স্টাফ রিপোর্টারঃ
করোনাকালে বেড়েছে সংসারিক খরচ। দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে মধ্যবিত্তরা। দেশের এমন পরিস্থিতিতে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি, কষ্টে দিন কাটাচ্ছে সাধারণ মানুষ। আবার টানা তিন মাসের বেশি সময় কর্মহীন হয়ে থাকায় জমানো টাকাও ভেঙে খেয়েছেন অনেকে। এতে করে বর্তমানে হাত খালি অবস্থায় রয়েছে শহরে বাস করা মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো। এরমধ্যে দুশ্চিন্তা আরো দ্বিগুণ বেড়েছে মাস শেষে ঘর ভাড়ার টাকা নিয়ে।
স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে করোনা পরিস্থিতিতে প্রতিটি ঘরেই বেড়েছে দৈনন্দিন জীবনের অতি প্রয়োজনীয় খাবারসহ নিত্যপণ্যের খরচ। বেড়েছে ওষুধপত্রের খরচও। এতে হিমশিম খাচ্ছে মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ মানুষ। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে অনেক মানুষ দিন কাটাচ্ছে কর্মহীন অবস্থায়।
চট্টগ্রাম নগরীতে বসবাস করা এসব মানুষের প্রতিদিনের চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি বেড়েছে বাজারে দ্রব্যমূল্যের দামও। এতে এসব সাধারণ মানুষের কষ্ট আরো বেড়ে গেছে। নগরীতে বসবাস করা বেশকিছু বাসিন্দার সাথে কথা বলে জানা যায়, করোনাকালে ওষুধপত্রসহ খাবারের খরচ নিয়ে খুব কষ্টে আছেন। আগে সংসারে এতো টাকার ওষুধপত্র খরচ লাগতো না। আবার খাবারও ছিল একটা নিদিষ্ট পরিমাণ টাকার মধ্যে। যারমধ্যে সংসারের অন্যান্য খরচও থাকতো। কিন্তু এখন করোনাভাইরাসের ভয়ে প্রতিদিনের খাবারে এসেছে ভিন্নতা। প্রতিদিন রং চা, এতে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলোর দাম বেড়েছে। ওষুধপত্র, ফলমূলসহ করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষা রাখার জন্য নানান প্রতিরোধমূলক জিনিসপত্র কিনতে ব্যয় হচ্ছে অনেক টাকা। এসব প্রতিরোধমূলক জিনিসপত্রগুলোও ব্যয়বহুল। দেশের এমন পরিস্থিতিতে অনেকের কাজ নেই, আবার অনেকে কাজে যোগ দিলেও সঠিকভাবে পাচ্ছে না বেতন।
সরেজমিন জরিপে দেখা যায়, বর্তমানে চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করা প্রায় ৭০ শতাংশ বাসিন্দাই ভাড়াটিয়া। যারা বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এসে এখানে বসবাস করছেন। এদের সবাই চাকরি, শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও নানান রকম কাজের জন্য এখানে বাস করছেন। এসব মানুষদের মধ্যে বর্তমানে প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষই এমন দুর্বিষহ দিন অতিবাহিত করছেন।
চকবাজারে ভাড়া থাকেন মোঃ ফোরকান নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, ‘আমি ছোট একটা চাকরি করি। আজ তিন মাস আমার চাকরি নেই। এতো দিন জমানো টাকা ভেঙে খেয়েছি। এখন তাও ফুরিয়ে এসেছে। বাজারে সব কিছুরই দাম বাড়তি। এদিকে নেই আয়। আগেতো এতো জিনিস লাগতো না। এখন করোনার কারণে ওষুধ খরচ বেড়েছে, বেড়েছে নানান রকম খাবারের খরচও। আগে সারাবছর মিলে আধা কেজি আদাও লাগতো না আর দামও ছিল কম। এখন সপ্তাহ ঘুরতে ১ কেজি আদা শেষ হয়ে যায়। এখন এসব খেয়ে শরীর সুস্থ রাখছি। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে আমাদের মত মধ্যবিত্তরা বেঁচে থাকার পথ হারিয়ে ফেলবে। কিন্তু আমরা বাঁচতে চাই পরিবার নিয়ে। আমাদের দিকে সরকারের সুনজর দেয়া দরকার। সরকারের পক্ষ থেকে অনেক রকম সহযোগিতার কথা শুনছি। কিন্তু আমরাতো এখনো পর্যন্ত কোনো সহযোগিতা পাইনি। এ দুর্যোগের সময়ে এক টাকার সহযোগিতা ফেলেও আমাদের মত মধ্যবিত্তের উপকার হয়’।