স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিগত চার দশক আগে চট্টগ্রাম নগরীতে ২০০ পাহাড় ছিল। যার ৬০ শতাংশ ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। সোমবার (৩০ মে) বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আয়োজনে চট্টগ্রাম মহানগরের পাহাড় রক্ষায় করণীয় শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ তথ্য উঠে এসেছে। নগরীর জিইসি মোড়ের একটি রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বক্তারা বলেন, চট্টগ্রামে বর্তমানে টিকে থাকা পাহাড় রক্ষায় জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, সিডিএ সিটি কর্পোরেশন এক হয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করার বিকল্প নেই। ২০০৭ সালে পাহাড় ধ্বসে ১২৯ জন মারা যাওয়ার পর শক্তিশালী পাহাড় রক্ষা কমিটির প্রদত্ত সুপারিশ বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। পাহাড় রক্ষায় বেলার দায়ের করা মামলায় ২০১২ সালে সুনির্দিষ্ট রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে পাহাড় কর্তনকারীদের বিরুদ্ধে পরিবেশ আইনে ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি পাহাড়ে নির্মিত স্থাপনাসমূহ গুড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশনা ছিল। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন হাইকোর্টের সেই আদেশ বাস্তবায়ন করছে না।
বেলার নেটওয়ার্ক মেম্বার ও সিনিয়র সাংবাদিক আলীউর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. খালেদ মেসবাহুজ্জামান। প্রবন্ধে তিনি বলেন, পাহাড় হচ্ছে পৃথিবীতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় খুঁটির মতো। যা প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিহত করার পাশাপাশি মানুষ এবং জীব বৈচিত্র্যের সুপেয় পানির আধার। ক্রমাগত পাহাড় ধ্বংস হয়ে গেলে চট্টগ্রাম মহানগরী পরভূমিতে পরিণত হবে। ক্রমবর্ধমান ইট কংক্রিটের সৃষ্ট উত্তাপ পরিশোধন করার বিকল্প না থাকায় নগরীর তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাবে। পাহাড় কেটে আবাসিক বা বাণিজ্যিক ভবন করে মানুষ যতটুকু আর্থিক লাভবান হচ্ছে বাস্তবে প্রাকৃতিক ক্ষতির পরিমাণ অনেক বেশি।
সেমিনারে অন্যান্য মধ্যে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শফিক হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক জামিল মোহাম্মদ খান, চসিকের সহকারী নগর পরিকল্পনাবিদ মোহাম্মদ নুর উদ্দিন, ফায়ার সার্ভিস চট্টগ্রামের ডেপুটি অ্যাসিসটেন্ট ডাইরেক্টর নিউটন দাশ প্রমূখ।