স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট-বায়েজিদ সংযোগ সড়কটি পাহাড় ধসের আশঙ্কায় বন্ধ করে দিচ্ছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ(সিডিএ)। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার পর থেকে সড়কটি বন্ধ থাকবে বলে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস। চলতি বর্ষা মৌসুমে সড়কটি সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে। বর্ষা মৌসুম শেষ হলে আগামী অক্টোবর মাসের দিকে যান চলাচলের জন্য সড়কটি উন্মুক্ত করে দেয়া হবে। সড়কটি বন্ধ রাখতে সিডিএ ইতোমধ্যে ট্রাফিক বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরকে চিঠি দিয়েছে।
ফলে চট্টগ্রাম শহরের বাইরের এ সড়কটি দিয়ে দক্ষিণ চট্টগ্রাম কিংবা পার্বত্য অঞ্চলের যানবাহন সাময়িকভাবে চলাচল করতে পারছে না। এসব অঞ্চলের যানবাহনকে শহরের ভেতরের বিভিন্ন সড়ক ব্যবহার করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে উঠতে হবে।এর আগে সড়কটি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম নগরের বাইরে দিয়ে দক্ষিণাঞ্চলের যানবাহন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক কিংবা বিমান বন্দরে আসা যাওয়া করত। তেমনি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রাম, কক্সবাজার কিংবা পার্বত্য অঞ্চলে আসা-যাওয়া করত।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সড়কটি নির্মান করা হয়েছে পাহাড় কেটে। যে পাহাড়গুলো কাটা পড়েছে তার বেশিরভাগ খাড়া ভাবে ( ৯০ ডিগ্রি কোণে) । ফলে ভারি বৃষ্টিপাতে পাহাড় ধসে বড়ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে। যার ফলে সড়কটি বন্ধ করা জরুরী হয়ে পড়ে।
ফৌজদারহাট পুলিশের পরিদর্শক শফিকুল ইসলাম বলেন, বর্ষার পাহাড় ধসের আশঙ্কা থেকে সিডিএ ফৌজদারহাট বায়েজিদ লিংক রোডটি বন্ধ করে দেবে বলে তাদের জানিয়েছে সিডিএ কর্মকর্তারা।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স প্রকল্প ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী রবিউল হক বলেন, বর্ষায় ভারি বর্ষনে খাড়া উচু পাহাড়গুলো ধসে পড়া আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। ফলে আগামি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়কটি বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
সিডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী হাসান বিন শামস্ বলেন, সড়কটির কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম নগরের যানজট নিরসনে বৃহত্তর স্বার্থে সড়কটি খুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সড়কে থাকা ৩-৪টি পাহাড় অতিবর্ষণে ধসে পড়তে পারে। ফলে সিডিএ বিশেষজ্ঞদল পাহাড়গুলোকে স্থির করার জন্য আরও কিছু কাটার পরামর্শ দিয়েছে। কি পরিমান কাটতে হবে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের মরামর্শ তারা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানাবেন। এছাড়া কিছু পাহাড় এলাকায় রিটার্ণিং ওয়াল দিতে হবে। ফলে অসম্পন্ন কাজগুলো করার জন্য সড়কটি আজ থেকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগামি অক্টোবরের দিকে সড়কটি যান চলাচলের জন্য আবারও উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
এরআগে গত রোববার সন্ধ্যায় সড়কটির পাশে থাকা সীতাকুন্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের জঙ্গল সলিমপুর গ্রামের ঝুকিপূর্ণ পাহাড় থেকে ৩০ পরিবারকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে আনা হয়। ভারি বর্ষনে পাহাড় ধসের আশঙ্কা থেকে তাদের সরিয়ে আনে উপজেলা প্রশাসন।
উল্লেখ্য নগরীর যানজট সমস্যার সমাধানকল্পে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বাস্তাবায়নাধীন বায়েজিদ বোস্তামী থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত চট্টগ্রামের প্রথম বাইপাস সড়ক। এই সড়কে নির্মাণ করা হচ্ছে ১২টি কালভার্ট ও ৬টি ব্রিজ। ৩২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ৪ লেন বিশিষ্ট এই প্রকল্পের একাধিকবার মেয়াদ বৃদ্ধি করে সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুন মাসে সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। তবে পূনরায় মেয়াদ বৃদ্ধি ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে সংশয় রয়েছে এই সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হওয়া নিয়ে।