মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জুয়া থেকে ইয়াবা, জমি থেকে ফ্ল্যাট!! হুইপের কথিত পিএসের যত দুর্নীতি


প্রকাশের সময় :১৫ জানুয়ারি, ২০২০ ১১:২৭ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার:

নূর উর রশীদ চৌধুরী ওরফে এজাজ চৌধুরী জাতীয় সংসদের হুইপ ও চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনের সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর ‘ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিএস)’ হিসেবে পরিচিত। মাত্র কয়েক বছরেই তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন জুয়া ও ক্যাসিনো ব্যবসা, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা ও তদবির বাণিজ্য করে। কেবল চট্টগ্রামের ক্লাবে চলা জুয়ার আসর থেকেই প্রতিদিন তার আয় ছিল ৫০ হাজার টাকা। এমন সব অভিযোগ ও প্রাথমিক অনুসন্ধান চালানোর পর এবার পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এজাজ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) এজাজ চৌধুরীকে তলবি নোটিশ পাঠান। ২১ জানুয়ারি ঢাকার সেগুনবাগিচার দুদক প্রধান কার্যালয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে তাকে।

এজাজই শুধু নন, তার বাবা আব্দুল মালেক, বড় ভাই সুলতান উর রশীদ চৌধুরী এবং স্ত্রী সুরাইয়া আক্তারের সম্পদেরও খোঁজ নিচ্ছে দুদক। ইতিমধ্যে তাদের ব্যাংক হিসাবের তথ্য জানতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়ে বিভিন্ন ব্যাংকে চিঠি দিয়ে তথ্য চেয়েছে। এছাড়া ভূমি অফিস, সাবরেজিস্ট্রি অফিস ও বিআরটিতেও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।

গত বছরের শুরুর দিকে সামশুল হক চৌধুরীর পিএস এজাজ চৌধুরীর বিরুদ্ধে অভিযোগ (নম্বর ১৮১/২০১৯) জমা পড়ে। তার অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়টি অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয় গত নভেম্বরে। শুরুতে সিদ্ধান্ত ছিল দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, চট্টগ্রাম অভিযোগ অনুসন্ধান করবে। পরে সংস্থাটির চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের নির্দেশে দুদক প্রধান কার্যালয় এজাজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের অনুসন্ধান শুরু করে।

অবশ্য সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এজাজ নামে আমার কোন পিএস, পিএ বা এপিএস নেই।’

এদিকে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী তার ফেসবুক টাইমলাইনে পোস্ট দিয়ে জানিয়েছেন, ‘এজাজ নামে আমার কোন পিএস, পিএ বা এপিএস নেই। আমার এপিএস এর নাম হাবিবুল হক, পিএস এর নাম তৌফিক আল মাহমুদ। পিএর নাম মোহাম্মদ তৌফিক। সংবাদ মাধ্যমগুলোকে যাচাই বাছাই করে বস্তুনিস্ট সংবাদ প্রচারে অনুরোধ জানাচ্ছি। এজাজ চৌধুরী পটিয়া আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি কখনোই কোনো কালে আমার পিএস , এপিএস বা পিএ ছিলেন না। দয়া করে এধরনের অসত্য তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার না করার অনুরোধ রইল।’

গত বছরের সেপ্টেম্বরে চট্টগ্রামে আবাহনী ক্লাবসহ কয়েকটি ক্লাবে র‌্যাব অবৈধ জুয়া ও ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চালানোর পর তার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন সংসদ সদস্য ও হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। তিনি চট্টগ্রাম আবাহনীর মহাসচিবও। ‘জুয়ার নামে ক্লাবগুলোতে অভিযান মানা যায় না’ উল্লেখ করে গত ২২ সেপ্টেম্বর সামশুল হক চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম ক্লাব, সিনিয়র্স ক্লাব, অফিসার্স ক্লাব সেখানেও তো তাস খেলা হয়। সেখানে তো অভিযান চালানো হয় না।’

বিদেশ যেতে মানা হুইপ সামশুর, সঙ্গে আরও ২১
চট্টগ্রামে দুই এমপির আবাহনী ক্লাবে প্রতিরাতের হাতবদল কোটি টাকা!
গত বছরের অক্টোবরে অবৈধভাবে বিপুল সম্পদের মালিক হওয়া ৪৬ জন ব্যক্তির একটি তালিকা তৈরি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সন্দেহ করা হচ্ছে, অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়া ছাড়াও বিদেশে অর্থপাচারের এসব ব্যক্তি জড়িত। ৪৬ জনের এই তালিকায় রয়েছেন চট্টগ্রামের পটিয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী। অন্যদিকে গত বছরের ২৩ অক্টোবর সামশুল হক চৌধুরীসহ ২২ জনের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আবাহনী ক্লাবে জুয়ার আসর
শুদ্ধি অভিযান শুরুর আগে আবাহনীসহ চট্টগ্রামের ক্লাবগুলোতে জুয়ার আসর বসতো। ক্যাসিনোর পাশাপাশি ফ্লাশ, হাউজি, হাজারি, কাইট, পয়সা (চাঁন তারা) খেলা চলতো সেখানে। সেখান থেকে প্রতিদিন ৫০ হাজার টাকা পেতেন এজাজ।

৩ কোটি টাকার দোকান টেরিবাজারে
চট্টগ্রামের টেরিবাজারে ফেমাস শপিং মলের মালিক এজাজ। শপিং মলটির বাজার মূল্য প্রায় ৩ কোটি টাকা। জুয়ার আসর, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি আর তদবির বাণিজ্যের টাকা দিয়ে এই সম্পদ করেছেন এজাজ।

১২ কোটি টাকার ইয়াবা
২০১২ সালের ১৮ মে চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জে আবদুল মালেক ওরফে মালেক চেয়ারম্যানের গোডাউন থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করে র‌্যাব। উদ্ধার হওয়া ইয়াবার বাজারমূল্য দেখানো হয় ১২ কোটি ১৫ লাখ টাকা। র‌্যাবের অভিযানে মালেক চেয়ারম্যান গ্রেফতার না হলেও কোতোয়ালী থানায় দায়ের হওয়া মামলায় তাকে আসামি করা হয়। ওই বছরেরই ৩০ জুন র‌্যাব-৭ কর্মকর্তা রতন দেবনাথ চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা ও স্পেশাল জজ আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তবে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলার বিচার কাজ স্থগিত রয়েছে। ওই মামলার আসামি মালেক চেয়ারম্যান হলেন এজাজের বাবা। এজাজের প্রভাবেই মালেক চেয়ারম্যান ইয়াবা ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

হরিণখাইনে রাজকীয় তোরণ
সম্পদের প্রাচুর্য দেখাতে এজাজ তার গ্রামের বাড়ি পটিয়া উপজেলার হরিণখাইনে রাজকীয় তোরণ নির্মাণ করেছেন।

ট্যাগ :