ক্রীড়া প্রতিবেদকঃ
শারজার উইকেটে ১৪২ রান তাড়া করাটা খুব সহজ ছিল না। কিন্তু অসম্ভবও ছিল না। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলিং আক্রমণ রান তাড়াটা কঠিনই করে তুলল বাংলাদেশের জন্য। গ্যালারিভর্তি দর্শকের সমর্থনও অনুপ্রেরণা, ক্যারিবীয়দের বাজে ফিল্ডিং, বাজে বোলিংও অনুপ্রেরণা হতে পারেনি মাহমুদউল্লাহদের জন্য। জয়ের খুব কাছে পৌঁছেও লক্ষ্য থেকে দূরে বাংলাদেশ।
হিসাব না মেলাতে পারার ব্যর্থতাতেই এ হার। লিটন দাস ৪৩ বলে ৪৪ রানে করে ফর্মে ফিরেছিলেন। মাহমুদউল্লাহ করলেন ২৪ বলে ৩১। ম্যাচের পেন্ডুলাম হেলেছে দুই দলের দিকেই। একবার মনে হয়েছে বাংলাদেশ জিতবে, পরক্ষণেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। লিটন আর মাহমুদউল্লাহ যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মনে হয়েছে এ দুজন শেষ পর্যন্ত টিকে গেলেই বাংলাদেশ ম্যাচটা বের করে নেবে। কিন্তু লিটন এমন একটা সময় আউট হলেন, যখন তাঁকেই বড় বেশি প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ১৯তম ওভারে শেষ বলে লিটন যখন ফেরেন, তখন বাংলাদেশের প্রয়োজন আরও ১৩ রান। লিটন ডোয়াইন ব্রাভোর বলে উড়িয়েই মারলেন। কিন্তু দীর্ঘদেহী জেসন হোল্ডার অনায়াসেই নিয়ে নিলেন ক্যাচটা। হোল্ডারের জায়গায় অন্য যেকোনো ফিল্ডার থাকলেই লিটনের শটটা ছক্কা হয়ে যায়। আর সেটি হয়ে গেলেই তো ম্যাচ বাংলাদেশের।
লিটনের ফেরায় যে ছন্দপতন, সেটি আর কাটিয়ে উঠতে পারেননি বাংলাদেশ।মাহমুদউল্লাহর স্কিল হিটিং আর ওই মুহূর্তে কাজে লাগেনি। শেষ ওভারে আন্দ্রে রাসেল তাঁর টি-টোয়েন্টির যাবতীয় অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মাহমুদউল্লাহ আর আফিফ হোসেনকে লক্ষ্যমাত্রা থেকে দূরেই রাখলেন।
আপাতদৃষ্টিতে ম্যাচের চিত্র এটি। মনে হতে পারে কেবল লিটনের ফেরাটাই বোধ হয় বাংলাদেশকে হারিয়েছে। কিন্তু এর পেছনেও গল্প আছে। লিটন যদি আরও একটু হাত চালিয়ে খেলতেন, ১৪ থেকে ১৭তম ওভারে রান এসেছে ২৭। এই সময়টায় লিটনের সঙ্গে খেলছিলেন মুশফিকুর রহিম। ৭ বলে ৮ করে ফেলেছিলেন মুশফিক। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই খেলছিলেন। কিন্তু রবি রামপলের একটা বলে ‘স্কুপ’ খেলতে গিয়েই বিপত্তি ডাকলেন তিনি। স্কুপটার খুব প্রয়োজন ছিল কিনা, সেটি নিয়ে আলোচনা অবশ্যই হবে। রামপল এমন কোনো বোলিং করছিলেন না, যে রান তুলতে হাঁসফাঁস করছিলেন মুশফিক। তাঁর মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের কাছ থেকে ওই সময় অমন একটা ধাক্কা, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল যদি ম্যাচ শেষে আজ আয়নায় চোখ রেখে নিজেদের বিশ্লেষণ করে, তাহলে অহেতুক স্কুপ শটের জন্য মুশফিককে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতেই হবে।