স্টাফ রিপোর্টারঃ
চট্টগ্রামে রেলওয়ের সিওপিএস পূর্ব দপ্তরে ঘুষের টাকা নিতে অনীহা প্রকাশ করায় এক রেলকর্মীকে মারতে তেড়ে এলেন এডিশনাল চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (সিওপিএস) জাকির হোসেন। শুধু তাই নয়, অকথ্য ভাষায় গালমন্দও করেন তিনি। তার মৌখিক নির্যাতনে অতিষ্ট নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা— এমনও মিলেছে অভিযোগ।
এ ঘটনায় হতচকিত ওই রেলকর্মী চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পূর্ব) বরাবরে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন। নিজের নিরাপত্তার জন্য অভিযোগ দায়ের করেছেন নগরের কোতোয়ালী থানায়ও।
অভিযোগে জানা গেছে, গত ১৩ এপ্রিল বেলা তিনটায় অফিস জমাদারের মাধ্যমে বাংলাদেশ রেলওয়ে (সিআরবি) সিওপিএস পূর্ব দপ্তরের এডিশনাল সিওপিএস জাকির হোসেন সবাইকে কনফারেন্স কক্ষে আসার নির্দেশ দেন। এরপর সেখানে সবাই জড়ো হলে প্রত্যেককে একটি করে প্যাকেট তুলে দেন জাকির হোসেন। এর একপর্যায়ে তার একই দপ্তরের অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত সোহেল হোসেনের হাতে প্যাকেট তুলে দিলে তিনি জিজ্ঞেস করেন, সেটা কিসের প্যাকেট?
এডিশনাল সিওপিএস জাকির হোসেন এর জবাবে জানান, এটি টিজি সেকশনের প্রতি মাসের উৎকর্ষের টাকা। এ সময় অফিস সহকারী সোহেল হোসেন সেই টাকা নিতে অনীহা জানালে জাকির হোসেন প্রশ্ন রাখেন, কেন তিনি টাকা নিচ্ছেন না? জবাবে সোহেল হোসেন বলেন, ‘আমি রোজা রেখেছি। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি। আমার একটি ছেলে অসুস্থ (অটিস্টিক)। ঘুষের এ টাকা আমি নিতে পারবো না। প্রয়োজনে না খেয়ে থাকবো। আমি যা বেতন পাই তা আমার জন্য যথেষ্ট।’
একথা শুনেই উপস্থিত সবার সামনে চড়-থাপ্পড় মারবে বলে সোহেল হোসেনের দিকে তেড়ে আসেন এডিশনাল সিওপিএস জাকির হোসেন। এ সময় তিনি সোহেল হোসেনের চাচা ১৯৮৮ সালের চট্টগ্রাম গণহত্যা মামলার বাদি শহীদুল হুদা সম্পর্কেও কটুক্তি করেন।
বাংলাদেশ রেলওয়ে (সিআরবি) সিওপিএস পূর্ব দপ্তরের অফিস সহকারী সোহেল হোসেন এ বিষয়ে বলেন, ‘ডিজি কনটেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে ঘুষের টাকা গ্রহণ করেন সিওপিএস। সেই টাকার ১ শতাংশ নিম্নপদস্থ কর্মচারীদের ভাগ করে দেন প্রতি মাসে। আমি ওই টাকা গ্রহণ করতে না চাইলে আমাকে মারার জন্য তেড়ে আসেন এডিশনাল সিওপিএস জাকির হোসেন। তাই আমি উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের বরাবর অভিযোগ দিয়েছি। এছাড়াও জাকির হোসেনের একজন ড্রাইভার ওলিউর রহমান আমাকে মারার জন্য হুমকি দিয়েছেন। এ কারণে আমি কোতোয়ালী থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে বাধ্য হয়েছি।’
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে রেলওয়ে (সিআরবি) পূর্ব দপ্তরের এডিশনাল সিওপিএস জাকির হোসেনের মোবাইল নম্বরে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারণে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।