এম.এইচ মুরাদঃ
নভেল করোনাভাইরাসের আতঙ্কে থমকে আছে জনজীবন। বন্ধ রয়েছে দোকানপাট ও যান চলাচল। এ অবস্থায় কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন গরীব অসহায় দিনমজুরেরা এবং কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। এমন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২৩নং উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ডে অসহায় দুস্থ, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামীলীগের সদস্য এবং বর্তমান কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ।
তিনি বলেন, ‘পুরো দেশ আজ করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এ স্তব্ধ হয়ে গেছে। গত কয়েক যুগে প্রিয় মাতৃভূমির এমন পরিস্থিতি আর কেউ কখনো দেখেনি৷ ১৬ কোটি মানুষের এই দেশে প্রায় ৬ কোটির মত মানুষ রয়েছে যারা অসহায়, গরীব দুঃস্থ। দিনে ১ বেলা খাবার জোটাতে যাদের হিমশিম খেতে হয়। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে তারাই আজ সবচাইতে বেশি বিপদে। নেই কোনো আয়, রোজগার, তাই পেটেও নেই খাবার। এই মুহূর্তে তাদের পাশে দাঁড়ানো মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব। তারই অংশ হিসেবে অসহায় দুস্থ ও গরীব লোকদের পাশে দাঁড়াতে পেরে নিজেকে অনেক সৌভাগ্যমান মনে হচ্ছে।’
তিনি সম্পূর্ণ নিজের অর্থায়নে ইতিমধ্যে প্রায় ৩৫০০ পরিবারকে এাণ সামগ্রী ২৩নং উত্তর পাঠানটুলি ওয়ার্ড এলাকার সাধারণ জনগণের ঘরে ঘরে পৌঁছিয়ে দিয়েছেন। প্রতিটি ত্রাণ সামগ্রীর ব্যাগে ছিলো ৪কেজি চাল, ১লিটার তেল, ২কেজি আলু, ১কেজি ডাল সহ বিভিন্ন সামগ্রী। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনি নিজস্ব অর্থায়নে আরও খাদ্য সামগ্রী অসহায় মানুষের কাছে পৌঁছে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
এছাড়াও তিনি সরকারীভাবে ৬ ভাগে যথাক্রমে ৭২ব্যাগ, ৮০ব্যাগ, ১৮৩ব্যাগ, ৩২৩ব্যাগ, ৭৬৩ব্যাগ, ১০৯১ব্যাগ করে মোট ২৫১২ব্যাগ ত্রাণ সামগ্রী ২৫১২ অসহায় দুস্থ, নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে বিতরণ করেন।
কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ গত ২০দিন ধরে নতুন আরেকটি সেবা যোগ করেছেন তার ত্রাণ কার্যক্রমে সেটি হলো ফ্রী সবজি বিতরণ। প্রতিদিন ৫টি ভ্যানে করে মোট ৭০০কেজি সবজি বিতরণ করা হচ্ছে ওয়ার্ডের পাড়া মহল্লার বিভিন্ন অসহায় পরিবারের মাঝে। সবজির মধ্যে রয়েছে আলু, মিষ্টিকুমড়া, লাউ, সিম, টমেটো ইত্যাদি। আগামীকাল থেকে ডিম বাজার চালু করবেন বলেও জানান এই সফল কাউন্সিলর। সাথে থাকবে তরল দুধসহ আরও পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী।
কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদ শুধু খেটে খাওয়া দিন মজুরই নয় এবার তিনি খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন সে সব মধ্যবিত্ত মানুষের মাঝে যারা সরকারি ত্রাণের জন্য চক্ষু লজ্জায় দাঁড়াতে পারেন না কারো কাছে বা কোন সরকারি ত্রাণের লাইনে। মুখ ফুটে কাউকে বলতে পারেন না তাদের অভাব অনটনের কথা। তাই কাউন্সিলর জাবেদ রাতের আঁধারে নিজে সে সব মানুষের খোঁজ খবর নিয়ে এসে পরে লোক চক্ষুর আড়ালে সে সব মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে খাদ্য সামগ্রী বা কখনো নগদ অর্থ বিতরণ করে যাচ্ছেন। তার এই মহান কর্মযজ্ঞের পরেও কোথাও নেই তাঁর ত্রাণ বিতরণ কালে ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানো কোন ফটোসেশান এর ছবি। নেই কোন পত্রিকা অথবা টিভি মিডায়ার সামনে নিজেকে দানবীর সাজানোর নির্লজ্জ প্রতিযোগিতা। অত্যন্ত নিভৃতে থেকে কি করে সত্যিকারের জনসেবা করতে হয় কাউন্সিলর জাবেদ যেন তারই জীবন্ত উদাহরণ। মধ্য মার্চ থেকে চলছে তার নিরব ত্রাণ বিতরণ কর্মসূচি শ্রমহীন এবং শ্রমজীবী কর্মহীন মানুষের জন্য। গত কয়েকদিন আগে থেকে শুরু করেছেন নিন্মবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত মানুষের মাঝে তাঁর ত্রাণ বিতরণের এক মহতি কার্যক্রম। শুধু তাই নয় তিনি মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন, হিন্দু সম্প্রদায় ও বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন্দির পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের জন্যও ইতিমধ্যে উপহার সামগ্রী পাঠিয়েছেন। এবং তিনি ঘোষণা দিয়েছেন যে,তার এই ত্রাণ কার্যক্রম চলতেই থাকবে যতো দিন পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ স্থিতিশীল পর্যায় না পৌঁছায়। তিনি বলেন, আমার এই সাহায্য সহযোগিতা থাকবে সবার জন্য উমুক্ত। কোন দল, গোষ্ঠী নয় মানুষের জন্যই আমার এই সামান্য প্রচেষ্টা। যদি মানুষের সেবা করার মাধ্যমে তাদের মূখে একটু হাসি ফোটাতে পারি এটাই হবে আমার পাওনা। আমার আর কিছু চাওয়া পাওয়ার নেই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ত্রাণ সামগ্রী পাওয়া উত্তর পাঠানটুলি এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, যেখানে সারা বাংলাদেশের সরকারি ত্রাণ চুরি করছে সরকারি ভাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত চেয়ারম্যান,মেম্বাররা সহ ত্রাণ কর্মসূচির সাথে জড়িত সংশ্লিষ্টরা, ঠিক সেখানেই আবার কাউন্সিলর মোহাম্মদ জাবেদের মতো মানুষগুলো ব্যক্তিগতভাবে এবং সরকারি বরাদ্দকৃত ত্রাণ সামগ্রী সঠিক এবং সততার সাথে পৌঁছে দিচ্ছেন অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে এবং চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের সত্যিকারের সেবা দান কর্মকান্ড। তাও আবার কোন রকম ব্যাক্তিগত প্রচার প্রচারণা ছাড়া। মহান সৃষ্টিকর্তা যেন এইসকল দানবীর এবং সৎ জনপ্রতিনিধিদেরকে কবুল করে আরও বেশী বেশী অসহায়দের পাশে থাকতে পারে মতো তওফীক দান করুক এই দোয়াই করি।