মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে বায়তুশ শরফ দরবারের তড়িঘড়ি এজিএম নিয়ে অসন্তোষ! সাংসদ নদভীর নিয়ন্ত্রণেই যাচ্ছে দরবার


প্রকাশের সময় :৯ জুলাই, ২০২০ ৮:১১ : পূর্বাহ্ণ

এম.এইচ মুরাদঃ

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বায়তুশ শরফ দরবার শরীফের পীর আল্লামা কুতুব উদ্দিনের মৃত্যুর পর রাতারাতি দরবারের নিয়ন্ত্রণ চলে গেল সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের সাংসদ ড. আবু রেজা নদভীর হাতে। গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন করে বায়তুশ শরফ আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ বাংলাদেশের জরুরি সভা ডেকে তাতে প্রধান অতিথি করা হয়েছে সাংসদ নদভীকে। এর মধ্যেই সাংসদের নিয়ন্ত্রণ পাকাপোক্ত করতে করোনার এই দুর্যোগে শনিবার (১১ জুলাই) বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) ডাকা হয়েছে। ইতোমধ্যে বায়তুশ শরফের মসজিদ সম্প্রসারণ ও উন্নয়নের ব্যাংক হিসাব পরিচালনার স্বাক্ষর ক্ষমতাও অর্জন করেছেন সাংসদ নদভী। এ নিয়ে ধনিয়ালাপাড়া এলাকাবাসী, দরবারের মুরিদ ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে চাপা অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালে যেখানে সরকারি ও বেসরকারি প্রায় সব প্রতিষ্ঠানই তাদের এজিএম স্থগিত রেখেছে সেখানে সারা দেশ থেকে সাড়ে তিনশর বেশি প্রতিনিধি বা ডেলিগেট নিয়ে এই এজিএম করার কোনো যৌক্তিকতা নেই। এতে দরবারের ভাবমূর্তি ম্লান হবে বলে তাদের ধারণা।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জরুরি সভার তিন দিন আগে কার্যকরী কমিটির সদস্যদেরকে সভা সম্পর্কে চিঠি দিয়ে নিশ্চিত করতে হয়। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে ৩ জুন অনুষ্ঠিত জরুরি সভার দাওয়াত কার্যকরী কমিটির সব সদস্যকে দেওয়া হয়নি। দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও সেদিন অর্ধেক সদস্যও উপস্থিত ছিলেন না। তাছাড়া বায়তুশ শরফের ইতিহাসে কার্যকরী কমিটির সদস্য ছাড়া বহিরাগত কারও ওই সভায় অংশগ্রহণের নজির না থাকলেও সাংসদ নদভীসহ একাধিক বহিরাগত সদস্য ওই সভায় ছিলেন।

জানা গেছে, কার্যকরী কমিটির ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন বায়তুশ শরফের পীর আল্লামা আবদুল হাই নদভী, আনজুমানের সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য ও মজলিসুল ওলামা বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা মামুনুর রশিদ নুরী, কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম, জাফর উল্লাহ, আবুল কাসেম খান, মোহাম্মদ নুরুদ্দিন। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ড. আহসান সাইয়েদ।

এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম ও মারসা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোর্তুজা ছিদ্দিকী। মোর্তুজা ছিদ্দিক সম্পর্কে বর্তমান পীর আব্দুল হাই নদভীর ভগ্নিপতি। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমাজকল্যাণ ফেডারেশনের মহাসচিব হাফেজ মোহাম্মদ আমানুল্লাহ, মোহাম্মদ ইয়াছিন, অধ্যাপক একরামুল হক আজাদ, অধ্যাপক জামাল উদ্দিন, মাওলানা শিহাব উদ্দিন প্রমুখ। এরা কেউ কার্যকরী কমিটির সদস্য নন। এমনকি সাংসদ নদভীও ওই সভার সদস্য ছিলেন না, ছিলেন বহিরাগত ব্যক্তি।

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বায়তুশ শরফ কেন্দ্রিক আঞ্জুমানে ইত্তেহাদ ও মজলিসুল ওলামার সভাপতি পদ বায়তুশ শরফের পীরের জন্য নির্ধারিত। আল্লামা কুতুব উদ্দিন মৃত্যুবরণ করায় ওই পদে আল্লামা আব্দুল হাই নদভী বসবেন এটা নির্ধারিত। সংগঠন দুটির সভাপতি পদ পূরণের জন্য সহ-সভাপতি ইদ্রিস মিয়া বর্তমান পীরের নাম প্রস্তাব করলে তা সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

ওই জরুরি সভায় চট্টগ্রাম জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ পরিচালক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম আঞ্জুমানে ইত্তেহাদের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে প্রস্তাব করেন সাংসদ আবু রেজা নদভীর নাম। নিজেদের পছন্দের লোক নিয়ে করা ওই সভার সবাই নদভীকে সমর্থন করেন।

আল্লামা কুতুব উদ্দিন যে কমিটির সভাপতি সেই কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পগ্রুপ এস আলমের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ। তাকে সেই পদ থেকে সরিয়ে করা হয়েছে সিনিয়র উপদেষ্টা।

দরবার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বায়তুশ শরফের পীর আল্লামা কুতুব উদ্দিন এবং একই দিন খতিব মাওলানা নুরুল ইসলাম মারা যাওয়ায় যে শূন্যতা তৈরি হয়েছে সেই ফাঁকে বায়তুশ শরফের ঐতিহ্য ভেঙ্গে কার্যকরী কমিটির সৎ ও সজ্জন সদস্যদের এড়িয়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটির রাজনীতিকরণ করা হল সুকৌশলে। এতে দীর্ঘমেয়াদে ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানটির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হবে বলে আশঙ্কা এর অনুসারীদের। দরবারের সম্মানহানির ভয়ে কেউ কিছু না বললেও চাপা ক্ষোভ নিয়ে মানসিক যন্ত্রণায় আছেন বলে চট্টগ্রাম প্রতিদিনকে জানান দরবারের বেশ কয়েকজন একনিষ্ঠ ভক্ত।

বায়তুশ শরফ দরবারের ভক্তরা বলেন, করোনার এই দুর্যোগে যেখানে সরকার জাতির জনকের জন্মশতবার্ষিকীর কর্মসূচির আনুষ্ঠানিকতা বাতিল করেছে, কোন রকম সভা-সমাবেশে যেখানে সরকারের নিষেধাজ্ঞা রযেছে সেই সময়টাতে সারা দেশের দেড় শতাধিক শাখা থেকে বায়তুশ শরফের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে এজিএম বর্তমান পীরের ভাবমূর্তিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করবে। কারণ বায়তুশ শরফের অধিকাংশ প্রতিনিধিই বয়স্ক। আর বয়স্কদের মধ্যে করোনার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ অবস্থায় তারা এজিএম স্থগিত করার দাবি জানান।

ট্যাগ :