এম.এইচ মুরাদঃ
চসিকের বর্তমান যে কয়েকজন মহিলা কাউন্সিলর রয়েছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে জনবান্ধন ও মানবিক কাউন্সিলর হিসেবে ইতিমধ্যে সুনাম ও আস্থা অর্জন করেছেন ১৬, ২০ ও ৩২নং ওয়ার্ডের মহিলা কাউন্সিলর রুমকী সেন গুপ্ত। কোভিড-১৯ মহামারি ছড়িয়ে পড়ার পর যখন থমকে গেছে অনেক কিছুই, তখন অসহায় মানুষের জন্য এাণ নিয়ে ছুঁটে গেছেন দুয়ারে দুয়ারে। ঈদ, রোজা, পূজো-পার্বনসহ সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে অসহায়দের সাহায্য সহযোগিতা করে সহায় হয়েছেন। কেউ করোনা আক্রান্ত হলে বা মারা গেলে যখন তার পাশে কেউ যাচ্ছে না। অত্যন্ত কাছের মানুষও পর হয়ে যাচ্ছে। সেই মুহূর্তে এগিয়ে গেছেন। নিজের জীবন বাজি রেখে এমন অনেক কাজ নিঃস্বার্থভাবে করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশনের সংরক্ষিত ১৬, ২০, ৩২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর রুমকি সেনগুপ্ত। তিনি নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত তপতী সেনগুপ্তর পুত্রবধূ। শুধু করোনাভাইরাসের সময়ই নয়, কলেজজীবন থেকেই নিঃস্বার্থভাবে নীরবে মানুষের সেবা করে আসছেন তিনি। মানুষের উপকার বা সেবা করাই তাঁর ধ্যানজ্ঞান।
দুর্যোগকালে খেটে খাওয়া দিনমজুর ও অনেক মধ্যবিত্ত মানুষও খুব কষ্টের মধ্য দিয়ে অর্ধাহারে বা অনাহারে দিন অতিবাহিত করছে। এসব মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা, বাড়িতে বাড়িতে খাদ্য পৌঁছে দেওয়া ও করোনায় মারা যাওয়া মানুষদের সৎকারে এগিয়ে গেছেন তিনি। তিনি জানান, তার নিজস্ব অর্থায়নে করোনায় মানুষকে সচেতন করতে লিফলেট বিতরণ, বিনা মূল্যে গরিব মানুষের মধ্যে লক্ষাধিক মাস্ক বিতরণ, ধর্মীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অপরিষ্কার স্থান ব্লিচিং পাউডার দিয়ে পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন করা, ফুটপাতে বসবাস করা প্রায় কয়েক হাজার মানুষের মাঝে খাবার ও বোতালজাত পানি, টিস্যু বিতরণ এবং হাত ধোয়ার সাবান দিয়েছেন। বৃদ্ধ অসহায় প্রায় শতাধিক নারীকে তিনি দিয়েছেন শাড়ি ও শাল।
করোনাকালে ব্যক্তিগতভাবে প্রায় ২০০০ পরিবারকে ত্রাণসামগ্রী উপহার দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান। তিনি জানিয়েছেন, সম্প্রতি চকবাজার, দেওয়ানবাজার ও আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডে প্রায় ৭০০ হত দরিদ্র মানুষের মাঝে শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের পক্ষে ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেছেন।
তিনি জানান, ১৬, ২০ ও ৩২ নং ওয়ার্ডে তার তত্ত্বাবধানে প্রতিদিন টিসিবি’র পণ্য বিতরণ করা হচ্ছে। প্রতি বছরের মতো এবারও শীতে শত শত অসহায়দের হাতেও তিনি কম্বল তুলে দিয়েছেন।
এছাড়া ধারাবাহিকভাবে ত্রাণসামগ্রী বিতরণসহ রমজান মাসের খাদ্যসামগ্রী উপহার হিসেবে দিচ্ছেন রুমকি সেনগুপ্ত, যা প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বমহলে। পরিবার নিয়ে যখন সবাই নিরাপদে বাসায় বন্দী ছিলেন, এ সময় করোনাভাইরাসের ঝুঁকি নিয়ে চট্টগ্রামবাসীর বাসায় কীভাবে খাবারের জিনিসপত্র পৌঁছানো যায়, এ ভাবনায় দিন কেটে যায় তাঁর। এমন অনেক দিন গেছে, রুমকি সেন সকালে বের হয়েছেন, বাসায় ফিরছেন রাতে। পরিবার পরিজন রেখে মানবতার জন্য মানুষের পাশে দাঁড়ানোয় আনন্দ এবং তৃপ্তি খুঁজে পান তিনি।
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) নারী কাউন্সিলর রুমকী সেনগুপ্ত সম্প্রতি‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছেন দাবি করে এই কাউন্সিলর বলেন, অসহায় গরীব মানুষের সহযোগিতার জন্য অনেক সময় বিত্তবানদের ধারস্ত হতে হয়েছে। অনেকেই এটাকে পূঁজি করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। আমি নিজের অবস্থান থেকে সৎ থাকার চেস্টা করেছি। তাই বিগত চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন নির্বাচনে বিপুল পরিমান মানুষের ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছি।
তিনি বলেন, ‘মানুষের ভালোবাসা ও দোয়ায় আমি এ পর্যায়ে এসেছি। আমার সামর্থ্যের ওপর তাদের হক আছে। বিলিয়ে দেওয়ার মাঝে যে সুখ, সেটা অনেক কিছুতেই পাওয়া যায় না। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত আর্তমানবতার সেবায় যেন নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারি, সেটাই আমার প্রত্যাশা।’ তিনি আরও বলেন, ‘যত দিন আমি সুস্থ-সবল থাকব, তত দিন মানুষের কল্যাণে আমার পথচলা বহমান থাকবে। কারণ মানুষের সেবা করার মনমানসিকতা নিয়ে আমি রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়ছি। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি সৃষ্টিকর্তার করুণা এবং আপনাদের আশির্বাদ ও ভালবাসা সাথে থাকলে যে কোন ষড়যন্ত্র বিরুদ্ধে জয়ী হতে পারবো।