এম.এইচ মুরাদঃ
করোনা আতংকের সাথে চট্টগ্রামে যোগ হয়েছে আরেক নতুন আতংক ‘গুজব’। ‘মাছ মাংস রাখা ফ্রিজ পুলিশ ভাংচুর করছে ও জরিমানা করছে নগদ অর্থ এমন এক গুজবে টালমাটাল চট্টগ্রাম জেলার অধিকাংশ উপজেলা। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলে এই গুজবটি এতোটাই ছড়িয়ে পড়েছে যার কারণে অধিকাংশ পরিবারের ফ্রিজে রাখা মাছ আর মাংস সরিয়ে ফেলা হয়েছে। আর এ গুজব নিয়ে গত ক’দিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্নজনে বিভিন্ন স্ট্যাস্টাস দিয়ে বিষয়টির সত্যতা সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। তবে বিষয়টি নিতান্তই গুজব বলে একাত্তর বাংলা নিউজকে নিশ্চিত করেছেন পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ বোরহান উদ্দিন।
পাঙ্গাস মাছ, তেলাপিয়া আর কোরবানির গরুর মাংস একত্রে যে সকল ফ্রিজে রাখা হয়েছে ঠিক সেই ফ্রিজগুলো পুলিশ বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভাংচুর করছে এবং জরিমানা করছে এমন গুজব সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। আর এতে করে ঘরের ফ্রিজে মাছ মাংস রয়েছে এমন পরিবারগুলোর মাঝে এক ধরনের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে পটিয়া ও তৎসংলগ্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলের এ জাতীয় গুজবের বিস্তৃতি ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
পাঙ্গাস মাছ, তেলাপিয়া আর কোরবানির গরুর মাংস একত্রে রাখলে পুলিশ ফ্রিজ চেক করে ফ্রিজ ভাংচুর করছে এমন বিষয়ের সত্যতা জানতে মোঃ মোরশেদুল হক আকবরী নামে এক যুবকসহ আরো অনেকে ম্যাসেঞ্জার ও মুঠোফোনের মাধ্যমে আমাদের প্রতিনিধির কাছে ঘটনাটির বাস্তবতা সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন।
পটিয়া থানার জিরি গ্রামের সওদাগর বাড়ির আবুল কাসেমের ছেলে মোঃ মনোয়ার বলেন, এমন গুজবের খবরে গতকাল বিকেলে তার মা তাদের ফ্রিজের মাছ মাংস পুকুরের পানিতে নিয়ে ভিজিয়ে রাখেন আর তাদের বাড়ির অন্য পরিবারগুলোর মাছ মাংস সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোর আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। পরে রাত পর্যন্ত পুলিশ বাড়ি না যাওয়ায় নিজেরাই লজ্জিত হয়ে পড়েন।
পটিয়ার মনশার টেক বাজারের ইলেকট্রিক ব্যবসায়ী জহির উদ্দিন মুঠোফোনে জানান, একবার শুনি মেহেরআটি গ্রামে পুলিশ ঢুকেছে, আরেকবার শুনি দৌলতপুর গ্রামে পুলিশ ঢুকেছে, আবার শুনি হুলাইন গ্রামে পুলিশ ঢুকেছে। এভাবেই এ গ্রাম থেকে সেই গ্রামে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত এর বাস্তব কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে পটিয়া থানা পুলিশকে ফোন দিলে তারা বলেন, যারা এ জাতীয় গুজব ছড়াচ্ছে তাদের কাউকে পেলে বেঁধে রেখে পুলিশকে খবর দিবেন।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ বোরহান উদ্দিন একাত্তর বাংলা নিউজকে জানান, এ রকম বিষয় নিয়ে পরিচিত অনেকেই সত্যতা জানতে চাইছে। বিষয়টি একেবারে গুজব ছাড়া আর কিছু নয়। আর এ জাতীয় গুজব জনসাধারণকে কানে না নিতে অনুরোধ জানিয়েছেন এই কর্মকর্তা।