পটিয়া প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের পটিয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় তিন জন গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত সাড়ে দশটার দিকে পটিয়া উপজেলার জঙ্গল খাইন রাস্তার মাথা আমজুর হাট এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।
জানা যায়, যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলমের পক্ষ হতে আগামী ২৩ এপ্রিল শনিবার পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের এক ইফতার মাহফিলের দাওয়াত দিতে জঙ্গল খাইন ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা রফিক আহমদকে তার বাড়িতে দাওয়াত কার্ড দিয়ে ফেরার পথে সন্ত্রাসীরা বদিউল আলমের অনুসারী উপজেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ডি এম জমির উদ্দিন, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম সাইফু ও যুবলীগ নেতা ইকবাল হোসেনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়লে এ তিন জন গুলিবিদ্ধ হন। এসময় সন্ত্রসীরা পালিয়ে যায়।
এসময় স্হানীয়রা গুলিবিদ্ধ ডি এম জমির উদ্দিন (৫৩), সাইফুল ইসলাম সাইফু (৩৭) ও ইকবাল হোসেন (৪০) কে উদ্ধার করে প্রথমে পটিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাদের অবস্থা আশঙ্কা জনক হওয়ায় তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
পটিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রক্তিম দাশ একাত্তর বাংলা নিউজকে জানান, রাত সাড়ে দশটার দিকে তিনজন গুলিবিদ্ধ লোককে বেশ কয়েক জন হাসপাতালে নিয়ে আসেন। তখন তাদের অবস্থা গুরতর দেখে চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বদিউল আলম বলেন, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হুইপ সামশুল হক চৌধুরী ছোট ভাই মুজিবুল হক চৌধুরী নবাবের নেতৃত্বে আমার নেতা কর্মীদেরকে ব্রাশ ফায়ার করা হয়েছে হত্যার উদ্দেশ্যে। এসময় তার সাথে ছিলেন জঙ্গল খাইন ইউনিয়ন পরিষদের যুবলীগ থেকে বহিষ্কার হওয়া চেয়ারম্যান সাহাদাত হোসেন সবুজ, রানা,সোহেল, আলমগীর। গুলিবিদ্ধ তিনজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৪ নং সার্জারী ওয়াডে ভর্তি করা হয়েছে।
বদিউল আলম আরো বলেন, বিচ্চু সামশু বুঝতে পেরেছেন পটিয়ায় তার পায়ের তলায় মাঠি নেই। সে পটিয়াতে রাজনৈতিক ভাবে দেউলিয়া হতে যাচ্ছে। আগামী শনিবার আমার ইফতার মাহফিল বানচাল ও আমার নেতা কর্মীদের হত্যার পরিকল্পনা করে তার ভাই সন্ত্রাসী নবাবকে দিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
পটিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারিক রহমান জানান, জঙ্গল খাইন রাস্তার মাথা আমজুর হাট এলাকায় গুলাগুলির ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে আছি। সবার সাথে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চেষ্টা করছি। গুলিবিদ্ধ তিন জনকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
তবে হুইপ সামশুল হক চৌধুরী এমপির ছোট ভাই ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মুজিবুল হক চৌধুরী নবাব বলেন, আমি বুধবার সকালে ওমরাহ হজ্জ পালন করতে যাব। এখনো পর্যন্ত আমি ওমরাহ করার কাপড় চোপড় কিনতে ব্যস্ত আছি। গত এক সপ্তাহ ধরে আমি পটিয়ায় যায়নি। ঘটনা কারা ঘটিয়েছে একমাত্র আল্লাহ পাক দেখেছেন। এই ঘটনার সাথে আমি কোনভাবে জড়িত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জঙ্গলখাইন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সবুজ একাত্তর বাংলা নিউজকে বলেন, আমজুর হাট এলাকায় স্থানীয়রা কয়েকজনকে পিটুনি দিয়েছে শুনেছি। কেউ গুলিবিদ্ধ হয়েছে কী না জানি না।
এয়ার মোহাম্মদ বাবরের সঙ্গে দ্বন্দ্বের বিষয়ে চেয়ারম্যান সবুজ বলেন, এয়ার মোহাম্মদ বাবর একজন গাড়িচালককে তুলে নিয়ে পিটিয়েছে শুনেছি। ওই চালক থানায় মামলা করেছে। এখন আমজুর হাট এলাকায় পটিয়া থেকে লোকজন এনে শোডাউন দিতে এলে স্থানীয় লোকজন তাদের পিটিয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জেনেছি। বিস্তারিত জেনে ঘটনা কি হয়েছে পরে বলতে পারবো।