মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দখল ভরাটে কমে গেছে কর্ণফুলীর গতিপ্রবাহ, ঝুঁকিতে শাহ আমানত সেতু!


প্রকাশের সময় :২২ মে, ২০২২ ১১:৫৮ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

চট্টগ্রামের নাভী খ্যাত কর্ণফুলী নদী। এই নদীর তীর ঘেঁষেই গড়ে উঠেছে চট্টগ্রাম শহর। বিশেষ করে দেশের সবচেয়ে বড় সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম বন্দর এই নদীর মোহনায় অবস্থিত। কিন্তু সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে এই গুরুত্বপূর্ণ নদীটির গত ২২ বছরে বিলীন হয়েছে গেছে প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা। সেই সঙ্গে উজানের ঢলে একপাশে গভীরতা বাড়ায় হুমকির মুখে পড়েছে নদীর উপর অবস্থিত শাহ আমানত সেতু। প্রতিনিয়ত দখল ভরাটের ফলে অনেকটা কমে গেছে নদীর গতিপ্রবাহ।

রোববার (২২ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশের গভীরতা ও দখল জরিপ ২০২২’ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ‘চট্টগ্রাম নদী ও খাল রক্ষা আন্দোলন’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০০ সালে কর্ণফুলী নদীর প্রস্থ ছিল ৯৩০.৩১ মিটার। কিন্তু বর্তমানে এ নদীর প্রস্থ দাঁড়িয়েছে ৪১০ মিটার। গত ২২ বছরে বিলীন হয়ে গেছে নদীর প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা। এছাড়া একপাশে চর ও অন্যপাশে ক্রমশ মাটি সরে যাওয়ায় শাহ আমানত ব্রিজের দক্ষিণ পাশ ধসে যেতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কর্ণফুলী নদীর তলদেশের বাস্তব পরিস্থিতি ও দখল নিয়ে জরিপ পরিচালনা করা হয় চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।

এ জরিপ কাজ পরিচালনা করেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও রোড কমিউনিকেশন বিশেষজ্ঞ ড. স্বপন কুমার পালিত, কর্ণফুলী বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী ও মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান আহমদ সিদ্দিকি। ম্যানুয়াল ও ফ্যাদোমিটারের মাধ্যমে ভাটার সময় নদীর তলদেশের গভীরতা পরিমাপ করা হয়। এতে দেখা যায়, কর্ণফুলী নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ চর পাথরঘাটা ব্রিজঘাট এলাকায় ২৫ ফুট, মাঝ নদী বরাবর ৩৮ ফুট, উত্তর পাশে ফিরিঙ্গি বাজার ব্রিজঘাট এলাকায় ২৪ ফুট। এই এলাকাটি নিয়মিত ড্রেজিং করায় নদীর স্বাভাবিক গতিপ্রবাহ রয়েছে। কিন্তু এর ঠিক ৫০০ মিটার উজানে চাক্তাই খালের মোহনায় উত্তর পাশে কর্ণফুলীর প্রকৃত সীমানা থেকে তিনশ ফুট নদীর অংশে গভীরতা মাত্র ২ ফুট, মাঝ নদী বরাবর ১৩.৬ ফুট এবং দক্ষিণ পাশে তীরের কাছাকাছি গভীরতা ৪৮ ফুট। তাছাড়া নদীর আরও ৫০০ ফুট উজানে উত্তর পাশে রাজাখালী খালের মোহনায় মাঝ নদীতে গভীরতা মাত্র ৪ ফুট। কিন্তু শাহ আমানত সেতুর তিন নম্বর পিলার বরাবর নদীর গভীরতা ৬০.৯ ফুট।

জরিপে আরও দেখানো হয়, কর্ণফুলী সেতুর উত্তর পাশে ১ ও ২ নম্বর পিলারের মধ্যখানে গভীরতা ফিরিঙ্গি বাজার এলাকার পরিমাপ অনুযায়ী ২৫ ফুট থাকার কথা থাকলেও সেখানে বর্তমান গভীরতা হচ্ছে মাত্র ৭.৭ ফুট। এছাড়া ২ ও ৩ নম্বর পিলারের মধ্যখানে গভীরতা থাকার কথা ফিরিঙ্গি বাজার এলাকার গভীরতা অনুযায়ী ৩৮ ফুট। বাস্তবে এই দুই পিলারের মধ্যখানে চর জেগেছে। আবার সেতুর ৩ ও ৪ নম্বর পিলার এলাকায় স্বাভাবিক গভীরতা ৩৮ ফুট থাকার কথা থাকলেও সেখানে বর্তমান গভীরতা বেড়ে ৬৪.৭ ফুট এবং সেতুর দক্ষিণ তীরে ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে নদীর স্বাভাবিক গভীরতা থাকার কথা ২৮ ফুট। কিন্তু সেখানে গভীরতা ৭৮.৬ ফুট।

শীঘ্রই নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং প্রয়োজন জানিয়ে পরিবেশবিদ, সাংবাদিক আলীউর রহমান বলেন, প্রথমত নদীর দুইপাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে গত ২০ বছরে যা ভরাট হয়েছে তা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এছাড়া নদীর দূষণ রোধে প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলে সকলকে উদ্যোগ নিতে হবে এবং একটি সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে নদীর ক্যাপিটাল ড্রেজিং করতে হবে।

এসময় আরও বক্তব্য দেন কর্ণফুলী বিশেষজ্ঞ বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, সময় থাকতে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে আমাদের জন্য খারাপ কিছু অপেক্ষা করছে। নদীতে যে হারে পলি জমেছে এবং শহরের আবর্জনা পড়ছে তা রোধ করা না গেলে একসময় কর্ণফুলী মরা নদীতে পরিণত হবে। তিনি বলেন, জোয়ারের সময় বুঝা না গেলেও ভাটার সময় বুঝা যায়, নদীর বাস্তব কি পরিস্থিতি। কিন্তু এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষ কর্ণপাত করছে না। আমাদের কাজ সচেতন করা। আমরা তা-ই করছি। কিন্তু যাদের কাজ করা দরকার তাদের কাজ করতে হবে। এতেই নদী বাঁচবে দেশ বাঁচবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন মেরিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নোমান সিদ্দিকী, অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দাশ, অধ্যাপক জনার্দন বণিক, অ্যাডভোকেট সেলিম চৌধুরী, এস এম পেয়ার আলী, জাফর আহমদ প্রমুখ।

ট্যাগ :