স্টাফ রিপোর্টার:
চট্টগ্রাম নগরীর মেহেদীবাগ এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে আাবারও ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।
খিঁচুনি ও জ্বর নিয়ে ভর্তি হওয়া এক বছর বয়সী জারিন সারওয়ার প্রিয়কে একটি এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন শরীরে পুশ করার করার সাথে সাথেই সে মৃত্যু বরণ করে।
গত ১৭ নভেম্বর খিঁচুনি ও জ্বর নিয়ে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর আজ বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে জারিন সারওয়ার প্রিয়া মৃত্যু বরণ করে।
শিশুটির বাবা বাবা শামীম আহমেদ বলেন, খিচুনি ও জ্বরে আক্রান্ত প্রিয়কে গত ১৭ নভেম্বর পেডিয়াট্রিক নেফ্রলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সনৎ কুমার বড়ুয়ার অধীনে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি করাই। প্রিয়া ম্যানিনজাইটিস বা মস্তিস্কের প্রদাহজনিত রোগে আক্রান্ত ছিল। মৃত্যুর ঘণ্টাখানেক আগেও প্রিয়া খেলা করছিল। একটি এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন শরীরে পুশ করার করা শিশুটি আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যায় এবং একপর্যায়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
ভুল চিকিৎসার কারনেই প্রিয়ার মৃত্যু হয়েছে দাবী করে তিনি আরো বলেন, আজ সকালেও খেলা করেছে সে। তাকে এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন দেওয়ার আধাঘণ্টা পেই মারা যায়।
শিশুটির হঠাৎ মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না তার পরিবারের সদস্যরা। তার মা ব্যাংক কর্মকর্তা ও লেখিকা মোহছেনা আক্তার ঝর্ণা হাসপাতালে আর্তনাদ করতে থাকেন। তিনি কান্না করতে করতে বলেন, ‘আমার ছেলেটা সকালেও আমার বুকে খেলা করেছে। এন্টিবায়েটিকটা দেওয়ার পর সে সহ্য করতে পারেনি। আমার ভালো ছেলেটা মারা গেল।’
এ বিষয়ে মুঠো ফোনে চিকিৎসক সনৎ কুমার বড়ুয়া বলেন, শিশুটি জ্বর ও খিঁচুনি রাগো আক্রান্ত ছিলো। পরীক্ষায় এনকাফেলাইটিস পজেটিভ আসে। কার্বোসিড ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে। সেটার কোনো সাইডইফেক্ট নেই। হয়ত ইনজেকশন দেওয়ার সময়েই তার প্রদাহটা আবার শুরু হয়। এ কারণেই মৃত্যু হয়েছে।
ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী বলেন, ‘আমি ঘটনা শোনার পর নিজে পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখেছি। চিকিৎসা যেটা হয়েছে একেবারে সঠিক চিকিৎসা। ম্যানিনজাইটিস রোগটাই এমন যে, কখনো একটু ইমপ্রুভ করবে, কখনো আবার একটু অসুস্থ হবে। ইনজেকশন দেওয়ার কারণে তার মৃত্যু হয়েছে, এটি সঠিক নয়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৯ জুন রাতে জ্বর ও গলাব্যথা নিয়ে ভর্তি হওয়া সাংবাদিক রুবেল খানের শিশুকন্যা রাফিদা আক্তার রাইফা’র মৃত্যু হয়। ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় শিশু রাইফার। এ মৃত্যুর পর দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। চট্টগ্রামসহ সারা দেশের মানুষ বিচারের দাবিতে মাঠে নামেন। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের টিম হাসপাতালে অভিযানও চালিয়েছিল।