এম.এইচ মুরাদঃ
করোনা রোগী তো দূরের কথা স্বাভাবিক জ্বর-সর্দির কথা শুনলেই লেজ গুটিয়ে পালাচ্ছিলো দায়িত্বশীল কিছু জনপ্রতিনিধি, কিছু ডাক্তার, কাছের কিছু আপন মানুষ বা এতদিন যে সমাজে বসবাস করতাম সেই সমাজের মানুষগুলো। করোনা সন্দেহের জেরে কোথাও নিষ্ঠুর প্রতিবেশিরা মিলে একঘরে বেঁধে রাখছেন উপসর্গ থাকা রোগীকে। আবার কোথাও এই বিষ বাষ্পের ভয়ে নিজের আপন জনের শেষ বিদায় দিতে গিয়ে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে অনেকের। এসব ঘটনার বাইরে এই শহরে ব্যতিক্রম কিছু মানুষও রয়েছেন।
চট্টগ্রামে কোথাও ছোট ছোট দলে ভাগ কিছু যুবক-যুবতীরা লড়ছেন করোনার বিরুদ্ধে। গড়ে তুলছেন বিশেষ হাসপাতাল। উপহার সামগ্রী নিয়ে হাজির হয়েছেন মানুষের দুয়ারে দুয়ারে। প্রতিটি সেক্টরের যোদ্ধারা করোনার ঝংকার থামাতে লড়ছেন নিজস্ব কায়দায়। তরুণ ফ্রন্ট ফাইটারদের সাথে হেরে একদিন করোনা বিদায় নেবে। সেই কথা এখনই আঁচ করা যাচ্ছে।
টগবগে এসব তরুণ-তরুণীরা বলছেন, ফ্রন্ট ফাইটার হওয়ার জন্য বয়সটা মোটেও বিবেচ্য বিষয় নয়। বরঞ্চ প্রয়োজন কাঁচা সবুজ মন এবং জোটবদ্ধ প্রচেষ্টা। ফ্রন্ট ফাইটারদের বিশ্বাস জোটবদ্ধ হাতের ইশারায় একদিন থেমে যাবে করোনা। এমন বিশ্বাসীদের একজন কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ। পেশায় তিনি একজন সফল ব্যাবসায়ী, রাজনীতিবিদ ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ডের বর্তমান সফল কাউন্সিলর। চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্যও তিনি।
দেশের দুর্দিনে নিজেকে বার বার প্রমাণ করেছেন একজন দক্ষ সংগঠক ও সফল জনপ্রতিনিধি হিসেবে। সামাজিক প্রতিকূলতা ডিঙ্গিয়ে কাজ করছেন দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য। তবে এবারের যুদ্ধ আরও কঠিন শত্রুর বিরুদ্ধে। সেই নীরব ঘাতক করোনা। গোপনে ছড়িয়ে পড়ে রোজ গিলছে মানুষ! অতি ছোঁয়াছে এই রোগের নাম শুনলেই যখন মানুষ পালিয়ে যাচ্ছে। তখন এই মানবতাবাদী জনপ্রিয় জনপ্রতিনিধি নিজের রাজনৈতিক সহযোদ্ধাদের এবং এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে করোনা সংকট শুরুর প্রথম থেকেই তার ওয়ার্ডের মানুষের পাশে থেকেছেন এবং সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি তার নিজস্ব অর্থায়নে তাদের খাদ্য, চিকিৎসা ইত্যাদি সেবা নিশ্চিত করেছেন। আর করোনা সংক্রমণ রোধে শুরু থেকে মানুষকে সচেতন করার প্রচেষ্টা তো আছেই।
এমন দুর্দিনে মানুষের সেবা দিতে ঘরে-বাইরে ছুটেছেন এবং ছুটছেন চট্টগ্রামের এই মানবতাবাদী জনপ্রিয় কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ । পশ্চাৎপদ সংস্কৃতি ছুড়ে ফেলে দিয়ে মাথায় পেতে নিয়েছেন ঝুঁকি।করোনা ক্রান্তিকালে যখন করোনা কিংবা উপসর্গের রোগী থেকে দূরে পালিয়ে যাচ্ছে নিকট আত্মীয় স্বজনরা, এমনকি কোথাও কোথাও পরিবারের সদস্যরাও করছেন নিষ্ঠুর আচরণ। ঠিক সেই সময়ে এই করোনা কিংবা উপসর্গের রোগী পেলে স্নেহ মমতা দিয়ে কাছে টেনে নিয়েছেন পরিবারের মত করে এবং নিজের অর্থায়নে দেওয়া ফ্রী এম্বুলেন্সের মাধ্যমে রোগীকে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন নিদিষ্ট হাসপাতালে। এসব করতে গিয়ে নিজের পরিবারকে সময় দেওয়া হচ্ছে না। এই নিয়ে বেশ আক্ষেপ থাকলেও কিংবা অভিমানও সহ্য করতে হলেও সব সময় সহযোগিতাও পেয়েছেন পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে। সব মিলে এক বুক আশা বুকে নিয়ে এগিয়ে নিচ্ছেন সংগ্রামের এই জীবন।
জনপ্রিয় এই জনপ্রতিনিধি মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, ‘দুর্দিনে হাত গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। বহু সংকট মোকাবেলা করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর শক্তিই জীবনকে স্বার্থক করে তোলে। সরকারের একার পক্ষে এই শত্রু মোকাবেলা করা অনেক কঠিন। তাই প্রয়োজন জোটবদ্ধ প্রচেষ্টা।’
পরিবারের ঝুঁকির কথা ভাবতে গেলে মনটা দীর্ঘশ্বাসে ভরে উঠে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকট মোকাবেলায় সবাইকে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আমি তাঁর একজন ক্ষুদ্র কর্মী হয়ে সেটা অনুসরণ করছি। সবার ভালো থাকার মধ্যেই নিজেকে খুঁজে নিয়েছি।’
অসহায় মানুষের জন্য সহ যোদ্ধাদের উজাড় করা ভালোবাসায় এই পথে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি জানিয়ে কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, ‘আমরা নিজের জীবন ঝুঁকির সুতায় ঝুলিয়ে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি। তবে এইটুকু পথ চলা মোটেও সহজ ছিল না। সব ভালো লাগার সাথে অনেক তিক্ত অভিজ্ঞতা এই পথের সঙ্গী হয়েছে।’
কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ ইতিমধ্যে সরকারি বরাদ্দের পাশাপাশি তার নিজস্ব অর্থায়নে ওয়ার্ডের অসহায় দুস্থ, নিম্মমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের জন্য রেকর্ড পরিমান উপহার সামগ্রী বিতরণ করে এক মানবিক দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন। ফ্রী সবজি বাজার থেকে শুরু করে যোগ করেছেন ভিন্নধর্মী বিভিন্ন সেবা ও সহযোগিতা। মানুষের অকৃত্রিম ভালবাসায় শিক্ত হয়ে তিনি ইতিমধ্যেই সবার কাছে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবেও পরিচিতি লাভ করেছেন। এই মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ তার ওয়ার্ডের সকল স্তরের জনসাধারণের জন্য দিয়েছেন ফ্রি এম্বুলেন্স সার্ভিস সহযোগীতা। যেটি রাতদিন ২৪ ঘন্টা তার ওয়ার্ডের অসুস্থ জনসাধারণ, যাদের আসলেই এম্বুলেন্স সেবা দরকার তারা কোন প্রকার ভাড়া পরিশোধ করা ছাড়া এটি ব্যাবহার করতে পারছেন। অবশ্য এই সহযোগীতাটি করোনা দুর্যোগের আগেও তিনি চালু রেখেছিলেন।
পরিবারের বাইরে তারুণ্যর শক্তিতে ভর করে তিনি গড়ে তুলেছেন অন্য একটি পরিবার। এত সব কাজের মধ্য দিয়েই চট্টগ্রামে বিপদগ্রস্থ মানুষের ভরসা হয়ে উঠেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কুড়িয়েছেন বেশ প্রশংসা।
তবে নতুন ভোরের অপেক্ষায় প্রতিটি মুহুূর্ত কাটছে জানিয়ে কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ বলেন, ‘একদিন সব শোক মুছে দিয়ে বিজয়ের কেতন সবাই মিলে উড়াবো। আমরা সুন্দর একটি ভোরের সাক্ষী হবো। সেই অপেক্ষায় আছি।’