মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগের মন্ত্রী-নেতাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় : রানা দাশগুপ্ত


প্রকাশের সময় :৭ নভেম্বর, ২০২০ ৭:৩৪ : অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-নেতাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।

শনিবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১২টায় চট্টগ্রাম নগরের নিউমার্কেট মোড়ে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ আয়োজিত গণঅবস্থান কর্মসূচিতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

রানা দাশগুপ্ত বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমরা আপনার কাছে বলতে চাই, কোনো মন্ত্রী, সরকারের কোনো নেতাকে আমাদের বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়। তাঁরা যা বলেন, তা করেন না।

প্রধানমন্ত্রী সংখ্যালঘুদের পক্ষে ভূমিকার রাখার জন্য অনেকবার অনেক চেষ্টা করেছেন জানিয়ে রানা দাশগুপ্ত বলেন, উপর থেকে পানি ঢেলেছেন, কিন্তু নিচের দিকে আমরা পানির কোনো সন্ধান পাই নাই। মাঝপথে আটকে গেছে। তার কারণ আপনার দলের ভেতর দল আছে। আপনার প্রশাসনে পাকিস্তান আছে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দল সরকার চালাচ্ছে, আর তৃণমূলকে নিয়ন্ত্রণ করছে একাত্তরের পরাজিত শক্তি। আমরা এ বিষয়ে আপনাকে সচেতন করতে চাই। আর সাম্প্রদায়িকতা রুখতে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে হিন্দু-মুসলমান-বৌদ্ধ-খৃষ্টান সবাই মিলে আওয়াজ তুলতে চাই।

ফ্রান্সের ঘটনাকে পুঁজি করে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোয় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে ‘ধন্যবাদ’ জানান রানা দাশগুপ্ত।

তিনি বলেন, বন্ধু রাজনৈতিক দলগুলো আজ পর্যন্ত কোনো বিবৃতি দিতে পারল না। আমি ধন্যবাদ জানাই হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির নুর হোসাইন কাসেমীকে। তিনি জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব। তিনি গত পরশু এক বিবৃতিতে বলেছেন ‘মানবাধিকারবিরোধী তৎপরতার বিরুদ্ধে সরকারকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। আমরা লক্ষ্য করছি রাসূলের (সা.) মর্যাদা রক্ষার ঈমানি আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করে এত সাম্প্রদায়িক গোলযোগ সৃষ্টির চক্রান্ত করছে।’ এই কথাগুলো তো আমরাই বলেছি গত ২ তারিখে সংবাদ সম্মেলনের মধ্য দিয়ে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপনার বাড়িতে বছরে অন্তত পাঁচ থেকে ছয়বার এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের স্বার্থ নিয়ে কথা বলি। আজ যখন আপনি বিবিসিকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘রানাবাবু যা বলেছেন, তাতে বাড়িয়ে বলা হয়েছে।’ আমরা বলতে চাই তাহলে কাসেমী সাহেবও কি বাড়িয়ে বলেছেন? আমরা চাই, যা কিছুই আমরা বলেছি তার পুঙ্খানুপঙ্খ বিচার চাই, পুঙ্খানুপঙ্খ তদন্ত চাই, অনতিবিলম্বে সাম্প্রদায়িক হামলা বন্ধ চাই। আর যারা এসব করছে তাদের চিহ্নিত করা চাই আর ফেসবুকের মাধ্যমে ফাঁসিয়ে যাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাদের মুক্তি চাই।

এর আগে সকাল ৯টার পর থেকে ঐক্য পরিষদের নেতাকর্মীরা চট্টগ্রামের নিউমার্কেট মোড়ে সমবেত হতে শুরু করেন। সকাল ১০টায় নির্ধারিত সময়ের আগেই শুরু হয় গণঅবস্থান কর্মসূচি।

একপর্যায়ে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত নেতাকর্মীদের নিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন। এ সময় তারা ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’, ‘৭২ এর সংবিধান ফিরিয়ে দাও’, ‘সাম্প্রদায়িক শক্তির কালো হাত ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেন।

এ সময় হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের পক্ষ থেকে জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করার দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। অথচ আমরা সংবিধানে যেসব সাম্প্রদায়িক পরিবর্তন বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর আনা হয়েছিল, সেগুলো বাদ দিয়ে স্বাধীনতার চেতনায় আমরা ফেরত যেতে পারিনি। স্বাধীনতার আগে পাকিস্তান আমলে যে সাম্প্রদায়িক চেতনার উত্থান ঘটানোর চেষ্টা হয়েছিল, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে চেষ্টা হয়েছিল, আজ দেশ আবারও সেই সাম্প্রদায়িক চেতনায় ফিরে গেছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি।

ঐক্য পরিষদের চট্টগ্রাম মহানগর শাখার সভাপতি পরিমল চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন পরিষদের কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. জীনবোধি ভিক্ষু, চট্টগ্রাম উত্তরের সভাপতি রনজিৎ দে, কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদক শ্যামল ‍কুমার পালিত, নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক নিতাই প্রসাদ ঘোষ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি চন্দন তালুকদার, বাংলাদেশ গীতা শিক্ষা কমিটির প্রধান উপদেষ্টা তপন কান্তি দাশ, যুব ঐক্য পরিষদের নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রুবেল পাল।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অবস্থান কর্মসূচি বিশাল জনসভায় রূপ নেয়। নগরের প্রধান সড়কে হাজার হাজার মানুষের অবস্থান কর্মসূচির কারণে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাস্তায় আটকা পড়ে হাজার হাজার গাড়ি। যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েন নগরবাসী। পরে বেলা ১২টার দিকে গণঅবস্থান শেষ করে একটি বিক্ষোভ মিছিল নগরের বিভিন্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।

প্রসঙ্গত, ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত এ কর্মসূচির ঘোষণা দেন।

ট্যাগ :