স্টাফ রিপোর্টারঃ
দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রামে অবস্থানের কারণে প্রতিনিয়ত বহু বিদেশি জাহাজ আসা-যাওয়া করে চট্টগ্রাম বন্দরে। এসব জাহাজে থাকা বিদেশি নাবিকদের আবাসনের জন্য একটি বিশ্বমানের সিম্যান্স হোস্টেলের চাহিদা ছিল দীর্ঘদিনের। অবশেষে ঘুচে যাচ্ছে সেই দীর্ঘদিনের চাহিদা। এবার চট্টগ্রামে তৈরি হবে ৫৯ কোটি ১৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বিশ্বমানের সিম্যান্স হোস্টেল কমপ্লেক্স।
গতকাল (মঙ্গলবার) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) এ প্রকল্পটির অনুমোদন দেয়। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে সরকারি অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তর। যা চলতি বছরের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে ১৯৫ জন বিভিন্ন পদমর্যাদার দেশি-বিদেশি নাবিকের সাময়িক অবস্থানের একটি সুন্দর ব্যবস্থা তৈরি হবে। যেখানে গড়ে প্রতিদিন ১২০ জন বিভিন্ন শ্রেণির নাবিকের উন্নতমানের সাময়িক আবাসন, চিত্তবিনোদন, লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, সাইবার ক্যাফে, জিমনেশিয়াম, এমিউজমেন্ট কর্নার ও অন্যান্য কল্যাণ সুবিধা পাবে। এছাড়া গড়ে প্রতিদিন ৩০ জন নাবিককে মেডিকেল সুবিধার ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে এই কমপ্লেক্সে।
প্রকল্পের তথ্য অনুযায়ী সিম্যান্স হোস্টেলটির মূল ব্যয়ই যাবে আবাসিক ভবন নির্মাণে। এতে আবাসিক ভবনটি নির্মাণে ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ১ হাজার ঘনমিটারের ভূমি উন্নয়ন ও মাস্টার ড্রেন নির্মাণে ব্যয় হবে ৯ লাখ টাকা। বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিতে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। দেড় কোটি টাকায় কেনা হবে আসবাবপত্র। এছাড়া প্রস্তাবিত ওই ভবনে বানানো হবে ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ের একটি জিমনেশিয়াম।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নকারী সংস্থা নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তর তাদের প্রকল্প প্রস্তাবে বলছে, বাংলাদেশ মার্চেন্ট শিপিং অধ্যাদেশ-১৯৮৩-এর ১২ ধারার বিধান বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তারা এ প্রকল্পটি হাতে নিয়েছে। এর মাধ্যমে মেরিটাইম লেবার কনভেনশনের রেগুলেশন অনুযায়ী নাবিকদের কল্যাণ সুবিধা নিশ্চিতকরণ; আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর সুপারিশ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।
প্রকল্পটি হাতে নেওয়ার যৌক্তিকতায় বলা হয়েছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আগত বিদেশি নাবিকদের কল্যাণ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে ইন্টারন্যাশনাল ট্রান্সপোর্ট ফেডারেশন ট্রাস্টের সহায়তায় সিম্যান্স হোস্টেলের একটি এফ টাইপ কোয়ার্টারকে ইন্টারন্যাশনাল সিফ্যারস ড্রপ ইন সেন্টারে রূপান্তরিত করা হয়।
কিন্তু বর্তমানে ইন্টারন্যাশনাল সিফ্যারস ড্রপ ইন সেন্টারের এফ টাইপ কোয়ার্টারটিও অত্যন্ত জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। নাবিক হোস্টেলের ৭ দশমিক ২৭ একর জায়গা নাবিক ও প্রবাসী শ্রমিক কল্যাণ পরিদপ্তরের হলেও মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ওই স্থানে ন্যাশনাল মেরিটাইম ইনস্টিটিউটের বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি হয়েছে। নতুন ইন্টারন্যাশনাল সিফ্যারস ড্রপ ইন সেন্টারের সমন্বয়ে চারতলা বিশিষ্ট সিম্যান্স কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এ প্রেক্ষাপটে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে।