স্টাফ রিপোর্টারঃ
দেশে ফেব্রুয়ারিতে করোনার টিকা আসার কথা থাকলেও চট্টগ্রামে সেটা মিলতে পারে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে। চট্টগ্রামে ২ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৮ জনের জন্য পাঁচ লাখ ডোজ টিকা চেয়ে ইতিমধ্যে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে ঢাকায়।
চট্টগ্রামে করোনার ভ্যাকসিন প্রদান ও সংরক্ষণে সিটি করপোরেশনের সার্বিক প্রস্তুতি আছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
করোনার ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য চসিকের মোট সাতটি স্টোর ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য এবং ইপিআই কর্মী রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সরকারি গাইডলাইন মেনে এই কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়া হবে জানিয়ে ভ্যাকসিন নিয়ে কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধও করেছেন তিনি।
রোববার (৩ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম নগরে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ভ্যাকসিন প্রদানে সাপ্লাই ও কোয়ালিটি ম্যানেজম্যান্ট নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই সভায় মিলিত হন এই কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্তরা।
সভায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনা অনুসারে কোভিড-১৯ মহামারি মোকাবেলায় নিয়োজিত স্বাস্থ্য কর্মী, সম্মুখ সারির কর্মী, রোগ প্রতিরোধহীন ও ক্ষমতাহীন জনগোষ্ঠী এবং দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্ত জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এই ভ্যাকসিন দেওয়ার উপর জোর দেন কমিটির সদস্যরা। এখন পর্যন্ত করোনার আবিষ্কৃত ভ্যাকসিন শতভাগ নিরাপদ।
ভ্যাকসিন প্রদানে সাপ্লাই ও কোয়ালিটি ম্যানেজম্যান্ট নিশ্চিত করার ওপর জোর দিয়ে সরকারি নির্দেশনা মতো এই কার্যক্রম এগিয়ে নিতে সার্বিক প্রস্তুতি সম্পর্কেও সভায় আলোচনা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী।
চট্টগ্রাম নগরে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রদান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
সভায় ভ্যাকসিনের যৌক্তিক প্রাপ্যতার জন্য চারটি বিষয়ের ওপর জোর দেওয়ার কথা বলেন। বিষয়গুলো হচ্ছে- রেশন্যাল, ট্রান্সপারেন্সি অর্থ্যাৎ এনআইডি কার্ডের ভিত্তিতে ভ্যাকসিন প্রদান, সার্ভিস ডিজাইন অর্থাৎ ভ্যাকসিন কীভাবে দেওয়া, রাখা ও যথাস্থানে পৌঁছানো হবে এর কার্যক্রম ও এসিউরেন্স অর্থ্যাৎ ধারাবাহিকভাবে এই ভ্যাকসিন সবাই পাবেন তার নিশ্চয়তা দেওয়া। যাতে এ নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে কোনো ভুল বার্তা না যায়।
এছাড়াও নকল ভ্যাকসিন উৎপাদনের মাধ্যমে প্রতারণা সম্ভাবনার কথা মাথায় রেখে এটি মোকাবেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সজাগ থাকার পরামর্শও দেন তিনি।
ভ্যাকসিন প্রদান ও সংরক্ষণে করপোরেশনের সার্বিক প্রস্তুতি আছে উল্লেখ করে ডা. সেলিম আকতার চৌধুরী বলেন, আমাদের মোট সাতটি স্টোর ও পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য ও ইপিআই কর্মী রয়েছে। প্রয়োজনে তাদের আরও প্রশিক্ষিত করব।
সভায় কমিটির সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মিজানুর রহমান, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাসান শাহরিয়ার কবির, পরিবার পরিকল্পনা চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মো. হাবিবুর রহমান, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম জেলার ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মো. আসিফ খান, চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ও কোভিড ইউনিটের ফোকাল পারসন অধ্যাপক ডা. মো. আবদুস সাত্তার প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি এবং আ্যাস্ট্রোজেনেকা কোম্পানির যৌথ উদ্যোগে প্রস্তুতকৃত করোনার ভ্যাকসিন বংলাদেশে সরবরাহ করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। এ লক্ষে বাংলাদেশ সরকার, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং ভ্যাকসিনটি উৎপাদনের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এর আওতায় বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস বাংলাদেশ সরকারকে ৩ (তিন) কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করবে।