স্টাফ রিপোর্টারঃ
দুইমাস ধরে নালার পানি চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকায়। এতে করে চান্দগাঁও আবাসিক, চন্দ্রিমা আবাসিক, খতিব বাড়ি, শরাফত উল্লাহ পেট্রোল পাম্প, সাধুর পাড়াসহ আশপাশ এলাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন অন্তত লাখো মানুষ। আর সিডিএ চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় আছে আরও অন্তত ত্রিশ হাজার মানুষ।
জানা যায়, জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজের অংশ হিসেবে পুরাতন চান্দগাঁও এলাকায় প্রধান খাল-নালার পানি চলাচল বাধ দিয়ে বন্ধ করে রাখা হয়েছে। পানি চলাচলে বিকল্প পথ না রাখায় ছোট বড় সব নালার পানি জমে রাস্তার ওপর, ঘরের চলাচলের পথে উপচে পড়ছে। এসব পানি দীর্ঘ সময় ধরে জমে থাকার ফলে প্রচণ্ড দুর্গন্ধ দেখা দিয়েছে। বেড়েছে মশার বিস্তার, ছড়াচ্ছে নানা রোগবালাই। জমে থাকা এসব ময়লা পানি দিনদিন বাড়ছে, ইতিমধ্যে প্রায় বাড়িঘরেও ঢুকে পড়েছে নালার পানি।
মাত্রাতিরিক্ত হারে মশার উপদ্রবে অস্থির এখানকার মানুষ। নতুন করে দেখা দিয়েছে ডেঙ্গুর প্রকোপ। নালার অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, মশার স্প্রেতেও কাজ হচ্ছে না। এ কারণে অনেকে নিজের বাসায় তালা লাগিয়ে অন্যত্র উঠছেন। অধিকাংশ বাড়ির ভাড়াটিয়া চলে যাচ্ছেন৷ এতে করে খালি পড়ে আছে বিভিন্ন বাড়ির ফ্ল্যাট।
সরেজমিনে চান্দগাঁও আবাসিক বি-ব্লকে গিয়ে দেখা যায় ভয়াবহ চিত্র। ময়লা ও দুর্গন্ধযুক্ত পানি অধিকাংশ ঘরের নীচ তলায় ঢুকে পড়েছে। খেলার মাঠেও, স্কুলের ভেতরও একই অবস্থা। সরকারি রাবার অফিসের কার্যালয় ও তাদের স্টাফ কোয়ার্টার তলিয়ে গেছে ময়লা পানিতে। নালার এসব পানি কালো আকার ধারণ করেছে। পানির উপরের স্তর জুড়েই মশা আর মশা।
এ আবাসিক এলাকাটি থেকে মাইল খানেকের মধ্যেই সিটি মেয়র রেজাউল করিমের বাসা। তাঁর বাসার কাছেই দুই মাস ধরে এমন অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এখানকার বাসিন্দারা। তবে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ যৌথভাবে করছে সিডিএ ও সেনাবাহিনি।
জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলছে বলে অভিযোগ এলাকার বাসিন্দাদের। তারা বলছেন, পানি চলাচলে বিকল্প ব্যবস্থা করার সুযোগ ছিল। প্রকল্পের ইঞ্জিনিয়ার ও কন্ট্রাক্টর খরচ কমাতে গিয়ে লাখো মানুষকে দুর্ভোগে ফেলে দিলেন। বারবার দুর্ভোগের কথা জানানো হলেও, আমলে নিচ্ছে না কেউ।
এ বিষয়ে প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার নাছির উদ্দীন বলেন, ‘জমে থাকা পানি চলাচলের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। আমাদের একটা দেয়ালের কাজ বাকি আছে। কাজটা শেষ হলেই আমরা পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিব ২/১ দিনের মধ্যে। আর এই প্রকল্পের কাজ শেষ হতে আরো ৬ মাস লাগবে। সামনে বর্ষা মৌসুম, আলাদা খাল খনন করে দেয়া হবে যাতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি না হয়।’