মোস্টবেট বাংলাদেশের সেরা বুকমেকার। স্পোর্টস বেটিং, অনলাইন ক্যাসিনো সকলের জন্য সীমাবদ্ধতা ছাড়াই উপলব্ধ, এবং একটি ব্যাঙ্ক কার্ডে Mostbet withdrawal সম্ভব!
Türkiye'nin en iyi bahis şirketi Mostbet'tir: https://mostbet.info.tr/

বাংলাদেশ, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪ ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোজ্যতেলের দাম বিশ্ববাজারে ধস, দেশে কমার অপেক্ষায়


প্রকাশের সময় :১৬ জুলাই, ২০২২ ৬:২৬ : পূর্বাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

বিশ্ববাজারে রান্নার সয়াবিন ও পাম তেলের দামে ধস নেমেছে। দেড় থেকে দুই মাসের ব্যবধানে সয়াবিনের দাম কমেছে ৩২ শতাংশ আর পাম তেলের দাম কমেছে ৪৮ শতাংশ।বিশ্ববাজারের প্রভাবে পাইকারি বাজারে খোলা ভোজ্যতেলের দাম কমেছে। খুচরা পর্যায়ে খোলা তেলের দাম কমলেও বোতলজাত তেলের দাম এখনো সেভাবে কমেনি। সরকার যে হিসাবে দাম নিয়ন্ত্রণ করে, সেই হিসাবে বিশ্ববাজারের প্রভাব পড়তে আরও অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন পরিশোধনকারীরা।

বিশ্ববাজারের এবারের ধস ২০০৮ সালকেও ছাড়িয়ে গেছে। এ ধসের দুটি দিক রয়েছে। এক. ভোক্তাদের জন্য সুখবর আসছে। সামনে আরও বেশি দামে তেল কিনতে হবে না। দুই. হঠাৎ ধসের কারণে আমদানিকারক থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা বিপুল লোকসানের মুখে পড়েছেন। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে আগে বিক্রি করা তেলের আমদানি দায়। আগে বিক্রি করে মুনাফা করলেও শুধু ডলারের দর বেড়ে যাওয়ায় সেখানেও লোকসান গুনতে হচ্ছে বিক্রেতাদের।

বিশ্ববাজারে দাম কমার চিত্র
যুক্তরাষ্ট্রের কমোডিটি এক্সচেঞ্জ শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে মে মাসের প্রথম সপ্তাহে পরিশোধিত সয়াবিন তেলের দর উঠেছিল টনপ্রতি ১ হাজার ৯৫০ ডলার। সে সময় প্রতি ডলার ৮৬ টাকা হিসাবে লিটারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১৫৩ টাকা। গত বৃহস্পতিবার এই দর নেমে আসে টনপ্রতি ১ হাজার ৩১৮ ডলারে। বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত ডলারের দরে (৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা) লিটারপ্রতি দর দাঁড়ায় ১১৩ টাকা। অর্থাৎ দুই মাসে দরপতন হয়েছে ৬৩২ ডলার বা ৩২ শতাংশ। ভোজ্যতেলের ইতিহাসে কখনো এভাবে দরপতন হয়নি।

সয়াবিনের চেয়ে বেশি কমেছে পাম তেলের দাম। মালয়েশিয়ার কমোডিটি এক্সচেঞ্জ বুশরা মালয়েশিয়া ডেরিভেটিভসে গত ৫ মে অপরিশোধিত পাম তেল বেচাকেনা হয় ৭ হাজার ৩৮২ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত বা লিটারপ্রতি প্রায় ১৩৯ টাকায়। বুধবার এ দর নেমে আসে ৩ হাজার ৮৫০ রিঙ্গিত বা লিটারপ্রতি ৭১ টাকায়। অর্থাৎ দুই মাসে পাম তেলের দর কমেছে প্রায় ৪৮ শতাংশ।

বাংলাদেশ মূলত ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনা থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল আমদানি করে। আর ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানি করে হালকা পরিশোধিত আকারে আরবিডি পাম তেল। এ দুই ধরনের তেলের দামও একইভাবে পড়েছে।

পণ্যবাজার বিশ্লেষক আসির হক প্রথম আলোকে বলেন, ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার পর থেকে বাজার পড়তির দিকে ছিল। উৎপাদন বৃদ্ধি, রপ্তানিকারক দেশগুলোতে মজুত বেড়ে যাওয়া এবং ভোক্তা দেশগুলোর চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় বাজারে এমন দরপতন হচ্ছে।

বিশ্ববাজারের প্রভাব পাইকারি বাজারে

পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে বিশ্ববাজারের সাপেক্ষে প্রতি ঘণ্টায় দর ওঠানামা করে। বৃহস্পতিবার পাইকারি বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১৬০ টাকায়। দুই মাসের ব্যবধানে লিটারপ্রতি দাম কমেছে ২০ থেকে ২২ টাকা। পাম তেল লিটারপ্রতি ৩৪ থেকে ৩৬ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ১১২ টাকা ও ১২৫ টাকায়।

খাতুনগঞ্জের আরএম এন্টারপ্রাইজের কর্ণধার সাহেদ উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, পাইকারি বাজার কমোডিটি এক্সচেঞ্জের মতো দর ওঠানামা করে। বিশ্ববাজারে দাম বাড়ার সময় যেমন এখানে প্রভাব পড়েছে, তেমনি বিশ্ববাজারে দরপতনে এখানে দামে ধস নেমেছে। ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীরা বেচাকেনায় বড় লোকসানের মুখে পড়েছেন।

বোতলজাত তেলের ক্ষেত্রে অপেক্ষা
পাইকারি বাজারে খোলা তেলের দাম কমার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে খুচরা বাজারে। টিসিবির হিসাবে বৃহস্পতিবার ঢাকার বাজারে খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বেচাকেনা হয়েছে। পাম তেল বেচাকেনা হয়েছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায়। এক মাসের ব্যবধানে সয়াবিন তেলের দাম ৬ শতাংশ এবং পাম তেলের দাম ১২ শতাংশ কমেছে।

পাম তেলের বড় অংশই খোলা বেচাকেনা হয়। তবে সয়াবিন তেলের বড় অংশ বেচাকেনা হয় বোতলজাত হিসেবে। বোতলজাত তেলের দাম গত ২৬ জুন এক দফায় লিটারপ্রতি ৬ টাকা কমানো হয়েছে। দাম কমানোর পর বিশ্ববাজারে আরও পতন হয়েছে। তবে এখনো কমানো হয়নি।

বোতলজাত তেলের দাম সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। সে ক্ষেত্রে তিন ধরনের দর পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এই তিনটি হলো এক মাসে গড়ে কত দরে ঋণপত্র খোলা হয়েছে, এক সপ্তাহে কত দরে বন্দর দিয়ে তেল আমদানি হয়েছে এবং এক সপ্তাহে কত দরে ট্যাংক টার্মিনাল থেকে তেল বাজারজাতের জন্য খালাস হয়েছে।

বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমলেও এখনো এ তিন ধরনের দর খুব একটা কমেনি। যেমন বিশ্ববাজারে এখন অপরিশোধিত সয়াবিন তেলের দর চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত টনপ্রতি ১ হাজার ৩৯০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ ডলার। এবার দেখা যাক দেশে কোন দরে ঋণপত্র খোলা ও আমদানি হয়েছে।

জুনের শেষ সপ্তাহে প্রতি টন অপরিশোধিত সয়াবিনের ঋণপত্র খোলা হয়েছে গড়ে ১ হাজার ৮১৭ ডলারে। বন্দর দিয়ে সর্বশেষ আমদানি হওয়া সয়াবিন তেলের টনপ্রতি মূল্য ১ হাজার ৮৫১ ডলার। জুলাই মাসে ট্যাংক টার্মিনাল থেকে খালাস হওয়া সয়াবিনের টনপ্রতি গড় মূল্য ছিল ১ হাজার ৭৯১ ডলার। অর্থাৎ দাম কমলেও এখনো দেশে সেই তেল পৌঁছায়নি। তবে ধীরে ধীরে এক থেকে দুই মাসের মধ্যে হ্রাসকৃত মূল্যের তেল দেশে পৌঁছাবে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন।

বড় দরপতন
২০০৮ সালে বৈশ্বিক মন্দা শুরুর আগে বিশ্ববাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছিল। সে বছরের এপ্রিলে মন্দা শুরুর পর দরপতন শুরু হয়। এমনকি মন্দার প্রভাবে এক মাসেই লিটারে দাম কমে প্রায় ১৬ টাকা, আর চার মাসের ব্যবধানে দাম কমে ৫০ শতাংশ।

মন্দা কাটিয়ে বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর পর ২০১১ সালে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দামে আরেক দফা উত্থান ঘটে। যথারীতি ২০১২ সালের শেষে আবারও দরপতন শুরু হলে ব্যবসায়ীরা ধাক্কা খান। এ দুই ধাক্কা সামলাতে না পেরে চট্টগ্রামের বড় কয়েকটি গ্রুপকে বাজার থেকে সরে যেতে হয়েছে।

ট্যাগ :