স্টাফ রিপোর্টারঃ
বাজারে অস্থিরতার মধ্যেই বিদেশি ১০টি জাহাজে রাশিয়া থেকে আনা হচ্ছে পাঁচ লাখ টন গম। এরই মধ্যে জিটুজি (গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট) চুক্তি অনুযায়ী মোংলা বন্দরে আসা দুটি জাহাজ থেকে ৪২ হাজার টন গম খালাস হয়েছে। আগামী সপ্তাহে বিদেশি একটি জাহাজে আসবে আরও একটি চালান। রাশিয়া থেকে আনা টনপ্রতি ৪৩০ ডলার দরে এসব গম বাজারে এলে স্বস্তি ফিরবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, দেশে বছরে গমের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ টন। এর মধ্যে ৬৫ লাখ টনই আমদানি করতে হয় ভারত, বুলগেরিয়া, ইউক্রেন ও রাশিয়া থেকে। চলতি বছরের ১১ মাসে চারটি বিদেশি জাহাজে করে মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হয়েছে ৮৪ হাজার টন গম। নতুন করে রাশিয়া থেকে আমদানি হবে আরও পাঁচ লাখ টন গম। চুক্তি অনুযায়ী গত সপ্তাহে বিদেশি দুটি জাহাজে করে আনা সেই গম মোংলা বন্দরে খালাসও হয়েছে।
গমবাহী সেই বিদেশি জাহাজের শিপিং এজেন্টের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ এরফান বলেন, ‘রাশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ লাখ টন গম আমদানি হবে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে ৬০ শতাংশ এবং মোংলা বন্দরে খালাস হচ্ছে ৪০ শতাংশ গম। গত সপ্তাহে মাল্টা পতাকাবাহী এমভি শ্রিলাক ও লাইবেরিয়ান পতাকাবাহী এমভি লিলা নামে দুটি জাহাজে আসা ৪২ হাজার টন গম মোংলা বন্দরে খালাস হয়েছে। আগামী সপ্তাহে এই বন্দরে আরও একটি গমের চালান আসবে।’
রাশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি অনুযায়ী পাঁচ লাখ টন গম আমদানি হবে
মোংলা বন্দর ব্যবহারকারী এইচ এম দুলাল বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশে নয়, সারা বিশ্বের গমের উচ্চমূল্য। তাই দেশের বাজারে গমের চলমান সংকট উত্তোরনে বিকল্প উৎসে সন্ধান এবং পাইপ লাইনে থাকা বিভিন্ন দেশ থেকে গম দ্রুত আনতে হবে।’
এদিকে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পর থেকে দেশে আমদানি হওয়া গমের অর্ধেকেরও বেশি এসেছিল ভারত ও বুলগেরিয়া থেকে। তবে ভারতীয় গম আমদানি কিছুদিন বন্ধ থাকায় সংকট দেখা দেয়। এখন ইউক্রেন থেকে গম কম আসলেও রাশিয়া থেকে প্রচুর গম আসছে, তাই দেশে গমের সংকট হবে না বলে জানিয়েছেন মোংলা সাইলো সুপার (সরকারি খাদ্য গুদাম) অরুপ কুমার মিশ্র।
তিনি বলেন, ‘মোংলা বন্দর দিয়ে আমদানি হওয়া গম প্রথমে মোংলা সাইলোতে মজুদ করে রাখা হয়। এখান থেকে নদী পথে দেশের ১৯ জেলায় এই গম সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এই মুহূর্তে মোংলা সাইলোতে ৪৫ হাজার টন গম মজুত আছে।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা বলেন, ‘গত ৬ মার্চ ভারত থেকে এমভি বাল্ক ম্যানারা, ১ জুন এমভি ইমানুল, ২৩ অক্টোবর রাশিয়া থেকে এমভি শ্রিলাক ও ৮ নভেম্বর এমভি লিলা নামে বিদেশি জাহাজে করে মোংলা বন্দরে গম আমদানি হয়েছে। বন্দরের আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে এই গম খালাস করা হয়েছে। শুধু গম নয়, যেকোনও পণ্য খালাস করতে মোংলা বন্দরের সক্ষমতা রয়েছে।’