মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ৩রা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাফ নারী ফুটবলে নেপালকে উড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ


প্রকাশের সময় :১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১:৩৮ : অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

দশরথের ১৬ হাজার নেপালি দর্শকের ‘নেপাল, নেপাল’ চিৎকারটা স্তিমিত হয়ে গেল কিছুক্ষণের মধ্যেই। গ্যালারির এক কোনায় লাল-সবুজ পতাকা হাতে গুটিকয়েক বাঙালি আনন্দে গর্জে উঠলেন ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ রবে। অল্প কিছু এই বাঙালি সাক্ষী হয়ে রইলেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলের অনবদ্য এক ইতিহাস জন্ম ক্ষণে।

বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথম সাফ জিতেছিল পুরুষ ফুটবল দল, ২০০৩ সালে। পুরুষ ফুটবলে সেটাই এখন পর্যন্ত একমাত্র সাফ শিরোপা। নারী ফুটবল দলের জন্ম এরও অনেক পরে। হোঁচট খেতে থাকা সেই নারী দলটা এবার ভাগ বসাল ছেলেদের গৌরবে। সাফ ইতিহাসে নিজেদের মাত্র দ্বিতীয় ফাইনালে নেপালকে ৩-১ গোলে বধ করে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব জিতে নিল গোলাম রব্বানী ছোটনের দল। স্বপ্নের ফাইনালে প্রথম গোলটি শামসুন্নাহার জুনিয়রের। পরের দুই গোল করে ইতিহাসের পাতায় নাম লিখিয়েছেন কৃষ্ণা রানী সরকার।

এই এক ফাইনাল দিয়ে বাংলাদেশের অবদানটাকে খাটো করা যাবে না। নেপালের মাঠ, নেপালের দর্শক আর বাংলাদেশের বিপক্ষে তাদের অজেয় থাকার পরিসংখ্যান-দশরথের রঙ্গশালায় সবকিছুকে আজ এক ঝটকায় স্তব্ধ করে দিয়েছেন বাংলাদেশের নারী ফুটবলাররা। বয়সভিত্তিক ফুটবল থেকে জাতীয় পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নারী ফুটবলে বাংলাদেশের উত্থানের সাক্ষীও হয়ে রইবে নেপালের বিপক্ষে সাবিনাদের এই ম্যাচ।

শিরোপা জিতে মায়ের শেষ সম্বল, বোনের অলংকারের মূল্য দিতে চান সানজিদারাশিরোপা জিতে মায়ের শেষ সম্বল, বোনের অলংকারের মূল্য দিতে চান সানজিদারা
ভারতকে হারিয়ে অবশ্য স্বপ্ন পূরণের বার্তাটা আগেই দিয়ে রেখেছিলেন সাবিনা-কৃষ্ণারা। নিজেদের আধিপত্য বজায় রাখতে হলে নেপালকে তাদের দর্শকদের সামনেই হারাতে হতো লাল-সবুজ মেয়েদের। নেপালের আক্রমণাত্মক ফুটবল, স্বাগতিক দর্শকদের চাপ-কিছুই দমাতে পারেনি অদম্য মেয়েদের। সাফের ট্রফি হাতে মাথা উঁচু করে দেশে ফেরা নিশ্চিত করেছেন সাবিনারা।

কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ম্যাচের প্রথম মিনিটে থেকেই বাংলাদেশের আক্রমণ। বক্সের বাইরে থেকে মারিয়া মান্দার দূরপাল্লার শট আটকে দেন নেপাল গোলরক্ষক আনজিলা সুব্বা।

খেলা শুরুর ১০ মিনিটের মাথায় সিরাত জাহান স্বপ্নাকে হারায় বাংলাদেশ। চোট নিয়ে ফাইনালে খেলতে নামলেও স্বস্তি বোধ না করায় টুর্নামেন্টে ৪ গোল করা স্বপ্নাকে তুলে নেন কোচ গোলাম রব্বানী ছোটন। স্বপ্নার বদলি মাঠে নামের শামসুন্নাহার জুনিয়র।

মাঠে নেমেই বাংলাদেশকে এগিয়ে দেন শামসুন্নাহার জুনিয়র। ১৪ মিনিটে মণিকা চাকমার ক্রস থেকে ডান পায়ের ভলিতে নেপালি গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বলে জালে ঠেলে বাংলাদেশকে উল্লাসে ভাসান ‘সুপার সাব’ শামসুন্নাহার। এই গোলে টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো গোল হজম করল স্বাগতিক নেপাল।

গোল হজমের পর বাংলাদেশের অর্ধে আছরে পরে নেপালি ফরোয়ার্ডদের আক্রমণের ঢেউ। পুরো টুর্নামেন্টে প্রথমবারের মতো কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়েন বাংলাদেশি গোলরক্ষক রুপনা চাকমা ও ডিফেন্ডাররা। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নড়বড়ে থাকলেও নেপালের আক্রমণের নিজেদের জাল গোলমুক্ত রাখেন রুপনা। ৩৫ মিনিটে আনিতা বাসনেতের ফ্রি-কিক ঠেকিয়ে দেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক। পরের মিনিটে গোললাইন থেকে বল বিপদমুক্ত করেন ডিফেন্ডার মাসুরা পারভিন।

৪২ মিনিটে দশরথের ১৬ হাজার নেপালি দর্শককে স্তব্ধ করে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বারের মতো এগিয়ে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার। নেপালি ডিফেন্ডারদের ভুলকে কাজে লাগিয়ে বক্সের বাইরে থেকে কৃষ্ণাকে বল বাড়ান অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে অরক্ষিত পেয়ে মাথার ওপর জালে পাঠান কৃষ্ণা।

বিরতির পর ৪৫ মিনিটে মাঠে নামেন নেপালের সেরা তারকা সাবিত্রা ভান্ডারি। সাবিত্রা ফিরতেই বাংলাদেশ অর্ধে আক্রমণে হামলে পড়ে নেপাল। ৫২ মিনিটে অল্পে রক্ষা পায় বাংলাদেশ। ডানপ্রান্ত থেকে আনিতা বাসনেতের ক্রস থেকে হেডে সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেন রাশমিকা কুমারি।

আক্রমণের ঢেউ বইয়ে দিয়ে টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের জালে প্রথম গোল হজম দেয় নেপাল। ৭০ মিনিটে আনিকা বাসনেতের কোনাকুনি শটে অবশেষে হার মানেন বাংলাদেশ গোলরক্ষক রুপনা চাকমা।

এই গোলে যখন ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করছে নেপাল তখনই স্বাগতিকদের আরও একবার স্তব্ধ করে শিরোপা জেতানো গোল এনে দেন কৃষ্ণা রানী সরকার। প্রতি আক্রমণে মাঝমাঠ থেকে ৭৭ মিনিটে বল বাড়ান মণিকা চাকমা। নেপালের অর্ধে তখন ছিলেন বাংলাদেশের তিন ফরোয়ার্ড। ডান প্রান্ত ধরে বল পান কৃষ্ণা। নেপালি গোলরক্ষক আনজিলাকে পরাস্ত করে দেশকে শিরোপার উল্লাসে ভাসান বাংলাদেশের ‘নম্বর নাইন’।

ট্যাগ :