বলতেন, ‘‘গডগইট্টা ইংরেজি হইত পারা পরিব’’ (খুব ভাল ইংরেজি বলতে পারতে হবে)।’’
তিনি আশা করতেন আমাদের আইন বিভাগের ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধভাবে বার ও সমাজে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। এজন্য তিনি ‘ল’- এর ছাত্রদের একটা শক্তিশালী অ্যালমনাই থাকুক। এটা নিয়ে তিনি সেন স্যার ও আমার সাথে অনেকবার কথা বলেছেন। আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা সেই স্বপ্ন পূরণ করেছেন। এবং ভালোভাবে করেছেন।
একবার আমার সাথে দেখা হলে কোন কথা বলার আগেই বলেন, ‘‘দেখলেন, জজ সাহেব। চিটাং কলেজের রেজাল্ট খুব খারাপ হয়েছে। পড়াশুনা না করে সারাদিন খালি মারামারি আর রাজনীতি করে। পড়াশুনা না করলে এদের ভবিষ্যৎ কি ? আর দেশের ভবিষ্যৎ কি ?’’
এক প্রকার বলতে গেলে উনার জীবনের স্মায়হ্নে এসে উনার সাথে আমার পরিচয় হয়। সেই সুবাদে এমন অনেক অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধি সম্পর্কে জানতে পেরেছি যেগুলো ছিল পরিণত, প্রয়োজনীয় ও সুদৃঢ়। সাধারণ অসহায় মানুষের প্রতি তাঁর অসম্ভব রকমের টান ছিল। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে একবার বাসে চড়ে সীমান্তের দিকে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাসের এক মহিলা যাত্রী সন্তান প্রসব করে বসেন। যাত্রীরা যে যেদিকে পারে পালিয়ে যায়। কিন্তু চৌধুরী সাহেব বাস থামিয়ে বাঁশের ডলু (বাঁশের কঞ্চির ধারালো অংশ) দিয়ে বাচ্চাটির ‘নাড়’(নাভি) কাটেন। তারপর মা ও বাচ্চাকে অনেক দূরে একটি হাসপাতালে দিয়ে গন্তব্যের দিকে যান। এইরূপ আরেকটি ঘটনা তিনি আমাকে বলেন। বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকান্ডের পর তিনি নাজুক পরিস্থিতিতে কলকাতায় চলে যেতে বাধ্য হন। ঐ সময় নিজ খরচ চালানোর জন্য তিনি একটি হোটেলে কাজ করতেন। হোটেলের উল্টা পাশে রাস্তার উপর ডাস্টবিনের মধ্যে একটি কান্নারত নবজাতক শিশুকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে হোটেলে নিয়ে আসেন। বাচ্চাটাকে হোটেলে আনার পর হোটেলের মালিক, ম্যানেজার, স্টাফ ও বোর্ডাররা কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে ‘রাম রাম’ ‘হরি হরি’ বলে পালাতে থাকেন। পরে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে বাচ্চাটাকে কিছুদিন হোটেলে রাখেন। সময়মত দুধ খাওয়ানো, গোসল করানো ইত্যাদি সবকিছু তাঁকেই করতে হত হোটেলের নিয়মিত দায়িত্বের সাথে। পরে ছেলেটিকে তিনি একটা অনাথ আশ্রমে রেখে আসেন। ছেলেটি সেখানে থেকে বড় হতে থাকল। পড়াশুনাও করতে থাকল। স্বাধীনতার পর এবং মেয়র থাকাকালীন সময়ে কলকাতায় গেলে তিনি ছেলেটিকে দেখতে যেতেন। শেষ যে বার যান সেই বার আর দেখা হয় নাই। ইউরোপ কিংবা আমেরিকার কোন এক দম্পতি দত্তক নিয়ে যান।
তিনি সিটি গভর্ণমেন্ট কনসেপ্টি জোরালোভাবে ধারণ করতেন। একই সাথে সরকারের ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে আমাদের মত জনবহুল দেশের জন্য খুব প্রয়োজনীয় মনে করতেন। একবার জিজ্ঞেস করেছিলাম, ‘‘বাংলাদেশের মত ছোট দেশে এটা কেমন হবে ?’’ উনি জবাবে বলেন, ‘‘শ্রীলংকাতে থাকলে আমাদের অসুবিধা কোথায় ? এত জনসংখ্যার চাপ একটি সরকারের পক্ষে সামলানো কঠিন।’’ বললাম ‘‘আপনি এগুলো বাইরে বলেন না কেন ?’’ জবাবে বলেন, ‘‘অনেকে ভুল ব্যাখ্যা করবে। কেউ কেউ ভুলও বুঝবে। অনেকেইত আমাকে চট্টগ্রামের জাতীয়তাবাদী নেতা বলতে কুণ্ঠা করে না। আমি কোন ইজমে বিশ্বাসী নই। চাটগাঁইয়া ইজম তো নয়ই। আমি চট্টগ্রামকে ভালোবাসি। এটা কোন ইজম নয়। এই ভালোবাসা আমাকে চট্টগ্রামের বঞ্চনার বিরুদ্ধে দাঁড় করায়। বঞ্চিত জনপদ ও মানুষের পক্ষে বলা কোন ইজম নয়। এটা আমার রাজনীতি, আমার আদর্শ এবং আমার আমৃত্যু সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু আমাকে বুঝতেন। এইজন্য আমাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বও দিয়েছিলেন। শ্রমজীবী মানুষের পক্ষে আমার সংগ্রামকে তিনি খুব মূল্যায়ন করতেন।’’
রাজারা আল্লাহ পাকের ক্ষমতাকে পরম ও চরমভাবে বুঝতে পারেন। এজন্য বলা হয়- রাজা যখন সিজদা দেয়, তখন রাজত্বকে সাথে নিয়ে সেজদা দেন। মহান আল্লাহর বাড়ত্ব, মহত্ব ও ক্ষমতা শেষ জীবনে উনার হৃদয়কে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। হজ্বে গিয়ে বৃদ্ধ হাজীদের পা ধুয়ে দিতেন। পা টিপে দিতেন। তাঁদের রান্না করেও খাওয়াতেন। খুব কাঁদতেন স্রষ্টার কছে। হাত তুলতেই চোখ ভিজে যেতো। একবার একটি আকদ অনুষ্ঠানে হঠাৎ করে আমাকে মুনাজাত করতে বলেন। আমি মুনাজাত শুরু করি। মুনাজাত শেষে দেখলাম- উনি তখনো কাঁদছেন। মাঝে মাঝে আমাকে বলতেন, ‘‘ওয়া জজ সাব, আল্লাহ য়াঁরে মাফ গরিব নে ?’’ (জজ সাহেব আল্লাহ আমাকে মাফ করবেন?)’’ আমি বলতাম- ‘আল্লাহ দয়ালু, ক্ষমাশীল, অবশ্যই মাফ করবেন।, যে ব্যক্তি তাঁর বান্দাদের ভালোবাসেন, আল্লাহ তাঁকে বালোবাসেন।’’ আসলে আলহাজ্ব এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরীর মত রাজনীতিবিদদের আদর্শ, দর্শন, চেতনা ও সংগ্রামকে ধারণ করার মত যোগ্যতা খুব কম জনেরই আছে। উনার সত্যিকার রাজনৈতিক উত্তারাধিকার হওয়া অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয় হবে। তবে সেটা অনেক কঠিন বলে মনে হয়। উনাকে নিয়ে আমার অজস্র স্মৃতি। সেগুলো নিয়ে অনেক লেখা যাবে। কিন্তু এই মুহুর্তে লিখতে চাই না অনেক কারণে। একটা কথা বারবার মনে আসে। তা হলো- আজও বুঝতে পারিনি আমার মত নগন্য কর্মকর্তার জন্য উনার কেন এত মায়া ছিল, কেন এত স্নেহ ছিল ? তবে উনার প্রতি আমার যে ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা সেটা কোন অন্ধ আবেগ নয়। উনি সেটা ডির্জাভ করতেন। এর পেছনে অনেক যৌক্তিক কারণ ও ঘটনা আছে। সেগুলো আজ না হয় নাই বললাম। তবে এতটুকু বলি উনি ভুলে যাওয়ার নন। ভীষণ প্রেমময়। ভীষণ স্নেহ পরায়ণ। ভীষণ শ্রদ্ধা জাগানিয়া।
লেখকঃ মোহাম্মদ মাহাবুবুর রহমান
বিচারক, শিক্ষক ও আইন বিশেষজ্ঞ।