স্টাফ রিপোর্টার:
চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার সাবেক স্কুলশিক্ষক সেলিম মাস্টারের দুই মেয়ে সম্প্রতি তার পেনশনের ৪২ লাখ টাকা নিয়ে তাকে রাস্তায় ফেলে যায়। শনিবার (২৯ এপ্রিল) মিরপুরের দক্ষিণ পাইকপাড়ার বৃদ্ধাশ্রম ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার’ পরিদর্শন করে ওই বৃদ্ধের পাশে দাঁড়িয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
এ সময় তিনি বলেন, বৃদ্ধ মাতা-পিতা ও অভিভাবকের যত্ন নেওয়া সন্তানদের সামাজিক ও আইনগত দায়িত্ব। অসহায়-অসুস্থ মা-বাবার ভরণপোষণ না দেওয়া বা তাদেরকে রাস্তায় ফেলে চলে যাওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ।
উল্লেখ্য, সেলিম মাস্টারের বাড়ি ড. হাছান মাহমুদের নির্বাচনী এলাকা রাঙ্গুনিয়াতে।
হাছান মাহমুদ বলেন, শিক্ষক সেলিমের এ অবস্থার উত্তরণের জন্য সন্তানদের খুঁজে বের করতে ইতোমধ্যেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আবেগাপ্লুত সেলিম মাস্টার আগামী নির্বাচনের সময় এলাকায় গিয়ে হাছান মাহমুদের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার আগ্রহের কথা জানান।
মন্ত্রী আশ্রম ঘুরে বাসিন্দাদের খোঁজ-খবর নেন, তাদের হাতে উপহারসামগ্রী তুলে দেন এবং শেষে চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ার ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মিল্টন সমাদ্দারের হাতে আর্থিক সহায়তার একটি চেক প্রদান করেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন,’প্রত্যেক সন্তানের উচিত বাবা-মা যেমনই হোক, যতদিন বেঁচে থাকে তাদের সেবা-শুশ্রূষা, দেখা-শোনা ও সাধ্যমত যতটুকু সম্ভব করা। আমাদের দেশে সাধারণত মানুষ তা-ই করে থাকে এবং আমাদের সরকার এ বিষয়ে আইনও প্রণয়ন করেছে। যারা এটি করে না, তারা যেমন একদিকে সামাজিক অন্যায় করছে, অপরদিকে রাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী একটি গুরুতর অপরাধ করছে। এই অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য।’
বৃদ্ধাশ্রম প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের প্রশংসা করে তথ্যমন্ত্রী বলেন,’মিল্টন সমাদ্দার যে কাজটি করছেন সেটি অনন্য কাজ। আমি দেশের একজন নাগরিক হিসেবে, সরকারের একজন মন্ত্রী হিসেবে তার প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। ইতোমধ্যেই তাকে আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকৃতি ও উৎসাহ দেওয়ার জন্য যুব পুরস্কার এবং সমাজকল্যাণ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে, নানাভাবে সহায়তা করা হয়েছে এবং প্রয়োজনে আরও সহায়তা করব। আমি মনে করি, তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আরও অনেকেই এ ধরনের কাজে এগিয়ে আসবে।’
মিল্টন সমাদ্দার জানান, ২০১৪ সালে একজন অসহায় বৃদ্ধকে নিজের বাসায় নিয়ে আসার পর থেকে মনের তাগিদে তিনি আশ্রমটি প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে সেখানে ১৫ জন অনাথ শিশু, ২০ জন বিশেষ শিশু-কিশোর ও ১৩৫ জন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা আছেন। আশ্রমটি বিনাখরচে বিভিন্ন মানুষের ব্যক্তিগত দানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়।