স্টাফ রিপোর্টারঃ
মহামারি করোনার বিস্তার রোধে সরকার ঘোষিত দফায় দফায় লকডাউনে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছে চট্টগ্রামের টেরিবাজারে। এমন কঠিন পরিস্থিতিতে দোকানপাট খোলা না থাকায় আয়ের পথ বন্ধ হয়ে গেছে ব্যবসায়ীদের। এতে টেরিবাজারের অন্তত ২ হাজার ব্যবসায়ীর কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। তাই লকডাউন সীমিত করে কঠোর স্বাস্থবিধির আইন প্রয়োগ করে আগামী ৫ আগস্ট থেকে ব্যবসা করার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছেন টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির নেতৃবৃন্দ।
ব্যবসায়ীরা জানান, লকডাউনের কারণে দীর্ঘদিন দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। আগের চালানগুলো গোডাউনে মজুদ আছে। কাপড়গুলো অবিক্রিত অবস্থায় রয়ে গেছে। উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। প্রায় ১৫ হাজারের বেশি কর্মচারি বেকার হয়ে পড়েছে। সংসার জালাতে হিমশিম খাচ্ছে। যারা বাকিতে পোশাক কিনে এনেছিলেন তারা আয় না থাকায় সে টাকা শোধ করতে পারছেন না। সেই সাথে দোকানভাড়া, বিদ্যুৎ খরচ, আয়কর ও কর্মচারিদের বেতন তো বন্ধ নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি নিষেধাজ্ঞা মেনে চলায় টেরীবাজারের অলিগলির সব দোকানে তালা ঝুলছে। দোকান ও গণপরিবহণ বন্ধ থাকায় প্রাণচঞ্চল টেরীবাজারে বিরাজ করছে শুনসান নিরবতা। শুধু ব্যবসায়ীদের মালামাল পাহারার দায়িত্ব পালন করছেন দারোয়ানরা।
টেরীবাজারের পাইকারি থান কাপড় ও ফেব্রিকস কাপড় বিক্রেতা মোঃ নূর বক্স খোকন বলেন, ‘দোকান বন্ধ, আয় নেই। দোকান ভাড়া চলছে, কর্মচারিদের পাওনা টাকা এখনো দিতে পারিনি। ওরা বারবার ফোন করছে, কোন সদুত্তর দিতে পারছি না। কখনো দোকান ভাড়া ও কর্মচারিদের টাকা আটকে রাখার স্বভাব আমার ছিল না, এখনো সে মন-মানসিকতা নেই। এ মাসের দোকান ভাড়া এখনো দিতে পারিনি। দোকান মালিককে বলেছি কটা দিন সময় দিতে। বাসা ভাড়া আটকে আছে এখনও। আয় নেই, ব্যয় করবো কিভাবে? অতিসত্তর দোকান খুলে দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে আমরা ব্যবসায়ীরা প্রাণে বেঁচে যাই।’
টেরীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান বলেন, ‘করোনার কারণে গত দুবছর ধরে করুণ পরিস্থিতি ব্যবসায়ীদের। চলমান লকডাউনে ব্যবসা বন্ধ থাকায় শুধু ব্যবসায়ী নয়, অসংখ্য কর্মচারির পরিবারে আর্থিক সঙ্কটে চলছে হাহাকার। আমরা জানি বর্তমানে মহামারির কারণে দেশে ভয়ানক পরিস্থিতি চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে মনে রাখতে হবে ব্যবসায়ীরা হলো অর্থনৈতিক চালিকা শক্তি। তারাই সরকারের নিকট নিয়মিত ভ্যাট ও ট্যাক্স দিয়ে আসছে। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমরা কোন আর্থিক প্রণোদনাও পাইনি। তাই লকডাউন সীমিত করে কঠোর স্বাস্থবিধির আইন প্রয়োগ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীদের আগামী ৫ আগস্ট থেকে খুলে দিয়ে ব্যবসার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।’