এম.এইচ মুরাদঃ
দেশে গত ৮ মার্চ করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকেই মূলত বেকার, খেটে খাওয়া মানুষজন দুর্ভোগে পড়েছেন। এসব মানুষের ক্ষুধার যন্ত্রণা লাঘবে সরকারি পর্যায়ে ত্রাণ বিতরণ শুরু করা হয়। এবং সরকারের পক্ষ থেকেও যথেষ্ট পরিমান ত্রাণ সামগ্রী ইতিমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে। তাছাড়া থানা পুলিশ, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক নেতৃবৃন্দ ও ব্যবসায়ী শিল্পপতি এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উদ্যোগেও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অবশ্য, সরকারি ত্রাণ সংশ্লিষ্টদের অনেকের নয়ছয়ের বিষয়টিও বর্তমানে সকলের সামনে চলে আসছে।
ত্রাণ কার্যক্রম শুরুর প্রথমদিকে এলাকা, পাড়া মহল্লা থেকে ত্রাণ দেয়ার কথা বলে এলাকার দরিদ্র লোকজনের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সংগ্রহ করেন সংশ্লিষ্ট এলাকার পাড়ার নেতারা। সরকারি ত্রাণের কথা বলে অনেকের কাছ থেকে দুইবারও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি নেন তারা। প্রতিদিন ত্রাণ বিতরণ করা হলেও তাদের অনেকের কাছে এখনও ত্রাণ আসে নাই। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে ত্রাণ আসবে বলে শান্তনার বাণী শুনানো হয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।
করোনা ভাইরাসের দাপট শুরু হওয়ার আগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেটের সামনে একটি মুদি দোকানে চাকুরি করতেন নুরুন্নবী। থাকেন বায়েজিদ শান্তিনগর এলাকায়। এখন বেকার। বাসায় আছে মা ও স্ত্রী। ১৫দিন আগে তার আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে গেছেন এলাকার নেতা। ত্রাণ পাওয়ার অপেক্ষায় থাকেন নুরুন্নবী। কিন্তু ত্রাণ আসে না। বায়েজিদ থানার সামনেও অধিকাংশ সময় কাটে তার, কারো কাছ থেকে ত্রাণ সামগ্রী পাওয়ার আশায়।
একইভাবে হামজারবাগ আমিন কলোনীর বলখেলার মাঠ এলাকার বৃদ্ধ আবদুর রহিম ও মফিজের আইডি কার্ডের ফটোকপি নেয়া হয়েছে ১৬/১৭ দিন আগে। উদ্দেশ্য ত্রাণ। কিন্তু ত্রাণের অপেক্ষা তাদের আর ফুরোয় না। এলাকার নেতা তাদের কার্ড নিয়ে গেছে ত্রাণ দেয়ার কথা বলে। তাদের কাছ থেকে দু’বার কার্ড নিয়ে যাওয়ার কথা জানালেন। কিন্তু ত্রাণ জুটেনি এখনো। কবে পাবেন তারও কোন নিশ্চয়তা নেই।
এবিষয়ে আবদুর রহিম ও নুরুন্নবী জানান, আমাদের কাছ থেকে আইডি কার্ডের ফটোকপি নিয়ে গেছে পাড়ার নেতারা। কার্ড নেয়ার সময় ত্রাণ দেয়ার কথা বলা হয়। কিন্তু আমরা এখনো ত্রাণ পাইনি। ত্রাণের আশায় আছি। এটা ছাড়া আমাদের সামনে আর কোন গতি নেই। কারণ এখন কোন কাজকর্মও নেই।
এব্যাপারে পশ্চিম ষোলশহর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের পিএস জানান, এ ওয়ার্ডে মোট ৪০ হাজার মানুষের ত্রাণের লিস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে ত্রাণ এসেছে ২ হাজার মানুষের। এ ২ হাজার মানুষের ত্রাণ আমরা ইতোমধ্যে বিতরণ করেছি। বাকী ত্রাণও পর্যায়ক্রমে আসছে। তাই ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছাতে একটু বিলম্বিত হচ্ছে।