এম.এইচ মুরাদঃ
চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালের অযৌক্তিক বিল এবং অনিয়ম নাগরিক উদ্যোগকে জানাতে ভুক্তভোগীদের নিকট অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি আজ বুধবার (২২ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানান।
এ সময় জনদুর্ভোগ লাঘবে জনতার ঐক্য চাই শীর্ষক নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা জনাব সুজন বলেন, ‘করোনা মহামারি সারা বিশ্বকে মানবিক হওয়ার আহবান জানালেও দেশের বেসরকারি হাসপাতালগুলো দিন দিন আরো অমানবিক হয়ে উঠছে। রোগী ভর্তি না করা, অযৌক্তিক বিল, গভীর রাতে রোগীদের বের করে দেয়া, বিলের জন্য লাশ আটকে রাখাসহ নানা রকম ন্যাক্কারজনক উদাহরণ সৃষ্টি করছে বেসরকারি হাসপাতালগুলো।’
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হুঁশিয়ারিসহ বিভিন্ন সংস্থার অভিযানের পরও দমানো যাচ্ছে না তাদের। দেখা যাচ্ছে যে শুধুমাত্র স্যালাইন কিংবা অক্সিজেন লাগিয়ে দিয়েই লাখ লাখ টাকা বিল আদায় করছে এসব হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অহেতুক ওষুধ প্রয়োগ, সার্ভিস চার্জসহ বিভিন্ন চার্জের নামেও রোগীদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা তাদের নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
সুজন বলেন, এক সময় তারা হাসপাতালে রোগী ভর্তি না করিয়ে সারা চট্টগ্রামে অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল। পরবর্তীতে বিভিন্ন চাপে পড়ে তারা রোগী ভর্তি করলেও তাদের ভুতুড়ে বিলের বোঝা থেকে কোনভাবেই রক্ষা পাচ্ছে না রোগীর স্বজনরা।
এমতাবস্থায় মহামান্য হাইকোর্ট বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে মাত্রাতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে ভুক্তভোগী ব্যক্তিকে দুদক এ অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তারপরও বেসরকারি হাসপাতালগুলোর লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।
এছাড়া ইতিপূর্বে বেসরকারি হাসপাতালে করোনা নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। অত্যন্ত দুঃখজনক এবং উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতাল করোনা নমুনা পরীক্ষায় রোগীদের কাছ থেকে তিন থেকে চার হাজার টাকা আদায় করলেও অব্যাহতভাবে ভুল রিপোর্ট দিচ্ছে। তাদের ভুল রিপোর্টের ফলে ভোগান্তিতে পড়ছে নমুনা পরীক্ষা করতে আসা রোগীরা। ভুল ফলাফলের একটা বিরূপ প্রভাব পড়ছে সর্বত্র। একেকবার একেক রকম রিপোর্টের কারণে সংশ্লিষ্ট রোগী সঠিক চিকিৎসাসেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে রোগীর মৃত্যুর মতো অমানবিক ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিদেশ যাত্রীরা। ভুল রিপোর্টের কারণে বিদেশ যাত্রাও বিলম্বিত হচ্ছে। আর নির্দিষ্ট তারিখে ফ্লাইটের আসন ধরতে না পারায় আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিদেশ যাত্রীরা।
এমতাবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালের দৌরাত্ন্য রুখে দিয়ে অযৌক্তিক বিল এবং ভুল রিপোর্ট এর দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক সাজা প্রদানের জন্য দুদক চট্টগ্রাম এর পরিচালক মোঃ মাহমুদ হাসান এবং র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল কে টেলিফোনে অনুরোধ জানান সুজন।
দুদক চট্টগ্রাম এর পরিচালক মোঃ মাহমুদ হাসান এবং র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মশিউর রহমান জুয়েল সংশ্লিষ্ট বিষয়ে নাগরিক উদ্যোগকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।
তাঁরা বলেন, বেসরকারি হাসপাতালের অনিয়ম বিষয়ে সারাদেশে আমাদের অভিযান চলছে এবং চলবে। আমরা নগরবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই চট্টগ্রাম এ অভিযানের বাহিরে থাকবে না। কর্মকর্তাবৃন্দ নাগরিক উদ্যোগের নেতৃবৃন্দ এবং নগরবাসীকে উপরোক্ত বিষয়সহ যে কোন দুর্নীতির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করার আহবান জানান এবং ভুক্তভোগীদের স্ব-স্ব দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করারও পরামর্শ প্রদান করেন।
নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা খোরশেদ আলম সুজন ভুক্তভোগীদের অযৌক্তিক বিল এবং ভুল রিপোর্টের তথ্য জানাতে নাগরিক উদ্যোগের ফেসবুক পেইজ: Nagorik Uddog Chottagram, ই মেইল:nagorikuddog@gmail.com, ফোন: ০১৮৭৩-১১০৮৪৬ ও ০১৭৭২-৫০০৭০০ এই নাম্বারে ওয়াটস অ্যাপ এবং ইমু অ্যাপে জানানোর জন্য বিনীত অনুরোধ জানান।