মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, রোববার, ৫ মে ২০২৪ ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে টানেল যুগের যাত্রা শুরু আজ


প্রকাশের সময় :২৮ অক্টোবর, ২০২৩ ২:০৭ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

কর্ণফুলীর বুকে ঢেউয়ে পাল তুলে বরাবরের মতো ছুটবে জাহাজ- নৌকা। আর নদীর তলদেশ চিড়ে নির্মিত টানেলের ভেতর দিয়ে সাঁই সাঁই করে ছুটবে যানবাহন। এমনই এক যুগসন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ। একটি মাত্র রাতের অপেক্ষা। রাত পোহালেই শুরু হচ্ছে সেই টানেল যুগের যাত্রা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকালেই শুরু হবে সেই যাত্রা। সে কারণে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করতে অধীর আগ্রহে রয়েছেন চট্টগ্রামের লাখো মানুষ। যারা এই যাত্রার সাক্ষী হতে প্রস্তুত। এখন শুধু প্রধানমন্ত্রীর আসার অপেক্ষা। যার ভাষণ শুনতে মরিয়া পেশাজীবি সাধারণ মানুষ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল দিয়ে কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ তীরে গিয়ে আনোয়ারা কেইপিজেড মাঠে জনসভায় ভাষণ দিবেন। চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ এই জনসভার আয়োজন করে। তবে এই জনসভাসহ টানেল উদ্বোধনের সার্বিক আয়োজনে নিরব ভুমিকা রাখেন ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।

তিনি বলেন, টানেল উদ্বোধনকে ঘিরে কর্ণফুলীর দুই প্রান্তে বর্ণাঢ্য আয়োজন করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে শোভাযাত্রা বের করেছে উৎসবমুখর মানুষ। সাগরতীরের আউটার রিং রোড ধরে পতেঙ্গায় টানেলের প্রবেশপথ পর্যন্ত সেজেছে নতুন সাজে। টানেল ও আউটার রিং রোডের সংযোগস্থল গোলচত্বর লাল-সবুজের পতাকায় ঢেকে দেওয়া হয়েছে।

কাঠের স্থাপনায় লেখা হয়েছে জয় বাংলা। গোলচত্বরসহ পুরো রিং রোডের বিভাজক, গাছপালা রঙিন করে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ করেছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন। গোলচত্বর পার হওয়ার পর টানেলে ঢোকার দুটি সড়ক মিলবে। একটি অতিরিক্ত উচ্চতার যানবাহন যাওয়ার পথ। আরেকটি সাধারণ যানবাহন যাওয়ার পথ। প্রবেশমুখ থেকেই সংরক্ষিত এলাকা শুরু। যার নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে নৌবাহিনী।

নৌবাহিনীর নিরাপত্তা তল্লাশি শেষে যানবাহন প্রবেশ করবে ওজন স্কেলে। সেখানে বসানো হয়েছে স্ক্যানার। এরপরই টানেলের মূল প্রবেশপথ। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধন উপলক্ষে টানেলের প্রবেশমুখ থেকে অন্তত তিন কিলোমিটার এলাকায় সমুদ্র সৈকতের সব দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। লাইটার জাহাজ ও মাদার ভ্যাসেলকে শুক্রবার সকালের মধ্যে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সমুদ্র সৈকতে দর্শনার্থী সমাগম শিথিল করা হয়েছে।

পতেঙ্গা-আনোয়ারা উভয়দিকে টানেলের প্রবেশমুখে উদ্বোধন মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। কেইপিজেড কলোনি মাঠে তৈরি করা হয়েছে বিশাল নৌকা মঞ্চ। ¯েপশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ), পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন আছে সবখানে।

যান চলাচল শুরু ২৯ অক্টোবর থেকে:
২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের পরদিন ভোর ৬টা থেকে টানেল যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক হারুন উর রশিদ।

তিনি বলেন, মনে রাখত হবে, এটা কোনো সাধারণ ব্রিজ বা কালভার্ট নয়, এটা টানেল। থ্রি হুইলার, মোটরসাইকেল কোনোভাবেই টানেলে প্রবেশ করতে পারবে না। আমাদের নিয়ন্ত্রণ কক্ষ থাকবে। সেখান থেকে সবকিছু মনিটর হবে। এফ এম রেডিওতে যেভাবে ঘোষণা দেওয়া হয় বা তথ্য জানানো হয়, এখানেও সার্বক্ষণিকভাবে সেটা থাকবে। বিভিন্ন ধরনের কমেন্ট্রি দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলের টোল হার চুড়ান্ত করা হয়েছে। যা ২৯ অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।

বন্ধ থাকবে যেসব সড়ক :
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল উদ্বোধনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সরকারের উচ্চপর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রামে। যাদের সার্বিক নিরাপত্তা ও সড়ক পথে নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করার জন্য চট্টগ্রামের কিছু সড়কপথ সর্বসাধারণের চলাচলের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)।

সিএমপির এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত কেউ সি-বিচ এলাকায় প্রবেশ করতে পারবে না। একইসঙ্গে শনিবার (২৮ অক্টোবর) ভোর ৫টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সিমেন্ট ক্রসিং-কাঠগড় হয়ে কোন যানবাহন সি-বিচ বা এয়ারপোর্ট এলাকায় যেতে পারবে না।

এয়ারপোর্টগামী সকলকে সিমেন্ট ক্রসিং থেকে বাম দিকে মোড় নিয়ে বোটক্লাব হয়ে যাতায়াত করতে বলা হয়েছে। বিমান বন্দর মোড় ক্রস করে বাটারফ্লাই পার্ক হয়ে টানেল ও সি-বিচ এলাকায় যাওয়া যাবে না। ফৌজদারহাট আউটার লিংক রোডে যান চলাচল স¤পূর্ণ বন্ধ থাকবে। সর্বসাধারণের সুবিধার্থে বন্দরগামী যানবাহন আউটার লিংক রোড পরিহার করে ‘সিটি গেইট, একে খান-সাগরিকা রোড, ক্রসিং-বড়পুল-নিমতলা হয়ে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

টানেলের যাত্রা শুরু যেখান থেকে:
নগরীর পতেঙ্গায় নেভাল একাডেমির পাশ থেকে ১৮-৩১ মিটার গভীরতায় নেমে যাওয়া এই টানেল কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ-পূর্বে আনোয়ারায় সিইউএফএল ও কাফকোর মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে স্থলপথে বের হয়েছে। ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার টানেলে দুটি টিউব দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে।

টানেলের উত্তরে নগরীর দিকে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কাটগড় সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক এবং পতেঙ্গা বিচ সড়ক দিয়ে টানেলে প্রবেশ করা যাবে। টানেল দিয়ে মোটরসাইকেল ও তিন চাকার গাড়ি চলতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্মাণকারী সংস্থা বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। এই টানেল দিয়ে যানবাহন ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে চলবে।

প্রকল্পের বিবরণ অনুযায়ী, টানেলটি প্রস্তাবিত এশিয়ান হাইওয়েকে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সঙ্গে সংযুক্ত করবে এবং চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার কমিয়ে দেবে।

ট্যাগ :