স্টাফ রিপোর্টারঃ
দেশের বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের দাম লিটারপ্রতি ৫৩ টাকা কমে গেছে। বিশ্ব বাজারে ভোজ্যতেলের দরপতনের জেরে গত ১৫-২০ দিনে মণে প্রায় ২ হাজার টাকা হ্রাস পেয়েছে পাইকারি বাজার চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে।
খাতুনগঞ্জ ও চাক্তাইয়ের শীর্ষ পাইকারি ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
খাতুনগঞ্জের অন্যতম শীর্ষ পাইকারি ব্যবসায়ী আলমগীর পারভেজ জানান, ‘সরকার প্রতি লিটারে ১৪ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু বিশ্ববাজারে দরপতনের সাথে সাথে খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে প্রতিদিন ভোজ্যতেলের দাম কমছে। গত ১৫ থেকে ২০ দিনের ব্যবধানে পাম অয়েল মণে ২ হাজার টাকার মতো কমে গেছে। সয়াবিন তেল কমেছে ১ হাজার টাকার বেশি।’
পাইকারি বাজারে প্রতিমণ ৪০ কেজির পরিবর্তে হিসাব করা হয় ৩৭ দশমিক ৩২ কেজি হিসাবে।
তিনি জানান, ‘দরপতনের এ ধারায় তেলের দাম আরো কমবে। নতুন এলসির তেল আসলে সপ্তাহখানেকের মধ্যে তেলের দাম মণপ্রতি আরো ৫-৬ শত টাকা কমে যাবে। তবে, পাইকারি বাজারের এ দরপতনের প্রভাব খুচরা বাজারে পড়েনি। খুচরা ব্যবসায়ীরা এখনো বর্ধিত দামে তেল বিক্রি করছেন। ফলে, তেলের মূল্যহ্রাসের ইতিবাচক প্রভাব সরাসরি ভোক্তা পর্যায়ে পৌঁছেনি।’
এদিকে, চাক্তাই-খাতুগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, ‘চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে ভোজ্যতেলের ব্যাপক দরপতন ঘটেছে। এক মাস আগে প্রতিমণ পাম অয়েল ৬ হাজার ৩ শ টাকায় বিক্রি হলেও আজ বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। অর্থাৎ পাম অয়েল প্রতিমণে দুই হাজার টাকার মতো কমে গেছে। আমাদের এ মার্কেটে প্রতিটি আমদানি পণ্য সরাসরি আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে তাল মিলিয়ে বেচাকেনা হয়। ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে যখন বেড়েছিল তখন আমাদের এখানেও দাম বেড়ে যায়। আবার দরপতন শুরুর সাথে সাথে আমাদের পাইকারি বাজারে কমতে শুরু করেছে।’
তিনি বলেন, ‘কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, খুচরা বাজারে এখনো বর্ধিত মূল্য বহাল আছে। খুব কম খুচরা ব্যবসায়ী থাকবেন যারা কোরবানের আগে কেনা তেল এখনো বিক্রি করছেন। কোরবানির পরে যারা তেল তুলেছেন তারা নিশ্চয় অনেক কম দামে কিনেছেন। কিন্তু বিভিন্ন কৌশলে চড়া দামে বিক্রি করে অযৌক্তিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।’
খুচরা বাজারে আজ অপরাহ্নে ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ৯৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে জানানোয় তিনি বলেন, ‘এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের জন্যে ভোক্তারা সবসময় ঠকে থাকেন। খুচরা বাজারে ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে তদারকি শুরু হলে দেখবেন একদিনের মধ্যেই ভোজ্যতেলের দাম পড়ে গেছে।’
কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) এর কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, বিশ্ববাজারে যখন ভোজ্যতেলের দাম বেড়ে যায়, তখন ব্যবসায়ীরা কারো সাথে আলাপ না করেই দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু, আন্তর্জাতিক বাজারে যখন ভোজ্যতেলের দাম পড়ে গেল তখন তারা ন্যায্যতার ভিত্তিতে তারা দাম কমাননি। সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় বসে রইলেন। এখন বলছেন, আগের কেনা তেল কম দামে বিক্রির সুযোগ নেই।