এম.এইচ মুরাদ:
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিতব্য টানেলের সার্বিক কাজের ৪০
শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন
প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ চৌধুরী। তিনি
বলেন, ৪০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। কাজ
দ্রুতই এগিয়ে চলছে। আশা করছি, নির্ধারিত
সময়ে কাজ শেষ হবে।
হারুনুর রশীদ চৌধুরী আরও বলেন, প্রকল্পের জন্য
৩৮১ একর জমির মধ্যে বেশিরভাগ জমি অধিগ্রহণ
হয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বুঝিয়েও
দেয়া হয়েছে। কিছু জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম
প্রক্রিয়াধীন। আশা করছি, শীগ্রই এই কার্যক্রম শেষ হবে।
এর আগে ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ
হাসিনা টানেলের মূল কাজের উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পর কাজের গতি
বেড়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক।
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৩ দশমিক ৩২
কিলোমিটার টানেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১৫
সালের নভেম্বরে অনুমোদন পায়। এটি নির্মাণে
ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। সড়ক
ও সেতু বিভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
নকশা অনুযায়ী, কর্ণফুলী নদীর পতেঙ্গা
প্রান্তের নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে
টানেলটি আনোয়ারা চিটাগাং ইউরিয়া
ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) এলাকায় গিয়ে
শেষ হবে। টানেলে দুটি টিউব থাকবে। প্রতিটি
টিউবের প্রস্থ হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার। এ ছাড়া
উভয় প্রান্তে ৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক
নির্মাণ করা হবে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম উন্নয়ন
কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তবায়নাধীন আউটার
রিং রোডের সঙ্গে টানেলটি যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার আগে ২০০৮
সালে লালদিঘীর ময়দানে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল
নির্মাণের ঘোষণা দেন। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে
টানেল নির্মাণের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান
চায়না কমিউনিকেশন এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানির
(সিসিসিসি) সঙ্গে চুক্তি সই হয়। চীন সরকার ২০১৬
সালের জানুয়ারিতে জিটুজি ভিত্তিতে (সরকার
টু সরকার) টানেল নির্মাণ প্রস্তাব অনুমোদন করে।
চীনের সাংহাইয়ের মতো ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’
এর আদলে চট্টগ্রামকে গড়ে তোলার উদ্যোগ
হিসেবে টানেল নির্মাণ করা হচ্ছে।
‘কন্সট্রাকশন অব মাল্টি লেন রোড টানেল
আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ প্রকল্পের আওতায়
এটি নির্মিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ টানেল নির্মাণের
উদ্দেশ্য হিসেবে উল্লেখ করেছে, কর্ণফুলী নদী
চট্টগ্রাম শহরকে দুইভাগে বিভক্ত করেছে।
একভাগে রয়েছে নগর ও বন্দর এবং অপরভাগে
রয়েছে ভারী শিল্প এলাকা। কর্ণফুলী নদীর ওপর
ইতোমধ্যে তিনটি সেতু নির্মিত হয়েছে, যা
বিরাজমান প্রচুর পরিমাণ যানবাহনের জন্য
যথেষ্ট নয়। নদীর মরফলজিক্যাল বৈশিষ্ট্য
অনুযায়ী কর্ণফুলী নদীর তলদেশে পলি জমা
একটি বড় সমস্যা এবং চট্টগ্রাম বন্দরের
কার্যকারীতার জন্য বড় হুমকি। এই পলি জমা
সমস্যার মোকাবেলা করার জন্য কর্ণফুলী নদীর
ওপর আর কোন সেতু নির্মাণ না করে এর তলদেশে
টানেল নির্মাণ করা প্রয়োজন। এ জন্য সরকার
চট্টগ্রাম জেলার দুই অংশকে সংযুক্ত করার জন্য
কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের
সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।