মোঃ সেলিম (সাতকানিয়া প্রতিনিধি):
টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ও পাহাড়ি ঢলে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় বিভিন্ন এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বেশকিছু স্থানে মৎস্য খামার ডুবে মাছ ভেসে গেছে। তলিয়ে গেছে ফসলি জমি।
উপজেলার আমিলাইষ ও চরতী ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে পানিবন্দি এলাকার মানুষের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
গত বুধবার সন্ধ্যা থেকে সাঙ্গু নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাজালিয়া মিরপাড়ায় নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধ বাঁধের উপর দিয়ে পানি ঢুকে পড়ছে বিভিন্ন এলাকায়। টানা বর্ষণের কারণে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। সড়কের উপর দিয়ে বিভিন্ন স্থানে পানি চলাচলে সড়ক ভেঙ্গে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাজালিয়া বড়দুয়ারা, মাহালিয়া, কেঁওচিয়া, তেমুহনি, বালম্মার বাড়ি, জনার কেঁওচিয়ার পশ্চিম অংশে, দক্ষিণ ঢেমশা মরিচ্যা পাড়া, উত্তর ঢেমশা, এওচিয়ার ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ড এবং নলুয়া বোর্ড অফিস এলাকাসহ প্লাবিত হয়েছে।
পানিবন্দি এলাকার মানুষ খাবার নিয়ে তীব্র সঙ্কটে পড়েছে। স্যানিটেশন ব্যবস্থা দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। মৌসুমী মৎস্য শিকারিরা হাত জাল নিয়ে দলে দলে মাছ ধরছেন। জনার কেঁওচিয়ায় নির্মিতব্য রেললাইনের উপর সকাল থেকে অনেকে হাত জাল দিয়ে মাছ ধরতে দেখা গেছে।
বাজালিয়ার বড়দুয়ারার বাসিন্দা মো. জামাল উদ্দিন বলেন, ভারি বৃষ্টির কারণে এলাকায় পানি বাড়ছে। পানিবন্দি মানুষ উচুঁ এলাকায় আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিচ্ছে। আনেকে গরু-ছাগল ও হাঁস মুরগী অন্যত্রে সরিয়ে নিয়েছে। পানিবন্দি বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কেরানীহাট বান্দরবান সড়কের খাটাখালী ব্রীজের পূর্বে ১শ ফুট সড়ক পানিতে তলিয়ে গেছে।
পানিবন্দি এলাকায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি বেসরকারিভাবে কোন ধরনের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করতে দেখা যায়নি।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, আজ বৃহস্পতিবার বিকালে প্লাবিত বেশ কিছু এলাকা সরেজমিন ঘুরে এসেছি। তবে সবচেয়ে বাজালিয়া ও কেঁওচিয়াতে বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এসব ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জন্য ৩১ মে. টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে শীঘ্রই চালগুলো বিতরণ করা হবে। বন্যায় ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে আরো ত্রাণ সামগ্রী আসলে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় বিতরণ করা হবে।