স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় জায়গা বরাদ্দে অনিয়মের তদন্ত কমিটি গঠন বিষয়ে নিজের অভিমত ব্যক্ত করেছেন সাবেক চসিক প্রশাসক এবং চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন। সোমবার (২৬ এপ্রিল ২০২১ইং) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ মত ব্যক্ত করেন। এ সময় তিনি বলেন, গতকাল এবং আজ গণমাধ্যমে প্রচারিত একটি সংবাদ আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। প্রশাসক থাকাকালীন সময়ে চসিকের জায়গা বরাদ্দে কোন অনিয়ম হয়েছে কি-না তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী। মেয়রের এ উদ্যোগকে আমি সর্বান্তকরণে স্বাগত জানাই। চসিকের সে এখতিয়ার রয়েছে। প্রত্যেক কিছুর মধ্যে একটা স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা থাকা অত্যাবশ্যক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে ১৮০ দিনের জন্য চসিক প্রশাসকের দায়িত্ব দিয়েছেন। আমি এসময়ে চট্টগ্রাম শহরকে একটি জঞ্জালমুক্ত, সুন্দর, পরিচ্ছন্ন এবং মানবিক শহর হিসেবে গড়ে তুলতে নিজের জীবনের লব্দকৃত জ্ঞাণকে কাজে লাগাই। শ্রম ও মেধার সমন্বয়কে কাজে লাগিয়ে ১৮০ দিনের প্রতিটি সেকেন্ড, মিনিটকে নগরবাসীর জন্য উৎসর্গ করি। মানসম্পন্ন নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য দিনরাত কাজ করি। কতটুকু সফল হয়েছি তা বিচারের ভার নগরবাসীর হাতেই। করপোরেশনকে আর্থিকভাবে সাবলম্বী করতে বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে থাকি।
সুজন আরো বলেন, দায়িত্বপালনকালে আমি জানতে পারি করপোরেশনের বিভিন্ন জায়গা-সম্পত্তি বিভিন্নজনে লুটেপুটে খাচ্ছে। অনেক জায়গার কোনো হদিস ছিল না, করপোরেশনের রেকর্ডপত্রেও ছিল না। আমি খুঁজে বের করে জায়গাগুলোকে করপোরেশনের সব নিয়মনীতি মেনে অস্থায়ী ভিত্তিতে স্বল্প মেয়াদের জন্য ইজারা দিয়েছি। করপোরেশনের বেহাত জায়গা উদ্ধার এবং অ-রাজস্ব খাতের জায়গাকে রাজস্ব খাতে এনে আয় বৃদ্ধি করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। আমি সম্পূর্ণ দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই আমার সময়কালীন চসিকের জায়গা বরাদ্দের নিয়ম-নীতির কোনো ব্যত্যয় হয়নি। বিভিন্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যারা সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছে, তারাই বরাদ্দ পেয়েছে। যা করেছি করপোরেশনের আয়ের খাতকে মজবুত করার জন্যই করেছি। এরপরও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে যদি করপোরেশন মনে করে, কোনোটাতে নিয়মের ব্যত্যয় হয়েছে, তাহলে করপোরেশন চাইলে তা বাতিল করতে পারে। দুঃখ প্রকাশ করে তিনি বলেন, দেখা যাচ্ছে যে আমার প্রতি চট্টগ্রামবাসীর নিখাদ ভালোবাসায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অনলাইন পত্রিকা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে। এর আগেও সেই অনলাইন পত্রিকাটি বিভিন্নভাবে আমাদের দলের কেন্দ্রীয় এবং স্থানীয় নেতাদের চরিত্র হনন করে জনগনের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করার অপপ্রয়াস চালিয়েছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক। সে পত্রিকার সম্পাদক একজন সাবেক ছাত্রশিবির নেতা, যার মা’সহ পুরো পরিবার জামায়াতের রাজনীতির সাথে জড়িত। এর আগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিপ্লব উদ্যানে জনগনের হাটাচলার জায়গায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকরন এবং অবৈধভাবে বরাদ্দের বেশি জায়গা দখলের বিষয়ে অভিযোগপ্রাপ্ত হয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে গড়া স্থাপনার উচ্ছেদ কার্যক্রম যখন সারা বাংলাদেশে প্রশংসিত হয়েছে তখনও সেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অনলাইন পত্রিকাটি আমার বিরুদ্ধে চরিত্র হননে মাঠে নেমেছিল। যদিও তাদের সে সংবাদ জনগনের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
সুজন বলেন, চট্টগ্রামের কিংবদন্তি জননেতা প্রাক্তন সফল মেয়র এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকেও দায়িত্বকালীন সময়ের করপোরেশনের বিভিন্ন জায়গা জমি বরাদ্দ নিয়ে নানাভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে ওয়ান ইলেভেনের সরকার। সেসময় তার বিরুদ্ধে নানারকম কুৎসা রটানোসহ জেল জুলুমের মুখোমুখি পর্যন্ত করা হয়েছিল তাকে। কিন্তু চট্টলাবাসী তাদের আষাঢ়ে গল্পকে বিশ্বাস না করে এ.বি.এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে তাদের হৃদয়ের মনিকোঠায় স্থান দিয়েছিলো। আমিও মহিউদ্দিন চৌধুরীর কাছাকাছি থেকে তার দৃঢ় আত্নবিশ্বাসকে হৃদয়ে ধারণ করে জানাতে চাই কোন ধরনের অপপ্রচার কিংবা মিথ্যা তথ্য প্রচার করে আমাকে চট্টগ্রামবাসীর কাছ থেকে কেউ দূরে রাখতে পারবে না। শুধুমাত্র একটি দৃষ্টি প্রতিবন্ধী অনলাইন পত্রিকার করা সংবাদের উপর ভিত্তি করে যদি কোন তদন্ত করা হয় তাহলে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক।