কৌশিক দাশ:
বান্দরবানে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন টানেল। বান্দরবানের বর্তমান বাসস্টেশন হয়ে প্রস্তাবিত কেন্দ্রীয় টার্মিনাল হাফেজঘোনায় যাওয়ার পথে পাহাড়ি সড়কে দীর্ঘ পাঁচশ ফুট দীর্ঘ আধুনিক এই টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে।
টানেলটি বর্তমান বাস স্টেশনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় টার্মিনাল সড়ককে সংযোগ করবে, টানেলের ভেতর দিয়ে সব ধরনের গাড়ি চলাচল করবে। জনসাধারণের চলাচলের জন্য ফুটপাতেরও ব্যবস্থা রয়েছে। এটি চালু হলে পর্যটন শহর বান্দরবানের সৌন্দর্য আরও একধাপ বেড়ে যাবে বলে প্রত্যাশা স্থানীয়দের।
সূত্রে জানা যায়, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই টানেলটির নির্মাণ কাজ চলছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে এটি উদ্বোধন করা হবে। বর্তমান বান্দরবান সদরের কেন্দ্রীয় বাস স্টেশনটি ছোট হওয়ায় দ্রুত সময়ে নবনির্মিত কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে প্রবেশের জন্য পাহাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এই টানেলের কাজ শুরু করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। টানেলটি চালু হলে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ কমবে এবং যানজট মুক্ত একটি বান্দরবান শহর হবে বলে আশা কর্তৃপক্ষের।
টানেলটির নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মের্সাস এম এম টেড্রার্সের স্বত্বাধিকারী রাজু বড়ুয়া বলেন, আমরা কাজের কার্যাদেশ পাওয়ার পর থেকেই টানেল নির্মাণ কাজ করে যাচ্ছি। টানেলটির ভিতরে আধুনিক মানের ২৪ ফুট চওড়া সড়ক ও তিন ফুট চওড়া ফুটপাত নির্মাণ কাজ চলছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড- এর এই কাজটি সমাপ্ত হলে বর্তমান বাস স্টেশনে যানজট কমে আসবে এবং কাটা পাহাড় এলাকাটিতে পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ বন্ধের আশঙ্কা অনেকটাই কমে যাবে।
মেসার্স এম এম টেড্রার্সের স্বত্বাধিকারী রাজু বড়ুয়া আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির আন্তরিকতার কারণে পার্বত্য এলাকায় বিভিন্ন উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে এবং এই টানেলটি চালু হলে পার্বত্য এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো একধাপ এগিয়ে যাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল আজিজ বলেন, এই টানেলটি বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য একটি মাইলফলক। এটি চালু হলে বান্দরবানের যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই সহজ হবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের যে কোনো এলাকার যাত্রীরা সহজেই বান্দরবানের প্রবেশমুখে এসে সদর এলাকায় না ঢুকেই রুমা, থানচি, চিম্বুকসহ বিভিন্ন এলাকায় ভ্রমণ করে আবার সহজেই ফেরত যেতে পারবেন।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত বলেন, দুই দফায় মোট ১০ কোটি ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫০০ ফুট দীর্ঘ এই টানেলটি নির্মাণ করার কাজ চলমান রয়েছে। প্রথম দফায় ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তখন ৩০০ ফুট দীর্ঘ টানেল হওয়ার কথা ছিল। পরে প্রকল্প সংশোধন করে টানেলটি আরও ২০০ ফুট বাড়িয়ে মোট ৫০০ ফুট দীর্ঘ করে আরও ৫ কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড বান্দরবান ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বিন মোহাম্মদ ইয়াসির আরাফাত জানান, এই টানেল পার্বত্য জেলার পাহাড়ের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি পর্যটকদের বিনোদনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়াবে।