এম.এইচ মুরাদঃ
করোনাভাইরাসে সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব এখন স্লোগানে রুপ নিয়েছে চট্টগ্রামের ইপিহেড এলাকায়। সরকার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য অধিদফতর বারবার সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার কথা বললেও তা মানছে সাধারণ মানুষ। তাছাড়া কোভিড-১৯ নামের এই ভাইরাসের টিকা বা ওষুধ আবিষ্কার হয়নি এখনো। সুতরাং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা ছাড়া এই ভাইরাসের থাবা থেকে রক্ষা পাওয়ারও কোনো উপায় নেই। এরই ধারাবাহিকতায় প্রায় দুমাস বন্ধ রয়েছে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো।
চলাচল করছে না গণপরিবহন থেকে শুরু করে আন্তঃজেলা বাসগুলো। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোও বন্ধ প্রায়ই। করোনা আতংকে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করছেন না চিকিৎসকরা। কিন্তু এক দেশে দুই কানুন তো মেনে নেয়াও সম্ভব না। করোনার চরম মুহূর্তে খুলে দেয়া হলো পোশাক কারখানাগুলো। শর্ত দেয়া হলো শ্রমিকের স্বাস্থ্য সুরক্ষার পুরো দায়িত্ব নিতে হবে মালিক পক্ষকে। কিন্তু চলমান পোশাক কারাখানাগুলোতে পোশাক শ্রমিকরা কতটুকু সুরক্ষা পাচ্ছে তার কোনো মনিটরিংও নেই বললেই চলে। তাছাড়া পোশাক কারখানার ভেতরে শ্রমিকদের সুরক্ষার কথা বলা হলেও এর বাইরে জনপদে সাধারণ নাগরিকেরা সুরক্ষিত কতটুকু? ছোঁয়াচের মাধ্যমে যদি করোনার প্রাদুর্ভাব হয় তাহলে বাসা থেকে সামাজিক দূরত্ব না মেনে দলবেঁধে অফিসে যাওয়া-আসা কতটুকু যৌক্তিক সে হিসেবের কষাকষি চলছে পোশাক কারখানা অবস্থিত আশপাশের এলাকাগুলো। মসজিদ থেকে শুরু করে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণের লক্ষে কাঁচাবাজার স্থানান্তরসহ সবকিছুই এখন ভাবিয়ে তুলেছে এলাকাসীকে।
এদিকে নগর পুলিশের পক্ষ থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রেস্তোরাঁগুলোতে ইফতার সামগ্রী বিক্রির সময় বেঁধে দেয়া হলেও তার কোনো ফলপ্রসু প্রভাব মেলেনি। উদাসীনভাবে চলছে তাদের কার্যক্রম।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর অধিকাংশ পোশাক কারখানাগুলো খোলার কারণে ওই এলাকার আশেপাশের দোকানপাট প্রায়ই খোলা। এতে করে করোনা ভাইরাসের মহামারী ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন গার্মেন্টস এলাকার মানুষগুলো।
এ বিষয়ে বন্দরটিলা এলাকার বাসিন্দা অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন একাত্তর বাংলা নিউজকে বলেন, দিনের পর দিন করোনার ঝুঁকি বাড়ছে ঠিক সে সময় পোশাক কারখানার লাখ লাখ শ্রমিকদের পদচারণা লকডাউনে থাকা বিল্ডিং এর অন্যান্য ভাড়াটিয়াদেরও শঙ্কিত করছে। ইপিজেড এলাকা দেখলে মনে হয় এখানে করোনাকে সবাই জয় করে ফেলেছে।
মাস্কোডার্স এর চিফ টেকনিক্যাল অফিসার ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক ইসলাম বলেন, মানুষের জন্যই তো অর্থনীতি, মানুষ মরলে অর্থনীতি দিয়ে কি হবে?প্রতিদিন সকাল বিকাল হাজার হাজার পোশাক শ্রমিকদের একসাথে যাতায়াত আমাদের ভাবিয়ে তুলেছে।
নেভী হাসপাতাল তালতলার বাসিন্দা ও তরুণ ডাক্তার মেহেদী হাসান ইমরান বলেন, করোনা ভাইরাস এটম বোমের মতো একজন থেকে কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। তাছাড়া এই ভাইরাস তো দেখা যায় না কার শরীরে আছে কার শরীরে নাই। সুতরাং সরকার ও প্রশাসনের পাশাপাশি জনগণ সচেতন না হলে ভবিষ্যৎতে আমাদের জন্য অমানবিক পরিণতি অপেক্ষা করছে বলে আমি মনে করছি।