মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যেকোন কাজে আগ্রহ, ধৈর্য, পরিশ্রম ও সততা থাকলে সফলতা অর্জন করা সম্ভব : রাশেদ চৌধুরী


প্রকাশের সময় :১৭ জুলাই, ২০২০ ২:২৭ : অপরাহ্ণ

এম.এইচ মুরাদঃ

অদম্য ইচ্ছা আর চেষ্টার আসে সফলতা। তাইতো সে ইচ্ছা আর চেষ্টাকে কাজে লাগিয়ে শূন্য থেকে অনেকেই উঠে যান শীর্ষে। একজন সাধারণ মানুষ থেকে হয়ে উঠেন সফলতার দিকপাল। তবে এই সফলতার পিছনে রয়েছে সুখ-দুঃখের হাজারও কাব্য। তেমনই একটি কাব্যগাঁথার মহানায়ক আল-মদিনা বিউটি কনসেপ্ট’র স্বত্বাধিকারী রাশেদ চৌধুরী। সততা, আগ্রহ আর কঠোর পরিশ্রম তাঁকে এনে দিয়েছে ঈর্ষণীয় সফলতা।

রাশেদ চৌধুরীর শুরুটা আর আট-দশজন উদ্যোক্তার মত ছিলো না। তাঁর ছিল না কোনো পুঁজি কিংবা পারিবারিকভাবে পাওয়া ব্যবসায়িক সম্পত্তি। ছিলো না ঐতিহ্য। কিংবা বাবার গড়া প্রতিষ্ঠান। একেবারে শূন্য থেকে ব্যবসায়িক জীবন শুরু তাঁর। স্বীকারও করেন অকপটে। মেধা ও ঘাম কখনো প্রতারণা করে না- বিশ্বাসও করেন তিনি। প্রমাণও পেয়েছেন। ছোট-ছোট পদক্ষেপে পেরিয়েছেন এক-একটি ধাপ, নানা প্রতিকূলতা ও বিপত্তি ডিঙিয়ে উঠে এসেছেন আজকের এই অবস্থানে।

১৯৬১ সালের ১৭ অক্টোবর রাঙ্গুনিয়ার রাজা নগর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম চৌধুরী সাইফুদ্দিন রাশেদ সিদ্দিকীর। ডাক নাম রাশেদ চৌধুরী। বাবা-মাসহ আট সদস্যের পরিবারে তিন ভাই ও চার বোনের মধ্যে রাশেদ চৌধুরী পঞ্চম সন্তান। বাবা এ বি এম শামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরি মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, সমাজ সেবক এবং শিক্ষানুরাগী ধর্মপরায়ন এবং দানবীর মানুষ ছিলেন।

জীবনের শুরুটা গ্রামে হলেও যৌবনকাল থেকে তাঁর বেড়ে উঠা বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। স্কুল জীবন পার করেছেন নিজের জন্মস্থান উত্তর রাঙ্গুনীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখান থেকে এসএসসি পাশ করে ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হন সরকারি সিটি কলেজে। ইন্টারমিডিয়েটে অধ্যয়নরত অবস্থায় জড়িয়ে পড়েন ব্যবসায়। তাই লেখাপড়ার পাঠ বাড়েনি খুব বেশিদূর। কিন্তু যে জীবন সফল হবার সেই জীবনকে তো কোনোভাবে দমিয়ে রাখা যায় না!

উচ্চমাধ্যমিকে পড়া স্বপ্নবাজ সেই তরুণের মাথায় তখনই দারুণভাবে চেপে বসে ব্যবসায়ের ঝোঁক। কিন্তু, ব্যবসা করতে হলে চাই যথেষ্ট মূলধনের যোগান তা যে নেই তাঁর কাছে। আর মূলধন ছাড়া ব্যবসা কল্পনা করা মানেই অন্ধকারে ঢিল ছুঁড়ে মারার মতো। অনেকেই বললেন সে কথা। তারপরও তিনি থেমে যান নি। অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখিয়েছেন অনেক চড়াই-উৎরাই পার হওয়ার মধ্য দিয়ে।

নিজ উদ্যোগে, চেষ্টায় কিছু একটা করার সুযোগ খুঁজতেন তিনি। খুঁজতেন ব্যবসায়ের পথ। অবসর সময়ে চলে যেতেন বন্দরে আসা বিদেশি জাহাজের ঘাটে। সেখান থেকেই শূন্য হাতে তাঁর ব্যবসায়ের শুরু। প্রথমদিকে, পণ্যবাহী জাহাজে থাকা বিদেশিদের ডলার ভাঙিয়ে দিয়ে পেতেন স্বল্প কিছু অর্থ। সেই অর্থ জমিয়ে ধীরে-ধীরে বিদেশি জাহাজে অব্যবহৃত বিভিন্ন মালামাল ক্রয় করে শহরের খুচরা ব্যবসায়ীর নিকট বিক্রি করা শুরু করেন রাশেদ চৌধুরী। পরবর্তীতে জাহাজের বড় বড় ডিনার সেট ও কাচের মালামাল ক্রয় করে পাইকারি দরে বাজারে বিক্রি করা শুরু করেন।

সময়টা তখন ১৯৮২। স্বল্পপুঁজিতে লাভজনক এ ব্যবসা থেকে ব্যবসার জন্য পুঁজি জমা করেন তিনি। সে সময় কারও সহযোগিতা পেয়েছিলেন কী না- এমন প্রশ্নের জবাবে রাশেদ চৌধুরী জানান, পরবর্তিতে বড় ভাই এস কে সিদ্দিকী ও পরিচিত ব্যাংকার এক বড় ভাই গাজী সালাউদ্দিনের উৎসাহ ও পরামর্শে ব্যবসায়িকভাবে তাঁকে সফল হতে সাহায্য করেছে।

তিনি বলেন, ১৯৮৪ সালের শুরুর দিকে তিনি নতুন উদ্যমে পুঁজি নিয়ে শুরু করেন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের ব্যবসা। ধীরে-ধীরে বাড়তে থাকে তাঁর ব্যবসায়ের পরিধি। সৃষ্টি হয় নানামুখী ব্যবসার সুযোগ। তারই ধারাবাহিকতায় ১৯৮৬ সালে ইলেক্ট্রনিক্স ব্যবসার পাশাপাশি যুক্ত হন কাচের ব্যবসায়। টানা ২২ বছর এই দুটি ব্যবসায়ের সাথে যুক্ত ছিলেন রাশেদ চৌধুরী।

তিনি জানান, ইলেক্ট্রনিক্স ও গ্লাসের (কাচের) ব্যবসা করার সময় সহজলভ্য, লাভজনক ও অধিক চাহিদার কারণে তিনি আকৃষ্ট হন প্রসাধনী সামগ্রীর ব্যবসার প্রতি। ২০০৬ সালে নগরীর ব্যস্ততম এলাকা কাজীর দেউরির স্বনামধন্য সুপার মার্কেট ভিআইপি টাউয়ারে ঝাঁকজমকভাবে শুরু করেন আল-মদিনা বিউটি কনসেপ্ট নামে কসমেটিকসের দোকান। সততা আর বিশ্বস্ততার কারণে খুব অল্প দিনেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে আল-মদিনা। বাড়তে থাকে দোকানের পরিধি। দোকান থেকে শোরুমে রূপ নেয় আল-মদিনা বিউটি কনসেপ্ট।

বর্তমানে দেশি-বিদেশি উন্নতমানের দামি সব কসমেটিকস সামগ্রী পাওয়া যায় আল-মদিনায়। শহরের আনাচে-কানাচে গড়ে উঠা ছোট-বড় সব বিউটি পার্লারে প্রসাধনি সামগ্রী পাইকারি মূল্যে যোগান দেয় আল-মদিনা বিউটি কনসেপ্ট।গুণগত মান আর বিশ্বস্ততা ধরে রাখতে রাশেদ চৌধুরী বর্তমানে দেশিয় পণ্য ছাড়াও যোগান দিচ্ছেন দামি-দামি এবং কোয়ালিটি সব বিদেশি পণ্য। হলান্ড, যুক্তরাজ্য, থাইল্যান্ড, চায়না ও ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করেন কসমেটিকস সামগ্রী।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, আমাদের দেশের বেশির ভাগ পণ্য নকল আর গুণগত মান সম্পন্ন নয়। এ ব্যাপারে আমাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে আরও মনোযোগী হওয়া উচিত। তাই আমরা দিন-দিন ক্রেতার চাহিদা পূরণে বিদেশি পণ্যের বিকল্প ভাবতে পারি না। তিনি বলেন, সরকার এই বিষয়ে মনিটরিং করে পণ্যের গুণগত মান বাড়ালে দেশিয় পণ্যের চাহিদা বাড়বে- এতে কোনো সন্দেহ নেই। বর্তমানে তাঁর প্রতিষ্ঠানের বাৎসরিক মুনাফার কথা জানতে চাইলে হেসে উড়িয়ে দেন এই সফল ব্যবসায়ী। বলেন, ‘সততা আর কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে আমি আজকের এই অবস্থানে। মনে রাখতে হবে ব্যবসায়ের আসল পুঁজি হলো সততা আর পরিশ্রম।’

সফল এই উদ্যোক্তা যুক্ত আছেন বেশ কয়েকটি ব্যবসায়িক সংগঠনের সাথে। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম দোকান মালিক সমিতির সহ-সভাপতি, চিটাগাং চেম্বার অব কমার্সের সদস্য এবং বাংলাদেশ দোকান মালিক কেন্দ্রীয় সমিতির নির্বাহী সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়াও তিনি ভিআইপি টাওয়ার দোকান মালিক সমিতির তিনবার নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন। চট্টগ্রাম দোকান মালিক সমিতির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

তথ্যসূত্র: দ্যা ক্লিক ম্যাগাজিন ডটকম।

ট্যাগ :