খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি:
দুই দিন ধরে বৃষ্টি বন্ধ থাকায় খাগড়াছড়ির চেঙ্গী, ফেনী নদীর পানি স্বাভাবিক হয়ে আসছে, কমছে মাইনী নদীর পানি। তবে খাগড়াছড়ির মেরং ইউনিয়নে কয়েকশত পরিবার এখনও পানিবন্দি হয়ে আছেন।
শনিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরে জেলার দীঘিনালা উপজেলার মেরুং ইউনিয়নের সোবাহানপুর, হাজাছড়া, ২ নম্বর কলোনি, ৩ নম্বর কলোনি, বড় মেরুং, ছোট মেরং বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে পানিবন্দিদের এমন চিত্র।
দীঘিনালা লংগদু সড়কের বড় মেরুং স্টিলব্রিজ এলাকায় পানিতে সড়ক তলিয়ে আছে। সড়কে বন্ধ আছে যান চলাচল। তবে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে যাতায়াত করছেন যাত্রীরা।
হাজাছড়া এলাকার বাসিন্দা মো. দুলু জানান, টানা চার দিন ধরে তার ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে আছে। পরিবার নিয়ে তিনি আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন। সরকারি সংস্থাসহ বিভিন্ন সংগঠন ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে। তবে সেখানে বিশুদ্ধ খাবার পানির চরম সংকট।
মেরং কাঁঠালবাগান এলাকার বাসিন্দা হালিমা বেগম বলেন, বন্যার পানিতে বাড়িঘর তলিয়ে অধিকাংশ আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে গেছে। বাড়ি এখনও পানির নিচে আছে। বাড়িঘর সংস্কার করতে সরকারি সহযোগিতা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
ছোট মেরুং বাজারের হক গার্মেন্টেসের মালিক মনির হোসেন জানান, দোকানঘর থেকে পানি নেমেছে। তবে বাজারে এখনও পানি আছে। ধারণার বাইরে পানি ওঠায় দোকানের অনেক মালামাল নষ্ট হয়েছে। বাজারের অধিকাংশ দোকানদার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
খাগড়াছড়ি জেলায় অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে এবারের বন্যা। অধিকাংশ এলাকার পানি নেমে গেছে। বেরিয়ে আসছে ক্ষয়ক্ষতির চিহ্ন।
বিশেষ করে বন্যায় গ্রামীণ সড়কগুলোর সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অনেক সেতুর অ্যাপ্রোচ ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
কেবল সড়ক অবকাঠামোই না, ফসলি জমি ও মৎস্য পুকুর ভেসে যাওয়ায় অনেকেই চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন।
জেলায় মোট ৯ হাজার ৭০০ ফসলি জমি কম-বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর আমন ও ৬৩০ হেক্টর আউশ ধানের ফসলও ছিল।
সড়ক থেকে বন্যার পানি নেমে যাওয়ায় খাগড়াছড়ির সঙ্গে বাঘাইছড়ি-সাজেক সড়ক যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।
এছাড়া জেলার রামগড় উপজেলার নাকাপা এলাকায় পাহাড় ধসের মাটি সড়ক থেকে সরানোর পর খাগড়াছড়ি-ঢাকা সড়কে আবারও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
এদিকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রেখেছে সেনাবাহিনী, বিজিবি, প্রশাসনসহ বিভিন্ন সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠন।