স্টাফ রিপোর্টার:
পাতাঝরা বসন্তের বিদায় সন্নিকটে হওয়ায় উঁকি দিচ্ছে গ্রীষ্ম। এর মধ্যেই দেশজুড়ে বয়ে চলেছে মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর এই তীব্র এই গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। সূর্যের খরতাপে সবচাইতে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন খেটে খাওয়া মানুষজন। এছাড়া তীব্র গরমে ধর্মপ্রাণ মুসলামানদের জন্য সিয়াম সাধনা কঠিন হয়ে উঠেছে। আপাতত বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা না থাকায় সহসাই কাটছে না এমন পরিস্থিতি।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে নাজেহাল অবস্থায় রয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। পর্যাপ্ত গাছ আর ছায়াযুক্ত স্থান না থাকায় রোদের উত্তাপ থেকে রেহাই মিলছে না।
রোজাদারদের শুষ্কতা কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে এই কাঠ ফাটা রোদ। এছাড়া দীর্ঘ যানজট যেন গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার মতো যন্ত্রণায় ফেলছে সাধারণ মানুষদের।
কথা হয় পথচারী সেলিম আহমেদের সঙ্গে। তিনি বলেন, রোদের তাপ যেন গায়ে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছে। চট্টগ্রামে আগে এতো গরম মনে হয়নি।
ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতা সোলাইমান হক বলেন, এই গরমে রোজা রাখতে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হচ্ছে। দুপুর ১২টার মধ্যেই গলা শুকিয়ে যায়। এরপর সারাদিন পার করা খুব কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
রিকশাচালক জমীর বলেন, এই গরমে রিকশা চালাতে জীবন বের হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। গরমের জন্য রোজাও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। একটু বৃষ্টি হলে অনেক ভালো লাগত।
বাসে ভ্রমণ করছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সজীব আহমেদ। তিনি বলেন, রোজা রেখে বাসে জ্যাম ঠেলে ভ্রমণ করা অসম্ভব হয়ে উঠেছে। হেঁটে যে গন্তব্য যাব, রোদের তাপেই তো শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
এদিকে তীব্র গরমে রাস্তার পাশের শরবতের দোকানগুলোতে ভিড় লেগে আছে। তীব্র গরমে তৃষ্ণা মেটাতে ঠান্ডা শরবত পান করছেন অনেকে।
এছাড়া তীব্র এই গরমে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তারাও। কতোয়ালি জোনে কর্তব্যরত এক ট্রাফিক পুলিশ বলেন, কাঠ ফাটা এই রোদে দাঁড়িয়ে ডিউটি করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ছি। আশপাশে যে কোথাও বসব তেমন উপায়ও তো নেই। বৃষ্টি না হলে এই গরম কাটবে বলে মনে হচ্ছে।
তবে এখনই বৃষ্টি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মঙ্গলবার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকাসহ খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, কুঁড়িগ্রাম এবং নেত্রকোনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। এমনকি দিনের তাপমাত্রাও বাড়বে।
