মোরশেদুল হক আকবরীঃ
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ বলেছেন, আমাদের আগামীর দুটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। একটি হলো আওয়ামী লীগের জয় নিশ্চিত করা এবং মর্যাদাশীল জাতি হিসেবে আমাদের প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। সবার মনে এখন একটাই প্রশ্ন, কে আসবে আগামীর নেতৃত্বে? কিন্তু প্রশ্ন হওয়া উচিত কেমন হবে আগামীর নেতৃত্ব। আপনারা প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেন এমন ব্যক্তিকে নির্বাচন করুন। কারণ, যোগ্য নেতৃত্বের মাধ্যমে সঠিক দল ও দেশ গঠন করা সম্ভব।
শনিবার (২৮ মে) চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলার পটিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত চট্টগ্রাম দক্ষিন জেলা আওয়ামী যুবলীগের ত্রি- বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ ফজলে শামস পরশ বলেন, আজ সম্মেলনে এসে আমার একসাথে অনেকগুলো অনুভূতি কাজ করছে। প্রীতিলতা, মাস্টার দা সূর্যসেনসহ অনেক জ্ঞানী গুণীর জন্ম এ চট্টগ্রামে। সাংস্কৃতিক দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই চট্টগ্রাম। জনপ্রিয় ব্যান্ড রেনেসাঁ, সোলস, এলআরবিসহ অনেক ভাল ব্যান্ডের জন্ম এ চট্টগ্রামে। চট্টগ্রামের বিপ্লবী ঐতিহ্য রয়েছে। এ মাটি বিপ্লবী মাটি। আজকের সম্মেলন ঐতিহাসিক সম্মেলন।এ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন সূচনা তৈরি হবে। আপনারা প্রকৃত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করেন এমন ব্যক্তিকে নির্বাচন করুন। আমাদের লক্ষ্য এ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলাকে আওয়ামী লীগের ঘাটিতে রূপান্তর করা।
তিনি বলেন, আমাদের মনে রাখা দরকার রাজনীতির সাথে নীতি কথাটা যুক্ত আছে। নীতি নৈতিকতার চর্চা থাকতে হবে। আগে রাজনীতিবিদরা নৈতিকতার চর্চা করতেন। বঙ্গবন্ধুর এক কথায় ৩০ লাখ মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। জনগণের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো কাউকে ভয় পায় না। তাই আমি বিশ্বাস করি যুবলীগের সহযোগিতায় আগামীতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি নির্বাচিত হবেন। কারণ সৎ নেতৃত্ব পরিচালনার বিকল্প নাই। সঠিক নেতৃত্ব না থাকলে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় থাকে না।
বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। যোগ্য নেতৃত্বের কারণে এটি সম্ভব হয়েছে। আর এই যোগ্য নেতৃত্ব দিচ্ছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা। একই সাথে মনে রাখতে হবে জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। বিএনপি-জামায়াতের ক্ষমতার উৎস ছিল ক্যান্টনমেন্ট। আমরা নারীর ক্ষমতায়ন, দুর্নীতি দমন, দেশীয় উন্নয়নে সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছি। আজ কেউ দুর্নীতি করে ছাড় পাচ্ছেন না। এটা ধরে রাখতে পারলে এ দেশ নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড বা কানাডার মত হতে বেশি সময় লাগবে না।
শেখ ফজলে শামস পরশ আরো বলেন, আজ স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়িত হয়েছে। এটা নিয়েও ষড়যন্ত্র হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত এ উন্নয়নের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করতে পারছে না। সমালোচনা যে কোন কাজে প্রযোজ্য। তবে সমালোচনার রাজনৈতিক গুরুত্ব নেই। অথচ বিএনপি সমালোচনার মধ্যেই পড়ে আছে। তাদের মধ্যে ভালবাসা, মমতা, সহানুভূতি নেই। শুধুমাত্র আওয়ামী বিরোধী কথা বলে রাজনীতি হয়না, বাস্তবতায় ফিরে আসেন। শেখ হাসিনা সৎ ও আদর্শ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে মানুষের মন জয় করে নিয়েছেন। যতদিন শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আছেন, ততদিন বাংলাদেশ তালেবান বা শ্রীলংকা হবে না। পরিশেষে আমি বলতে চাই, দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। মুজিব মানে দেশপ্রেম, জাতীয়তাবোধ। এগুলো বুকে ধারণ করে দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে।
সম্মেলনে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দীন আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক বেগম ওয়াসিকা আয়েশা খানম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দপ্তার সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম আমিন, চট্টগ্রাম-১২ এর সাংসদ ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরী প্রমুখ।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন খান নিখিল। বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত আছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ বদিউল আলম। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম-১৪ আসনের সাংসদ মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৬ আসনের সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাংসদ প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী প্রমুখ।