এম.এইচ মুরাদঃ
সাকিব এগ্রো ফার্মে পাওনা আদায়ে বিক্ষোভ করেছিল শ্রমিকরা। সেই বিক্ষোভের খবর ছবিসহ প্রকাশিত হয় বিভিন্ন অনলাইন পোর্টাল ও জাতীয় দৈনিকে। কিন্তু বিষয়টি খুব একটা ভালো চোখে দেখেননি বিশ্বসেরা এই অল রাউন্ডার। তিনি এতে মর্মাহত হয়েছেন। আর তাই মিডিয়ার ওপর এক চোট নিয়ে শিখানোর চেষ্টা করেছেন সাংবাদিকতা।
তার মতে, যা ঘটেনি মিডিয়াগুলোতে তার চেয়েও অনেক বেশি ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছিল। তবে শ্রমিকদের জন্য ভালো সংবাদটি হচ্ছে আগামী ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করছেন সাকিব আল হাসান। এবং সেটি এগ্রো ফার্ম থেকে নয়, নিজের উপর্জিত অর্থ থেকে পরিশোধের কথা শোনান সাকিব। এছাড়াও সাকিব অ্যাগ্রো ফার্মের স্ববিস্তারিত তথ্য যুক্তরাষ্ট্রে বসে তিনি নিজের ফেজ বুকে তুলে ধরেছেন। যা একাত্তর বাংলা নিউজের পাঠকদের সামনে তুলে ধরা হলো।
‘দেরিতে সাড়া দেয়ার কারণে ক্ষমা চাচ্ছি। আমি সমস্ত তথ্য আর চিন্তাভাবনাগুলো একটু গুছিয়ে নিতে চাচ্ছিলাম, যেন আপনাদের সবার কাছে সত্যটা তুলে ধরতে পারি। যদিও আমার নামটা ওই এগ্রো ফার্মের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত, কিন্তু ব্যস্ত সূচির কারণে এটিও আমার অন্যান্য কোম্পানির মতোই পার্টনাররা পরিচালনা করেন। আমি এগুলোর নিয়মিত খোঁজ রাখার বা ঘুরে দেখার সুযোগ খুব কমই পাই। আপনারা জানেন যে বছরের বড় একটা সময় আমি দেশের বাইরে থাকি। আমাদের দ্বিতীয় সন্তান আসছে এবং এই পুরো সময়টায় আমি এগ্রো ফার্মের ব্যবসার ব্যাপারে কিছুই জানতাম না। মিডিয়ার মাধ্যমে শ্রমিকদের বিষয়টা আমি জেনেছি। আমার ব্যবসায়িক অংশীদাররা আমাকে জানায়নি যে, শেষ কয়েক মাসে আসলে কী হয়েছে?
কিন্তু তারা কিছু শ্রমিককে ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বেতন দিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। যদিও সব শ্রমিকের কাজ জানুয়ারিতেই শেষ হয়ে গেছে। তবু ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত অপেক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরেও শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে এলো, বিক্ষোভ করল। সম্ভবত নিচু মন মানসিকতার কিছু মানুষের হীন উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য।
যাই হোক, বিষয়টা জানার সঙ্গে সঙ্গে এর গুরুত্ব অনুধাবন করে পুরো বিষয়টা সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। তাদের বেতন আমার নিজের আয় থেকে পরিশোধ করে দেব। কোনো কোম্পানি প্রদত্ত অর্থ বা আমার অংশীদারদের থেকে নিয়ে নয়। আসলে আমি মনে করি এটা কোম্পানির অভ্যন্তরীণ একটা বিষয় যা অভ্যন্তরীণই থাকাই উচিত ছিল।
আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি তাদের মাস শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে না দেখে। যেহেতু তারা নিজেরাই এই বিষয়ে রাজি হয়েছিল। আরও অনেকের মতোই আমিও অসহায় মানুষের জন্য অর্থ সংগ্রহ করছি, তাই অবাক হচ্ছি যে, মানুষ এটা কিভাবে ভাবল এত বিপুলসংখ্যক শ্রমিককে আমি বঞ্চিত করব, যাদের গত ৩ বছর ধরে নিয়মিত বেতন দিয়ে আসা হচ্ছে।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমি বুঝতে পারছি যে, এটা মিডিয়ার কোনো একটা অংশের কাজ, যারা ব্যাপারটা খুব ভালোভাবে খোঁজ-খবর নিয়ে দেখেনি। ভালো হতো যদি তারা সত্যটা খুঁজে দেখত, চটকদার হেডলাইন বানানোর দিকে মনযোগ না দিয়ে। যেটার কিছু অংশ মিথ্যা এবং পুরোপুরি ভিত্তিহীন। আমি মনে করি, মিডিয়ার একটা শক্তিশালী ভূমিকা আছে সত্য যাচাই করার এবং সঠিক তথ্যের ওপর প্রতিবেদন তৈরি করার। তা না হলে হয়তো তারা আরও অনেককেই আমার মতো আঘাত করবে কোনো কারণ ছাড়া। তারা পুরো বিষয়টায় ভালোভাবে নজর দিয়ে বাকি অংশীদারদের নামেও দায় আনতে পারত শুধুমাত্র আমার নামটা তুলে ধরার বদলে। আমি আশা করি, মিডিয়া এবং সাংবাদিকরা প্রতিবেদন করার বেলায় আরও যত্নবান হবেন।
জাতি হিসেবে আমি মনে করি, ‘আমাদের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে মনযোগ দেওয়ার এবং আমাদের উচিত মিথ্যা, ভিত্তিহীন তথ্যের ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং কঠোর হওয়া। আমার মনে হয় আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের দিকে আমাদের এখন নজর দেয়া উচিত।