স্টাফ রিপোর্টারঃ
নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বে-টার্মিনাল স্বপ্ন নয়; এটি এখন বাস্তবতা। চট্টগ্রাম বন্দরের হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে নতুন হিসাবে ‘বে-টার্মিনাল’ নির্মাণ করা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টা-ই এখানে জাহাজ ভিড়তে পারবে।
মঙ্গলবার (৩১ মে) ঢাকায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে চট্টগ্রাম বন্দরের বে-টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের চূড়ান্ত নকশা প্রণয়ন সংক্রান্ত চুক্তিপত্র স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে তিনি একথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা আজ বিশ্বের অনেক দেশের কাছেই বিস্ময়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যা বলেন- তা করেন। আমরা এখন বলতে পারি বে-টার্মিনাল স্বপ্ন নয়; এটি এখন বাস্তবতা।
তিনি বলেন, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে অনেক বড় ক্যানভাস তৈরি হয়েছে। শিগগিরই ব্যবসা-বাণিজ্যের সুফল পাওয়া যাবে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেশ পরিচালনা করছেন। কিন্তু ’৭৫ পরবর্তি সরকারগুলো সে পথ অনুসরণ করেনি। তারা একই পথ অনুসরণ করে দেশ পরিচালনা করলে ২০২২ সালে সোনার বাংলা বিনির্মাণের জন্য সংগ্রাম করতে হতো না। অনেক আগেই সোনার বাংলা বিনির্মাণ হয়ে যেত।
চুক্তিপত্রে স্বাক্ষর করেন চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম শাহজাহান, যৌথ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান কুনওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড কন্সাল্টিং কোম্পানি লিমিটেডের প্রেসিডেন্ট হোয়াং কিউ ইয়াং। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কন্টেইনার টার্মিনাল শিগগিরই চালু হতে যাচ্ছে। বে-টার্মিনাল ও মাতারবাড়ী সমুদ্র বন্দরের সঙ্গে রেললাইন যুক্ত হবে; আমরা সে পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে ২০২১ সালে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছি। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশে উন্নীত হব।
তিনি বলেন, বে-টার্মিনাল চ্যানেলে কোন বাঁক নেই এবং যথোপযুক্ত নাব্যতা থাকায় সেখানে ১০-১২মিটার ড্রাফেটর সর্বোচ্চ ৬,০০০ টিইইউজ বহনক্ষমতা সম্পন্ন জাহাজ বার্থিং করানো সম্ভব হবে। বে-টার্মিনালে প্রাথমিকভাবে তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। যেখানে একটি ১২২৫ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার টার্মিনাল (কন্টেইনার টার্মিনাল-১), একটি ৮৩০ মিটার দীর্ঘ কন্টেইনার টার্মিনাল (কন্টেইনার টার্মিনাল-২) এবং একটি ১৫০০ মিটার দীর্ঘ মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মিত হবে। তিনটি টার্মিনালের মোট দৈর্ঘ্য ৩.৫৫ কিলোমিটার।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, মাল্টিপারপাস টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এ টার্মিনালে জেটি থাকবে ছয়টি। বে-টার্মিনালে মোট ১৩টি জেটি থাকবে। বে-টার্মিনালে মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটি সুবিধা থাকবে।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরের জেটি সমূহে সর্বোচ্চ ৯.৫ মিটার ড্রাফটের এবং ১৯০ মিটার দৈর্ঘ্যরে জাহাজ ভিড়তে পারে। চট্টগ্রাম বন্দর জোয়ারের ওপর নির্ভর হওয়ায় দিনে দুবার নেভিগেশন হয়ে থাকে। বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার পশ্চিমে উত্তর হালিশহরে বে-টার্মিনালের অবস্থান। বে-টার্মিনাল থেকে বর্হিনোঙরের দূরত্ব মাত্র এক কিলোমিটার। চ্যানেলের প্রশস্থতা ৮০০-১২০০ মিটার। বে-টার্মিনালকে বৈরী আবহাওয়া এবং সাগরের বড় ঢেউ থেকে রক্ষা করতে একটি পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ব্রেক ওয়াটার নির্মাণ করা হবে।