সাতকানিয়া প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার ১৭ নং সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ফলাফল বাতিলের আবেদন জানিয়েছেন পরাজিত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. সেলিম উদ্দীন চৌধুরী। তার নির্বাচনি প্রতীক ছিলো মোটর সাইকেল।
নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিতভাবে আপত্তিপত্র দাখিল করেছেন তিনি। সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সাতকানিয়ার সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য পদের জন্য এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে একাত্তর বাংলা নিউজকে নির্বাচন বাতিলের আবেদনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন অভিযোগকারী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী মো. সেলিম উদ্দীন চৌধুরী।
মো. সেলিম উদ্দীন চৌধুরী আবেদনেপত্রে উল্লেখ করেন, ভোটের দিন সকাল ৮টায় ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের আমার এজেন্টরা ফোন করে জানায় নৌকা প্রার্থী জসিম উদ্দীন ও তার ভাই খোরশেদুল আলমসহ সমর্থকেরা অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে আমার এজেন্টদের বের করে দিয়েছে। পরে সকাল সাড়ে ৯টায় আমি ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রঙ্গিপাড়া রওজাতুল সুন্নাহ মাদ্রাসা কেন্দ্রে গেলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার ভাই সমর্থকদের নিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা করে। এ সময় আমি প্রাণ রক্ষার্থে সেখান থেকে চলে আসি।
পরবর্তীতে ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য গারাংগিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখি প্রায় সব ব্যালটে নৌকা প্রতীকে সিল মারা। তৎক্ষণাৎ আমি এ নিয়ে প্রতিবাদ করলে নৌকার প্রার্থীর ভাই খোরশেদসহ ১০-১২ জন মুখোশধারী আমার ওপর আবারও হামলা করলে আমি ঘটনাস্থলেই অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে আমার সমর্থকেরা এসে উদ্ধার করে সাতকানিয়া সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর খোঁজ নিয়ে জানতে পারি কেন্দ্রে দরজা বন্ধ করে জোরপূর্বক নৌকা প্রতীকে সীল মারা হয়েছে। এবং সেই ধারাবাহিকতায় ফলাফল ঘোষণা করার সময়ও পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে আমাকে পরাজিত দেখানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪ পর্যন্ত ভোটগ্রহণ শেষে সাতকানিয়ার ১৭ নং সোনাকানিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় সরকার দলীয় নৌকার প্রার্থী জসিম উদ্দিনকে।
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার নির্বাচনে ১২টি ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন। এরমধ্যে চারটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পায় নৌকার প্রার্থীরা। এছাড়া দুটিতে বিদ্রোহী ও দুটিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।
বেসরকারিভাবে নির্বাচিতরা হলেন— চরতী ইউনিয়নে মো. রুহুল্লাহ চৌধুরী (নৌকা), আমিলাইশে মোজাম্মেল হক চৌধুরী (বিদ্রোহী), নলুয়ায় মো. লেয়াকত আলী (নৌকা), কাঞ্চনায় রমজান আলী (নৌকা), খাগরিয়ায় মো. আকতার হোসেন (নৌকা), কালিয়াইশে হাফেজ আহমদ (নৌকা), ঢেমশায় মির্জা আসলাম সরওয়ার রিমন (স্বতন্ত্র), ধর্মপুরে নাছির উদ্দিন টিপু (নৌকা), বাজালিয়ায় তাপস কান্তি দত্ত (নৌকা), পশ্চিম ঢেমশায় রিদুয়ানুল ইসলাম সুমন (বিদ্রোহী), সোনাকানিয়ায় জসিম উদ্দিন (নৌকা) ও ছদাহায় মোরশেদুর রহমান চৌধুরী (স্বতন্ত্র)।
এর আগে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় মাদার্শা ইউনিয়নে আবু নঈম মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা), কেওঁচিয়া ইউনিয়নে ওসমান আলী (নৌকা), পুরানগড়ে আ ফ ম মাহবুবুল হক সিকদার (নৌকা) ও সাতকানিয়া সদরে মোহাম্মদ সেলিম (নৌকা) বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।