স্টাফ রিপোর্টারঃ
সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে স্মরণকালের ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকান্ডের ঘটনাকে কেন্দ্র করে একই প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন হাটহাজারী থানার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১নং দক্ষিন পাহাড়তলি এলাকাবাসীদের মধ্যেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। বিএম ডিপোতে বিষ্ফোরণের ঘটনায় যে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডকে দায়ী করা হচ্ছে সেই হাইড্রোজেন পার অক্সাইড তৈরীর কারখানা রয়েছে ১নং দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ঠাণ্ডাছড়ি রিসোর্ট এলাকায়।
বিএম কন্টেইনারটি স্মার্ট গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। একই গ্রুপের মালকাধীন আল-রাজী ক্যামিকেল কমপ্লেক্স লিঃ নামক এই কারখানায় সীতাকুণ্ডের চেয়েও বড় ঘটনা ঘটতে পারে এমন আশংকা এলাকাসীর।
তাই সরকারি তদন্তের আগ পর্যন্ত আল-রাজী ক্যামিকেল কমপ্লেক্সে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড উৎপাদন বন্ধ রাখার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সোমবার বিকালে জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সদস্য মঞ্জুুরুল আলম চৌধুরী ও চসিক ১নং দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার জাফর আলম সহ স্থানীয় এলাকাবাসীরা উপস্থিত হন আল রাজী ক্যামিকেল কমপ্লেক্সে। এসময় তারা কমপ্লেক্সের জিএম ইব্রাহীম খলিল ও ম্যানেজার এডমিন মোবিন হোসেন খানের সাথে কথা বলেন।
আওয়ামীলীগ নেতা মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, সীতাকুেণ্ড বিএম কন্টেইনার ডিপোতে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে সেটার জন্য দায়ী হাইড্রোজেন পার অক্সাইড আমাদের হাটহাজারীতেই উৎপাদন হচ্ছে। সে ঘটনার পর আমরা হাটহাজারীবাসী তথা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। এই কারখানায় যদি সরকারি নীতিমালা মেনে যথাযথ নিরাপত্তার সাথে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড তৈরী করা হয় তাহলে আমাদের আপত্তি নেই। তবে যতদিন পর্যন্ত সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোর ঘটনায় তদন্ত শেষ না হবে ততদিন পর্যন্ত এই কারখানায় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড উৎপাদন ও ডেলিভারি বন্ধ রাখার জন্য আমরা কারখানা কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধ করেছি। তাছাড়া এটাকে কেন্দ্র করে অন্য কোনো অপশক্তি যাতে কাজ করতে না পারে তার জন্য এলাকার ছাত্র যুবক কারখানা কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছে বলে জানান তিনি।
আল রাজী ক্যামিকেল কমপ্লেক্সের ম্যানেজার এডমিন মোবিন হোসেন খান জানান, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীর দাবী আমরা মেনে নিয়েছি। সরকারী তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই কারখানা থেকে হাইড্রোজেন পার অক্সাইডের কোন চালান বাহিরে যাবেনা। ক্যামিকেল কমপ্লেক্সের জিএম ইব্রাহীম খলিলের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনিও একই কথা নিশ্চিত করেছেন।
জানা যায়, গত ২০১৯ সালে হাটহাজারী থানাধীন ১নং দক্ষিন পাহাড়তলী ওয়ার্ডের ঠান্ডাছড়ি এলাকায় পাহাড়ের পাদদেশে আল রাজী ক্যামিকেল কমপ্লেক্সটি তৈরী করা হয়। সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপো ও হাটহাজারীর আল রাজী ক্যামিকেল কমপ্লেক্সের মালিক একই শিল্পগ্রুপ। প্রায় তিন একর জায়গা জুড়ে অবস্থিত এই কারখানায় হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ছাড়াও পিভিসি পাইপ, পিভিসি ডোর এসব সামগ্রী তৈরী করা হয়। এই কারখানায় উৎপাদিত হাইড্রোজেন পার অক্সাইড রপ্তানির জন্য সীতাকুণ্ডে বিএম ডিপোতে রাখা হয়েছিল। গত শনিবার রাতে সেসব হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ভর্তি কন্টেইনারে আগুন ধরে বিস্ফোরণে ৪১ জনের প্রাণহানী ও দুইশ জনের মত আহত ও পঙ্গু হয়েছে।